ছাত্রদল সম্পাদকের বক্তব্যের নিন্দা ঢাবি শাখা শিবিরের
Published: 10th, March 2025 GMT
ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এসএম ফরহাদকে নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
সোমবার (১০ মার্চ) ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এসএম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খাঁন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির সোমবার তাদের এক কর্মসূচিতে বক্তব্য প্রদানকালে বলেছেন, ‘একজন ধর্ষক বা নারী নিপীড়নকারীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছিল ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি।’ তার এই বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার। দেশব্যাপী ছাত্রকল্যাণমূলক কাজের জন্য শিক্ষার্থী সমাজের কাছে ছাত্রশিবিরের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ঢাবিকে ‘জুলাই বিপ্লবের রক্তাক্ত দলিল’ গ্রন্থ উপহার
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি ছাত্র ফ্রন্টের
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মূলত ঘটনার সময়ে পুলিশ প্রশাসনের আহ্বানে শাহবাগ থানায় সৃষ্ট পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং সেখানে অবস্থানরত সংক্ষুব্ধ জনতার দাবি ও অবস্থান জানার জন্য সেখানে যান। তিনি সেখানে কাউকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে তদবির করেননি। বরং সেখানে উপস্থিত মবকে ‘অভিযুক্ত অর্ণবকে কোর্টে তোলা যাবে না, এখানেই মুক্তি দিতে হবে’ এ দাবি থেকে সরিয়ে এনে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বোঝাতে সক্ষম হন।
শিবির নেতারা বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী অস্থিতিশীল অবস্থা ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থেকে শাহবাগ থানায় ঢাবি শিবির সভাপতি এস এম ফরহাদ পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রমকে সহযোগিতা করেন এবং অভিযুক্তকে কোর্টে তুলতে সহযোগিতা করলেও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তার বিরুদ্ধে ‘থানা থেকে ছাড়িয়ে এনেছে’ বলে ঘৃণ্য মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত নিউজের বরাত দিয়ে ছাত্রদলের নানা অপকর্মে বর্ণনা করে তারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছাত্রদলের নানা অপকর্ম তথা ছাত্রদল কর্তৃক নারী হেনস্তা, ধর্ষণ চেষ্টা, চাঁদাবাজি, খুন, অন্তঃদলীয় কোন্দল ও বিশৃঙ্খলাকে ধামাচাপা দিতেই এসব মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের আশ্রয় নিচ্ছেন। সংকটময় মুহূর্তে ছাত্রশিবিরের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা কার্যকরি ভূমিকা রাখলেও সেদিন ছাত্রদলের নীরব ভূমিকা এবং পরবর্তীতে ধারাবাহিক মিথ্যাচার ও উসকানিমূলক প্রচারণা যথেষ্ট সন্দেহজনক।
শিবির নেতারা আরো বলেন, বৃহৎ সংগঠন হিসেবে ছাত্রদলের উচিত ছিল, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এড়াতে শাহবাগ থানায় গিয়ে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা। গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে সহযোগিতা করার বদলে রহস্যজনকভাবে নীরব থেকে এবং নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে থেকে যেসব ছাত্রনেতা গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে সহযোগিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য মিথ্যাচার এবং অসুস্থ চিন্তা ও বক্তব্য ছাত্র রাজনীতির জন্য কোন শুভ লক্ষণ নয়।
তারা আশা প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির তার এই মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিবেন এবং আগামীতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এসব বেফাঁস মন্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকবেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল সহয গ ত
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ