এবার জাপানের দিকে নজর ফেরাচ্ছেন ট্রাম্প
Published: 10th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে হয় এই নড়বড়ে বিশ্বকে মেরামত করার মহান ব্রত নিয়ে কাজে মনোনিবেশ করছেন। গাজা ভূখণ্ডের সংকটাপন্ন অবস্থা কিংবা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধই কেবল নয়, পৃথিবীর কোথায় তাঁর সম্মতির বাইরে কী ঘটছে এবং কোথায় আবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ লঙ্ঘিত হচ্ছে, এ রকম অনেক কিছু নিয়ে রীতিমতো বিনিদ্র রজনী তিনি মনে হয় কাটাচ্ছেন।
নির্বাচনী প্রচারে চীনকে ঘায়েল করার কথা ট্রাম্প বারবার বলে গেলেও এখন পর্যন্ত চীনের সঙ্গে সরাসরি কোনো সংঘাতে জড়িত হওয়া থেকে আপাতত তাঁকে বিরত থাকতে দেখা যাচ্ছে। যদিও চীন থেকে আমদানি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করার ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন। ফলে মনে হয়, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন এবং রুশ-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের ভিড়ে পূর্ব এশিয়ার দিকে খুব বেশি নজর দেওয়া তাঁর হয়ে ওঠেনি। তবে সে রকম প্রেক্ষাপটে কিছুটা হলেও রদবদলের আভাস এখন সম্ভবত পাওয়া যাচ্ছে।
অর্থনৈতিক দিক থেকে জাপানের বিশাল আকারের কোম্পানি নিপ্পন স্টিলের মার্কিন প্রতিষ্ঠান ইউএস স্টিল কিনে নেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প আগবাড়িয়ে হস্তক্ষেপ করে চুক্তি বাতিলের পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে কোনো মন্তব্য এখনো করেননি। ফলে কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকা সম্ভব হয়েছিল জাপানের ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বের। তবে মার্চ মাসে এসে হাওয়া বদলের আঁচ পেতে শুরু করছেন তাঁরা।
১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সংশোধিত জাপান-মার্কিন দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অঙ্গীকার করা হয়েছে যে জাপান আক্রান্ত হলে ওয়াশিংটন এগিয়ে আসবে। এর বিনিময়ে জাপান সে দেশে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তোলার অধিকার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে।হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জাপানের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, মিত্রদের ওপর প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি করা এবং আরও বেশি মার্কিন পণ্য ক্রয় করা নিয়ে তিনি চাপ দিয়ে যাওয়ার এই সময়ে জাপানের সঙ্গে স্বাক্ষর করা তাঁর দেশের নিরাপত্তা চুক্তি এখন পারস্পরিক আদান-প্রদানের ঠিক যেন বিপরীত দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি আরও কিছুটা পরিষ্কার করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এ কারণে চুক্তির বিষয়টি খুবই আকর্ষণীয় যে তাদের সুরক্ষা দিতে আমরা বাধ্য থাকলেও আমাদের রক্ষা করার দায়িত্ব ওদের ওপর বর্তায় না।’ একই সঙ্গে এ রকম উল্লেখ করতেও তিনি ভুলে যাননি যে জাপানকে তিনি ভালোবাসেন। তবে তা সত্ত্বেও বলতে তিনি বাধ্য হচ্ছেন যে, ‘অর্থনৈতিক দিক থেকে আমাদের সঙ্গে লেনদেন করে সম্পদের পাহাড় দেশটি গড়ে নিলেও নিজের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দরকার হওয়া পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ সেই দেশ খরচ করছে না।’ এ রকম মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে পরোক্ষ যে ইঙ্গিত ট্রাম্প দিচ্ছেন তা হলো, জাপান যেন প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করে নেয় এবং দেশের প্রতিরক্ষার জন্য প্রয়োজন হওয়া নানা রকম অস্ত্র যেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সংগ্রহ করে।
গত জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে তাঁকে জাপান নিয়ে সরাসরি কোনো সমালোচনামূলক মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরু গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফর করার সময় নিপ্পন স্টিল ক্রয় করা নিয়ে দেখা দেওয়া বিভ্রান্তি কীভাবে উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে দূর করে নেওয়া যায়, তা নিয়ে দুই নেতারা দীর্ঘ আলোচনা করেন। বলা যায়, মার্কিন চাপের মুখে সেই প্রশ্নে ইশিবাকে কিছুটা হলেও ছাড় দিতে হয়েছে। জাপান অবশ্য ওই বৈঠক থেকে এর চেয়ে বেশি আশা করেনি। কেননা প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি করা নিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে চাপ দেওয়া হয় কি না, তা নিয়ে জাপানের নেতারা উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে সেই আলোচনা ট্রাম্প-ইশিবা শীর্ষ বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রসঙ্গ হয়ে না ওঠায় স্বস্তির সঙ্গে দেশে ফেরা ইশিবার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল। ফলে জাপান প্রসঙ্গে ট্রাম্পের সর্বশেষ এই মন্তব্য হচ্ছে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর জাপানের দিকে তাঁর প্রথম আলোকপাত। জাপানের নেতৃত্বকে তা কিছুটা হলেও এ কারণে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে যে অর্থনীতি খুব ভালো অবস্থায় না থাকার এই সময়ে প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ খুব বেশি বৃদ্ধি করা সরকারের পক্ষে সহজ হবে না।
দীর্ঘ সময় ধরে জাপান প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ জিডিপির এক শতাংশে সীমিত রেখে গেলেও ইরাক যুদ্ধের পর থেকে অলিখিত সেই সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে যেতে বাধ্য হয়।১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সংশোধিত জাপান-মার্কিন দ্বিপক্ষীয় চুক্তির অধীন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অঙ্গীকার করা হয়েছে যে জাপান আক্রান্ত হলে ওয়াশিংটন এগিয়ে আসবে। এর বিনিময়ে জাপান সে দেশে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তোলার অধিকার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন সামরিক ব্যক্তিত্ব জাপানে অবস্থান করছেন, যে সংখ্যা হচ্ছে অন্যান্য যেকোনো দেশে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির চেয়ে বেশি।
চুক্তির অন্য যে দিকটি মার্কিন প্রশাসন প্রায়ই উপেক্ষা করে যায় তা হলো, জাপানে উপস্থিত মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য খরচ ভাগাভাগি করে নেওয়ার উল্লেখ থাকলেও সেই খরচের সিংহভাগ কিন্তু জাপানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাপান সরকার অনেক আগে থেকেই সরকারের বাজেট বরাদ্দে এই খাতের খরচ তালিকাভুক্ত রেখেছে, স্বাগতিক দেশের সমর্থন হিসেবে পরিচিত যে ব্যয়ের পরিমাণ হচ্ছে বছরে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন মনে হয় এখন চাইছে জাপান যেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগ্রহ করা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা বাড়িয়ে দেয় এবং এর বাইরে প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দের নির্ধারিত কোটা বৃদ্ধি করে। কেননা ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন একসময়ে এসেছে, যখন পেন্টাগনের শীর্ষ পদের জন্য ট্রাম্পের পছন্দের প্রার্থী জাপানের প্রতিরক্ষা ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপির ৩ শতাংশে বৃদ্ধি করা নিয়ে টোকিওর ওপর তাঁর চাপ প্রয়োগে তৈরি থাকার উল্লেখ করেছিলেন।
জাপানে উপস্থিত মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য খরচ ভাগাভাগি করে নেওয়ার উল্লেখ থাকলেও সেই খরচের সিংহভাগ কিন্তু জাপানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।দীর্ঘ সময় ধরে জাপান প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ জিডিপির ১ শতাংশে সীমিত রেখে গেলেও ইরাক যুদ্ধের পর থেকে অলিখিত সেই সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে যেতে জাপান বাধ্য হয়েছিল। এর পর থেকে বাজেট বরাদ্দ সমানে বৃদ্ধি পেতে থাকলেও বৃদ্ধির পরিমাণ খুব বেশি উঁচুতে ওঠেনি। ২০২২ সালে জাপান প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ ২০২৭ সালের মধ্যে দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে মোট দেশজ উৎপাদনের ২ শতাংশে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ফলে প্রতিরক্ষা খরচ হঠাৎ করে ৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়া জাপানের পক্ষে প্রায় অসম্ভব বিবেচিত হবে।
প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ৩ শতাংশে বৃদ্ধি করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি অব ডিফেন্স ফর পলিসি হিসেবে ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থী এলব্রিজ কলবি গত বুধবার মার্কিন সিনেটে এই মর্মে লিখিত একটি বিবৃতি জমা দেওয়ার পর জাপান অবশ্য এ নিয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরু বলেছেন, জাপান তার প্রতিরক্ষা ব্যয় কতটা হবে তা নিজেই ঠিক করে নেয়, অন্য কোনো দেশের নির্দেশে তা করে না।
ফলে ট্রাম্পের সর্বশেষ মন্তব্য নিয়েও জাপানি নেতৃত্বের মধ্যে যে অসন্তোষ দেখা দেবে, তা সহজেই অনুমান করা যায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব জ ট বর দ দ র পর থ ক র পর ম ণ র জন য উল ল খ থ কল ও র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ছড়া লিখে কড়া শাস্তির মুখে ওয়াসা কর্মকর্তা
ছড়া লিখে কড়া শাস্তির মুখে পড়েছেন ঢাকা ওয়াসার কমন সার্ভিস বিভাগের উপসচিব শহিদুল ইসলাম। গত মঙ্গলবার তাঁকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে এবং উপব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার (প্রশাসন) দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটিও হয়েছে।
শহিদুল ইসলাম নিজের লেখা একটি ছড়া তাঁর ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। ছড়ার বিষয় ছিল রাজধানীর আলোচিত সেই ঈদ শোভাযাত্রার নাসিরুদ্দিন হোজ্জা, যিনি গাধার পিঠে উল্টো দিকে ফিরে বসেছিলেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এই শোভাযাত্রা আয়োজন করে। হোজ্জারূপী ওই চরিত্রটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা হয়।
শহিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘লেখালেখি পুরোনো অভ্যাস। এর দু-একটি ফেসবুকে শেয়ারও করি। ঈদের পর একটি ছড়া লিখে ফেসবুকে দিয়েছিলাম। হঠাৎ মঙ্গলবার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমাকে তাঁর কক্ষে ডেকে পাঠান। সেখানে গেলে জিজ্ঞেস করেন, ছড়াটি আমার লেখা কিনা? হ্যাঁ-সূচক জবাব দিলে, কেন লিখেছি জানতে চান তিনি। আমি স্যারকে বলি, অভ্যাস থেকে মাঝেমধ্যে একটু-আধটু লেখালেখি করি। ছড়াটি বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে লিখিনি।’
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এর পর এমডি স্যার বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ে নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে কী লেখা যাবে, আর যাবে না– তা উল্লেখ রয়েছে। আমি বলি, স্যার, আমি তো কাউকে উদ্দেশ করে লিখিনি। ছড়াতে অপরাধ কী হয়েছে, তাও বুঝতে পারছি না।’
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিকেলে অফিস ছাড়ার সময় একটি অফিস আদেশ আমাকে দেওয়া হয়। সেখানে দেখি, আমাকে ওএসডি করা হয়েছে।’
ছড়া লেখায় কর্মকর্তাকে ওএসডি করার খবরে ঢাকা ওয়াসায় নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে তা গণমাধ্যমের নজরে আসে। কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি চাকরি করে অনেকেই সাহিত্যচর্চা করছেন। অতীতে অনেক কবি-সাহিত্যিক সরকারি চাকরিজীবী হয়েও ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে কবিতা, গল্প ও গান লিখেছেন। কিন্তু শহিদুল ইসলামের নিছক রসাত্মক ছড়াকে পুঁজি করে এমন শাস্তি দেওয়া ঠিক হয়নি।
জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমান সমকালকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি চাকরিজীবী কী লিখতে পারবেন, কী পারবেন না, সে নিয়ে নির্দেশনা রয়েছে। তাঁর লেখা ছড়ায় সে নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটেছে বলে মনে হয়েছে। ওয়াসা সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। দেখা যাক, কমিটি কী প্রতিবেদন দেয়।
ছড়ায় যা আছে
নাসিরুদ্দিন হোজ্জা
পেয়ো নাকো লজ্জা
ঘোড়ায় চড়িয়া তুমি হাঁটিয়া চলো
রসিকতায় শত কথা সত্যি বলো
গাঁধা নাকি ঘোড়া সে
কি করে কে বলে যে
গাঁধা হাঁটে চার পায়ে টগবগ
তোমার মত নয় সে অযথাই বকবক
কেউ বলে তুর্কি কেউ বলে ইরানী
কখনও কি স্বাদ পেলে সুলতানী বিরানী
ঈদ এলে হেঁটেছ কি মুঘলের ঢাকাতে
কাণ্ড কি ঘটিয়েছ অযথাই হাসাতে
বহুকাল বাদে আজ তুমি দেখা দিলে
ঢাক ঢোলের তালে তালে
গাঁধার পশ্চাতে মুখ করে চলিলে উল্টো
আজব এক ঈদ গেলো ঘটনাটি ভুল তো?
যাই হোক জানি কম নাসিরুদ্দিন হোজ্জা
এতে তুমি পেয়ো না গো এতটুকু লজ্জা।
শহিদুলের ছড়াটি পড়ার পর কবি মোহন রায়হান সমকালকে বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি বাকস্বাধীনতা ও স্বাধীনভাবে লেখালেখি করার জন্য। বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, সমালোচনা সহ্য করতে পারেনি। ছড়াটিতে সরকারের সমালোচনা আছে বলে মনে হয়নি। বরং গাধার পিঠে নাসিরুদ্দিন হোজ্জাকে যে অবয়বে তুলে ধরা হয়েছে, তা জামায়াতের এক নেতার প্রতিকৃতি মনে হতে পারে।’
একসময় আবু করিম নামে এক কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক লেখা লিখেছিলেন। পরে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের পিএস হয়েছিলেন। যদিও শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হলে আবু করিমকে চাকরিচ্যুত করেন।
মোহন রায়হান বলেন, ‘আমি মনে করি না শহিদুলের এ ছড়ার মধ্যে এমন কিছু আছে, যার জন্য তাঁর পেশাগত জীবনে কোনো শাস্তি আরোপ হতে পারে। বরং শাস্তি দিলে তাঁর সৃষ্টিশীলতা বাধাগ্রস্ত হবে।’