প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের মোট ৩৯ কোটি ৬০ লাখ পাঠ্যবইয়ের মধ্যে ৩৮ কোটি ২৯ লাখ ৬১ হাজার কপি ছাপানো হয়েছে। ছাপানো বই মোট বইয়ের ৯৭ দশমিক ২ শতাংশ।

আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, চলতি শিক্ষাবর্ষে ৪ কোটির মতো শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৩৯ কোটি ৬০ লাখের বেশি বই ছাপানো হচ্ছে। এর মধ্যে মাধ্যমিকে (মাদ্রাসার ইবতেদায়িসহ) মোট বইয়ের সংখ্যা ৩০ কোটির বেশি। আর প্রাথমিকের মোট পাঠ্যবই ৯ কোটির বেশি। শিক্ষাক্রম পরিবর্তন, পাঠ্যবই পরিমার্জনসহ কিছু সমস্যার কারণে শিক্ষা বিভাগ থেকে আগেই বলা হয়েছিল, এবার বই পেতে কিছুটা দেরি হবে। কিন্তু এখন সেই দেরি অনেক বেশি হচ্ছে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বছর পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এবার বিভিন্ন পর্যায়ে ৩৯ কোটি ৬০ লাখ পাঠ্যবই বিতরণ করার কথা ছিল। এর মধ্যে ৩৮ কোটি ২৯ লাখ ৬১ হাজার কপি ইতিমধ্যে ছাপা হয়েছে। এসব বইয়ের বেশির ভাগ এরই মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। ২ কোটি ৩৭ লাখ বই ছাপা হয়েছে, কিন্তু এখনো বিতরণ সম্ভব হয়নি, সেটি প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া এখনো এক কোটি আট লাখ পাঁচ হাজার বই ছাপানো সম্ভব হয়নি। সরকার আশা করছে, এ বইগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে ছাপা ও বিতরণ সম্পন্ন হবে।

আরও পড়ুন২ মাস চলে গেল, আর কবে সব বই পাবে শিক্ষার্থীরা০৩ মার্চ ২০২৫

অন্যদিকে আগামী বছরের পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর প্রক্রিয়া আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে বলেও জানান উপপ্রেস সচিব।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ঠ যবই বই ছ প ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বেড়েছে ২৭ শতাংশ

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় মোট ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধেই গেছে ৬২ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে যা প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে পরিচালন বাজেটের একক খাত হিসেবে সর্বোচ্চ ৩৪ শতাংশ গেছে সুদ পরিশোধে। এর মধ্যে দেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ৫৩ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ৯ হাজার ২২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় হয়েছিল ৪৯ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছর শেষে শুধু সুদ পরিশোধেই প্রয়োজন হবে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

চলতি অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। সেই বাজেটই অব্যাহত রেখেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থ বিভাগের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ছয় মাসে পরিচালন বা অনুন্নয়ন খাতে বাজেট বাস্তবায়নের হার বরাদ্দের ৩৬ দশমিক ৭০ শতাংশ। মোট ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। তবে উন্নয়ন ব্যয় কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশে। টাকার অঙ্কে ৪০ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে ব্যয় হয়েছিল ৪৩ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা। 
উন্নয়ন ব্যয় গত অর্থবছরের তুলনায় কমলেও বাড়তি সুদ পরিশোধ ব্যয়ের ওপর ভর করে সার্বিক বাজেটে বস্তবায়ন হার গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত ও এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে বাজেট বাস্তবায়ন হার ছিল যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৫৩ এবং ২৭ দশমিক ২১ শতাংশ। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি রোধে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে সরকারি ব্যয়েও সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই সঙ্গে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রহণ করা প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় ধরনের কাটছাঁট হয়েছে। এতে উন্নয়ন ব্যয় কমেছে। তবে সরকারের নেওয়া ঋণের সুদ পরিশোধ ব্যয় ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। তাছাড়া পরিচালন বাজেটে কাটছাঁটের খুব একটা সুযোগ থাকে না। আবার অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ব্যয় বাড়ায় পরিচালন বাজেটে ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি। 
ছয় মাসে পরিচালন বাজেটের আওতায় অন্যতম বড় খরচের খাত হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। এ খাতে ব্যয় হয়েছে ৩১ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৩০ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া ছয় মাসে জ্বালানি, সারসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি বাবদ ব্যয় হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। একই সঙ্গে পাবলিক অর্ডার ও সেফটি খাতে ৩৮ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে ২২ হাজার ৭১০ কোটি টাকা, প্রতিরক্ষায় ১৩ হাজার ২০৭ কোটি টাকা, কৃষিতে ১৫ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা এবং স্বাস্থ্যে ৬ হাজার ১৯৫‍ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ