গত এক বছর ধরে বলিউডে সফল ছবির সংখ্যা কমেছে। গেলো কয়েক বছর তুলনমূলক বেশি দক্ষিণী নির্মাতাদের দিকেও ঝুকতে দেখা গেছে বলিউডের তারকাশিল্পীদের। এমন সময় বলিউডের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে মুখ খুললেন আমির খান। তার মতে, দক্ষিণী নির্মাতারা তাঁদের গল্পে আবেগকে প্রাধান্য দেন, যেটা বলিউডের নির্মাতারা ভুলে গেছেন।

আগামী ১৪ মার্চ ৬০ বছরে পা রাখতে চলেছেন আমির। অভিনেতার জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর অভিনীত একাধিক ছবি নতুন করে প্রেক্ষাগৃহে দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে একটি মাল্টিপ্লেক্স। রোববার রাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একাধিক বিষয়ে কথা বলেছেন আমির। 

আমির বলেন, ‘বলিউডের পরিচালক এবং কাহিনিকারেরা তাঁদের শিকড়কে ভুলে গেছেন। আবেগ এবং অনুভূতি নানা রকমের হতে পারে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দর্শক আবেগ পছন্দ করেন। কিন্তু বলিউড আবেগকে প্রাধান্য দিচ্ছে না।’

আমিরের মতে, জীবনের বিভিন্ন আঙ্গিক নিয়ে বলিউড কথা বলতে চাইছে। কিন্তু সেখানে জোর দেওয়া হচ্ছে সূক্ষ্ণ অনুভূতির উপর। উদাহরণ হিসেবে অভিনেতা হিংসার সঙ্গে সন্দেহ— দুই অনুভূতির তুলনা টেনেছেন।

অভিনেতার কথায়, ‘এখন বলিউডে সিঙ্গল স্ক্রিন এবং মাল্টিপ্লেক্সের জন্য আলাদা ছবি তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ আরও বড় বিষয় নিয়ে সিঙ্গল স্ক্রিনকে মাথায় রেখে ছবি তৈরি করছে।’

আমির এই মুহূর্তে তাঁর পরবর্তী ছবি ‘সিতারে জামিন পর’-এর মুক্তি নিয়ে ব্যস্ত আছেন। পাশাপাশি তাঁর প্রযোজিত ছবি ‘লাহোর ১৯৪৭’-এর প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম র খ ন ন আম র

এছাড়াও পড়ুন:

সুরক্ষা পেতে নিয়ম মেনে চলুন

ডাস্ট অ্যালার্জি হলো এক ধরনের পরিবেশগত প্রতিক্রিয়া। ঠান্ডা, সর্দি বা রাইনাইটিস, কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা, চর্মরোগ, অ্যাকজিমা বা দাদ, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট এ সবই ধুলার অ্যালার্জির কারণে দেখা দিতে পারে। এই ডাস্ট অ্যালার্জির জন্য দায়ী ধুলাবালির এক ধরনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পোকামাকড়। এই পোকাগুলোকে ডাস্ট মাইটস বা ধুলার পোকা বলা হয়ে থাকে। এরা আকারে আণুবীক্ষণিক আকৃতির হয়ে থাকে।
লক্ষণ আর উপসর্গগুলো
ডাস্ট অ্যালার্জির অ্যালার্জেন বাড়িতে আর্দ্র পরিবেশে বড় হয় এবং ভেতরের পরিবেশের সঙ্গে খুব ভালোভাবে মানিয়ে নেয়। যদি আপনার মধ্যে ডাস্ট অ্যালার্জির প্রবণতা থাকে, তাহলে আপনার শরীরে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলোর মধ্যে একটি বা একসঙ্গে অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে–
lহাঁচি
lসর্দি বা নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখে জ্বালা বা চুলকানি এবং চোখে জ্বালা-যন্ত্রণা
lচামড়ায় জ্বালা বা চুলকানি
lনাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
ডাস্ট অ্যালার্জির দ্বারা সৃষ্ট অ্যাজমায় নিম্নলিখিত উপসর্গ দেখা দিতে পারে–
lশ্বাস নিতে কষ্ট, নিঃশ্বাস ফেলার সময়
 বুকে সাঁ সাঁ করে শব্দ,
lঘুমানোর অসুবিধা ইত্যাদি।
ডাস্ট মাইটস বা ধুলার পোকাগুলো মানুষের খসে পড়া মৃত চামড়ার কোষগুলো ব্যবহার করে বেঁচে থাকে আর ওগুলো দিয়েই প্রধানত বাড়ির ধুলা-ময়লা তৈরি হয়। ডাস্ট মাইটস বা ধুলার পোকাদের বাড়ির ডাস্ট মাইটস এবং স্টোরেজ মাইটস এই দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এরা সাধারণত বাতাসের মাধ্যমে নাকের ভেতরে অস্বাভাবিক জ্বালা-যন্ত্রণার জন্য দায়ী। ডাস্ট মাইটসের মতো অ্যালার্জেনের (অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী জীবের) উপস্থিতিতে আপনার শরীর অ্যান্টিবডি বা প্রতিরোধক অবস্থা তৈরি করে আপনাকে এই প্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে এবং নিজের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ় করতে সাহায্য করে। এই প্রতিক্রিয়া স্থানীয়ভাবে বা শরীরের কোনো একটি বিশেষ অংশকে আক্রান্ত করতে পারে। কিছু বিরল ক্ষেত্রে, এই ডাস্ট অ্যালার্জি শরীরে অ্যানাফাইলেটিক শক নামক জীবনসংহারি ভয়াবহ শারীরিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। অসাবধানতাবশত শুধু ডাস্ট মাইটস পেটে চলে গেলে প্রাণসংহারি এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এই ডাস্ট মাইটস গদি, কার্পেট এবং আসবাবের ওপর অবস্থান করে। কিছু ক্ষেত্রে ডাস্ট মাইটস খাদ্যসামগ্রী নষ্ট বা বিষাক্ত করে ফেলতে পারে। অল্পবয়সী এটোপিক বা অ্যালার্জিপ্রবণ শিশু, হাঁপানি রোগী এবং অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা এ ধরনের অ্যালার্জিতে অধিক হারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
রোগ নির্ণয়
ঠিক কোন অ্যালার্জেন বা জীবটি ডাস্ট অ্যালার্জির জন্য দায়ী তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে কিছু রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা প্রয়োজন। প্রচলিত পরীক্ষার সময় একটি ত্বকে ছিদ্র করে পরীক্ষা করা হয়, যেখানে অ্যালার্জি নির্ণয় করতে বাড়ির ডাস্ট মাইটসের একটি নির্যাস ব্যবহার করা হয়। এরপর অপেক্ষা করে পর্যবেক্ষণ করা হয় কতক্ষণ পর ওই জায়গায় অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া শুরু হচ্ছে এবং কী পরিমাণ জায়গা ফুলে গেছে বা লাল হয়ে গেছে তা মেপে দেখা হয়। রোগাক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক যদি পরীক্ষার সময় সংবেদনশীল হয়, তবে রক্ত পরীক্ষা করানো সুবিধাজনক হয়। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে অ্যালার্জির নির্দেশক কিছু অ্যান্টিবডি শনাক্ত করা যেতে পারে। নাকের ভেতরের মিউকোসা বা শ্লেষ্মা বা চোখের কনজাংটিভার প্রতিক্রিয়া দেখেও অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করা যেতে পারে।
কোন অ্যালার্জেন ডাস্ট অ্যালার্জির কারণ তা জানতে পারলে ডাস্ট অ্যালার্জির চিকিৎসা খুব সহজ হয়ে যায়। শরীরের মধ্যস্থতাকারীর ওপর চিকিৎসা নির্ভর করে। যেমন– হিস্টামাইন এবং লিউকোট্রাইন এসব রাসায়নিক পদার্থ অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ঘটাতে সাহায্য করে। 
ইমিউনোথেরাপি বা রোগপ্রতিরোধক থেরাপি– এটি চিকিৎসার আরেকটি নতুন পদ্ধতি, যেখানে রোগীর অ্যালার্জির সংবেদনশীলতা কমিয়ে দেওয়া হয়। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং কার্যকর পদ্ধতি। 
উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা 
lঅ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মুখে খাওয়ার স্টেরয়েডের মতো ওষুধগুলো দেওয়া হতে পারে।
lকিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ধুলার কারণে রোগের সূত্রপাত এড়াতে এবং সেই সূত্রে অ্যালার্জি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
l বিছানার চাদর এবং বালিশের কভার গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
l কার্পেট সরিয়ে ফেলুন।
lআসবাব ভালোমতো ভ্যাকুয়াম ক্লিনিং করুন। 
প্রয়োজনে একজন অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা শুরু করুন। v

[ত্বক, চর্ম ও অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ
ডা. জাহেদ’স হেয়ার অ্যান্ড স্কিনিক হাসপাতাল,
পান্থপথ, ঢাকা]

সম্পর্কিত নিবন্ধ