দেশের বাজারে ইন্টেলের ১৩ প্রজন্মের কোর আই ৫ প্রসেসরে চলা লেনোভোর নতুন মডেলের ল্যাপটপ এনেছে গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসি। ‘আইডিয়া প্যাড স্লিম ৩আই’ মডেলের ল্যাপটপটিতে শক্তিশালী প্রসেসরের সঙ্গে ৮ গিগাবাইটের ডিডিআরফাইভ ৪৮০০ র্যাম থাকায় একই সঙ্গে একাধিক কাজ দ্রুত করা যায়। দুই বছরের বিক্রয়োত্তর সেবাসহ ল্যাপটপটির দাম ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা। আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৫ দশমিক ৬ ইঞ্চির ফুল এইচডি অ্যান্টিগ্লেয়ার পর্দার ল্যাপটপটিতে টিইউভি লো ব্লু লাইট প্রযুক্তি থাকায় দীর্ঘ সময় ব্যবহার করলেও চোখের ক্ষতি হয় না। ওয়াই-ফাই ৬ এবং ব্লুটুথ ৫ দশমিক ২ প্রযুক্তিনির্ভর ল্যাপটপটিতে ১০৮০পি প্রাইভেসি শাটারযুক্ত ওয়েব ক্যামেরার পাশাপাশি ডলবি স্পিকারও রয়েছে।
৫১২ গিগাইবাই ধারণক্ষমতার ল্যাপটপটির ওজন ১ দশমিক ৬২ কেজি হওয়ায় সহজে বহন করা যায়। মিলিটারি গ্রেড স্ট্যান্ডার্ড–৮১০ এইচ প্রযুক্তির ল্যাপটপটি ধুলারোধী বলে সহজে ময়লা হয় না। ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিকস সুবিধার ল্যাপটপটি আর্কটিক গ্রে রঙে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রবাসে ছুটিহীন মে দিবস
আমরা কমবেশি অনেকেই জানি মে দিবস কেন চালু হয়েছে। তাই এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে যেটা বলার আছে মে দিবস সম্পর্কে জানলেও এটা কয়জনের পালন করার সুযোগ রয়েছে? বা এতে আদৌ কি শ্রমিকদের কোন কল্যাণে এসেছে?
২০১৫ সালে আমি স্টুডেন্ট ভিসায় সাইপ্রাস যাওয়ার পর স্টাডির পাশাপাশি ওয়ার্কশপের কাজে যোগ দিই। প্রথম বছর মনে করেছিলাম ১লা মে সরকারি বন্ধ। মে দিবসের আগেরদিন বসকে বলেছিলাম আগামীকাল আমাদের ছুটি না?
সে হেসে বলল,“মে দিবস’ এটা আবার কি? এ সম্পর্কে তো আমি কিছু জানি না।” আসলেই ঐ দেশের প্রায় লোক মে দিবস সম্পর্কে অবগত নয়। অবগত হবার কথাও না, কারণ মে দিবসটি মূলত বিশেষ যে কারণে চালু করা হয়েছিল ১২ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটির পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে ১২ ঘণ্টা ডিউটি নেই বললেই চলে। ৮ ঘণ্টার বাইরে যা করবে তা ওভারটাইম হিসেবে মজুরি পরিশোধ করা হয়। সেজন্য তারা মে দিবসটিকে এতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। ফলে সরকারিভাবে সেদিন কোন ছুটি নেই।
তবে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এমনকি মধ্যপ্রাচ্যেও এখনো ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটি চালু রয়েছে। শুধু বিশেষ কিছু সেক্টরে ৮ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটি। তাই হয়ত আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে মে দিবস নিয়ে এতটা মাতামাতি হয়।
বলছিলাম সাইপ্রাসের কথা— তখন বন্ধুদেরকে মন খারাপ করে বলছিলাম ভাই কী চাকরি করি মে দিবসেও বন্ধ নেই। তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন বলল, “ভাই তোমার কাজ আছে বলে বন্ধের জন্য চিন্তা কর আর আমাদের যে কাজই নাই। মে দিবস এসব দিয়ে আমরা কী করব?”
আসলেই প্রবাসে একদিন কাজ না থাকা মানে অনেক পিছিয়ে পড়া। সাইপ্রাসে অন্যান্য সরকারি ছুটিগুলিতে বন্ধ দিলেও বেতন দেওয়া হয় না। এখানে দৈনিক ডিউটির উপর বেতন নির্ভর করে। তাই এখানে সরকারি ছুটি পাওয়া মানে লসটা নিজের। সুতরাং এই ‘মে দিবস’ কি আদৌ গুরুত্বপূর্ণ? নাকি এটি নামেমাত্র?
এরপর যখন ২০২০ সালে আরব আমিরাতে আসলাম এখানেও দেখি একই অবস্থা। মে দিবসে শ্রমিকদের কোন ছুটি নেই। মধ্যেপ্রাচ্যের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী দেশ হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত। এখানে এসে দেখলাম মানুষের প্রতিটা সেকেন্ডের মূল্য আছে। যে যত বেশি কাজ করতে পারে ততবেশি আয়। আরব আমিরাতে যেহেতু এখন কাজের সুযোগ অনেক বেশি, তাই একজন মানুষ চাইলে মাসে ৩০ দিনই কাজ করতে পারে।
এখানে যারা কনস্ট্রাকশন সেক্টর বা বিভিন্ন সুপার মার্কেট ও গ্রোসারিতে কাজ করে, তারা আদৌ জানে না মে দিবস নামে যে একটা দিবস আছে। কারণ, এ দিবসে কোন বন্ধ নেই এখানেও। এখানে কনস্ট্রাকশন সেক্টরগুলিতে সাধারণ ডিউটি হল ৮ ঘণ্টা। সপ্তাহে একদিন ছুটি রয়েছে। ৮ ঘণ্টার বাইরে ও বন্ধের দিন কাজ করলে তা হল ওভারটাইম। মে দিবসের নামে যদি বন্ধ দিয়ে মালিকপক্ষ ঐ একদিনের বেতন কাটে তাহলে এই মে দিবস কি শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য নাকি অকল্যাণের জন্য- সে প্রশ্ন থেকে যায়!
আবার যারা ব্যবসা করে আরব আমিরাতে, এখানে ব্যবসা করা মানে একদিনে অনেক খরচ একদিন যদি ব্যবসা বন্ধ থাকে তাহলে অনেক টাকা লোকসান এখানে যে অপ্রয়োজনে একদিন ব্যবসা বন্ধ রাখবেন সে সুযোগ নেই। সুতরাং বলা যায় এই মে দিবস কারো পক্ষে গেলেও আবার কারো বিপক্ষে চলে যায়। তাই হয়ত পুঁজিবাদী দেশগুলিতে মে দিবস নামেমাত্র থাকলেও এটি পালন করা হয় না।
বাংলাদেশে যারা মে দিবস নিয়ে বেশি মাতামাতি করছে তারাও বলতে পারবে না এটি তাদের কোন কাজে আসে। একজন রিকশা বা সিএনজি চালক বা সাধারণ দিন মজুর যদি একদিন কাজ করতে না পারে তার পরিবার না খেয়ে থাকবে। এই মে দিবস দিয়ে তার পেট চলবে না। তাই বলা যায় শুধু প্রবাস কেন; দেশেও ছুটিহীন এই মে দিবস।
লেখক : প্রবাসী
ঢাকা/এস