বিএনপির সন্ত্রাসীরা আওয়ামী তাণ্ডবকে হার মানিয়েছে, ঝিনাইদহের ঘটনা প্রসঙ্গে জামায়াত
Published: 10th, March 2025 GMT
ঝিনাইদহের মহেষপুরে বিএনপি নেতাকর্মীরা জামায়াতে ইসলামীর নারী নেত্রীদের ওপর হামলা করেছে অভিযোগ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াত।
দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সোমবার বিবৃতিতে বলেছেন, জামায়াতের নারী নেত্রীদের ওপর বিএনপির সন্ত্রাসীদের এ ন্যক্কারজনক হামলা ৫ আগস্ট পূর্ব আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের তাণ্ডবকেও হার মানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত রোববার মহেশপুর উপজেলা বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের কুল্লোপাড়া গ্রামের স্থানীয় নারীদের নিয়ে বিশ্ব নারী দিবসের আলোচনা সভা ছিল জামায়াতের। এসময় ওই এলাকার বিএনপির সন্ত্রাসী আল আমিন, ঝুমুর, সাহেব, সোহেল ও আশরাফুল হাতুড়ি, কাঁচি ও বাঁশের লাঠি নিয়ে জামায়াতের নেত্রী হাসিনা খাতুনসহ অন্যান্য নারীদের ওপর হামলা করে এবং গালিগালাজ করে। এসময় সালেহা বেগম নামে একজনকে বাঁশ আঘাত করা হয়। এছাড়া আল আমিন, সাহেব ও সোহেল হাসিনা খাতুনের সঙ্গে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায়।
নারী লাঞ্ছনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে জামায়াত। ভারতীয় কূটনীতিকের বক্তব্যেরে নিন্দা পৃথক বিবৃতিতে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন গোলাম পরওয়ার। ‘জামায়াতে ইসলামী আইএসআইর বাহক ছিল এবং দলটি (জামায়াত) পাকিস্তানের প্রভাবের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে’- বীণা সিক্রির এ বক্তব্যের নিন্দা করে গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
‘জামায়াত সংবিধানকে সর্বোচ্চ দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না এবং ছাত্রশিবির অস্ত্র লুট করেছিল ও এসব অস্ত্র এখনো ব্যক্তিগত হাতে রয়েছে’- এ বক্তব্যকে মিথ্যা ও কাল্পনিক বলে আখ্যা দিয়েছে জামায়াত।
জামায়াত কার্যালয়ে সাবেক মার্কিন দূত
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.
জামায়াতের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নির্বাচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও মানবাধিকারসহ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহ
বিনা নোটিশে ছাঁটাই, বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবিতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিনটেক্স নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন চার ঘণ্টা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে গেলে শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম। শ্রমিক ছাঁটাই ও সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জের আউখাবো এলাকায় রবিনটেক্স পোশাক কারখানার সামনে ঘটনাটি ঘটে। শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
আরো পড়ুন:
ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪
ক্যারাম খেলা নিয়ে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিনটেক্স নামে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় প্রায় ৮-১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৯ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক কারখানাটি বন্ধ ছিল। বন্ধ দেওয়ার আগে গত ২৮ মার্চ বিনা নোটিশে ৬৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বন্ধ দেওয়ার আগে শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশ বোনাস দেওয়ার কথা থাকলেও ৫০ শতাংশ মালিকপক্ষ প্রদান করেন। শ্রমিকদের এক মাসের বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও ২০ দিনের বেতন দিয়েই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার কারখানা খোলার দিন শ্রমিকরা মালিকপক্ষকে ছাঁটাইয়ের কারণ, বেতন ও বোনাস দেওয়ার কথা জানান। মালিকপক্ষ টালবাহানা শুরু করেন। আজ সকালে শ্রমিকরা তাদের দাবি নিয়ে কারখানার ভেতরে অবস্থান করছিল। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলেন। এসময় তাদের সঙ্গে শ্রমিকদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে পানির বোতল নিক্ষেপ করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শ্রমিকদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেন। পরে শ্রমিকরা কারখানার বাইরে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছের গুঁড়ি ফেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবরোধ করে।
এসময় মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট মুবীন, সৈনিক বাঁধন, সোহরাব, মেহেদী ও শ্রমিকদের মধ্যে শাফিয়া, রুনা, মলিনা, মাজেদা, রুপুসহ শতাধিক আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আন্দোলনরত শ্রমিক জানান, তারা কারখানার ভেতরে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছিলেন। তাদের ওপর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিচার্জ করে। এতে নারীসহ ৬৫ জন শ্রমিক আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, “রবিনটেক্স গার্মেন্টস কর্মীদের মধ্যে আজ অসন্তোষ দেখা দেয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বলে। শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।”
ঢাকা/অনিক/মাসুদ