আইনের শাসন থাকলে এ পরিস্থিতি হতো না: রিজভী
Published: 10th, March 2025 GMT
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে। কোথাও নারীদের নিরাপত্তা নেই। অপরাধী অপরাধ করার আগে আইনের প্রয়োগ যদি ঠিকঠাক থাকত, আইনের শাসন প্রয়োগ করা হতো, তাহলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
আজ সোমবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে ‘মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে’ এই সমাবেশ হয়।
সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করে রিজভী বলেন, ‘আপনার (সরকার) পুলিশ বাহিনী আছে। যখন ঘটনা ঘটে আমরা কী করব, আমরা দেখছি, অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না। অপরাধী অপরাধ করার আগে আইনের প্রয়োগ যদি ঠিকঠাক থাকত, আইনের শাসন প্রয়োগ করা হতো, তাহলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।’ দ্রুততম সময়ে ধর্ষণকারীদের বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
রিজভী দুর্নীতি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আন্দোলন প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘সমাজে যারা দুর্নীতি করবে, প্রশাসনের বিরুদ্ধে গিয়ে আপনারা কথা বলবেন। তাহলে আপনারা দেখবেন সমাজ থেকে চোর, ডাকাত, ধর্ষিতা, অপরাধীর সংখ্যা কমে যাবে।’
সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, ধর্ষণ আগেও হতো, কিন্তু কম হতো। শেখ হাসিনার আমলে এটি গণধর্ষণে পরিণত হয়েছে। বিচারহীনতার কারণে এই সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই বিচারহীনতার সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় নারী ও শিশু ধর্ষণের হার দিন দিন বাড়ছে। মহিলা দলের সভাপতি ধর্ষণের মামলার বিচার ১৮০ দিনে নয়, এক সপ্তাহের মধ্যেই নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সভা শেষে নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন নেতা–কর্মীরা। মিছিলটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে বিজয়নগর মোড় হয়ে পল্টন মোড় দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতা–কর্মীরা ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পরীক্ষায় নকল সরবরাহের শর্তে টাকা আদায়
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা নিয়ে এবারও নকল সরবরাহসহ বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা। শঙ্কায় আছেন অভিভাবকরাও। পরীক্ষায় নকল সরবরাহের শর্তে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মমিন মণ্ডল বলেন, যেসব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বা আগে অনিয়ম হয়েছে, সেখানে নজরদারি বাড়ানো হবে। কোচিং সেন্টারের শিক্ষকদের পরিদর্শক হিসেবে রাখা যাবে না। নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোচিং শিক্ষকদের পরিদর্শক হিসেবে রাখা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে এবার মোট ৯টি বিদ্যালয়ের এক হাজার ৬৫ জন পরীক্ষা দেবে। বিদ্যালয়গুলো হলো– চূহড় উচ্চ বিদ্যালয়, বেতগাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, বিরাহীমপুর উচ্চ বিদ্যালয়, পাইকান উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, জায়গীর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং শালমারা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। কেন্দ্রের আশপাশে জায়গীরহাট গুগল কোচিং সেন্টার, পারফেক্ট স্টাডি কেয়ার, শাহিন কোচিং সেন্টার, টু-ইন-ওয়ান, ম্যাথ প্লাস কোচিং সেন্টার, শালমারা সংকল্প এবং তারাগঞ্জ শাহিন কোচিং সেন্টারের অবস্থান। অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এসব কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত। গত বছর তাদের অনেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করে টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দিয়েছেন। এ নিয়ে সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড তদন্ত করে। সত্যতা পেয়ে কেন্দ্রসচিব ও প্রতিষ্ঠান প্রধান মাহেদুল ইসলামকে ভর্ৎসনা করা হয়। তাঁকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড না করার জন্য নির্দেশ দেয়।
এবারও পরীক্ষা শুরুর আগেই জায়গীরহাট গুগল ও শাহীন কোচিং সেন্টারসহ কয়েকটি সেন্টারের পরিচালক শিক্ষার্থীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে নিশ্চয়তা দিয়েছেন। এ কাজের জন্য তারা মোটা অঙ্কের টাকাও নিয়েছেন। বিশেষ করে ইংরেজি এবং গণিত পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ১ হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
জায়গীরহাট গুগল কোচিং সেন্টারের পরিচালক মওলা মিয়া বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়। তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন করতে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। একইভাবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাহিন কোচিং সেন্টারের পরিচালক শাহিন মিয়াসহ অন্যরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, পায়রাবন্দ কেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাড়তি নজরদারিতে থাকবে কেন্দ্রটি।’