নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে হাওরের বিলে মাছ শিকার করা নিয়ে সংঘর্ষের দুদিন পর ধনু নদী থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার উপজেলার নাওটানা এলাকায় নদীতে ভাসমান অবস্থায় লাশ তিনটি পাওয়া যায়। গত শনিবার মাছ শিকার করতে যাওয়া লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের এ সংঘর্ষ হয়।

নিহত তিনজন হলেন–নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে হৃদয় মিয়া (২৯), আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে শহীদ মিয়া (৫৫) এবং মদন উপজেলার বাগজান গ্রামের আবদুল কদ্দুছের ছেলে রোকন মিয়া (৫২)। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খালিয়াজুরী থানার ওসি মো.

মকবুল হোসেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত শনিবার খালিয়াজুরীর ইজারাকৃত কাঠালজান ও মরাগাঙ্গের মাছ লুট করার জন্য ধনু নদীর পাড়ে জড়ো হন হাজারো মানুষ। তাদের সঙ্গে মাছ ধরার সামগ্রীর পাশাপাশি লাঠি ছিল। ময়মনসিংহের নান্দাইল, গৌরিপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, নেত্রকোনা সদর, আটপাড়া, কেন্দুয়া, মদন ও খালিয়াজুরীর মানুষ এদিন মাছ শিকারে এলে এলাকার লোকজন প্রতিরোধের চেষ্টা করেন।

এর আগে এক সপ্তাহে মদনের নূরেশ্বর, খালিয়াজুরী উপজেলার কির্তনকলা, কারি, উচাবাইদা, হাইলা বিলসহ হাওরের কয়েকটি ইজারাকৃত বিলের মাছ লুট করেন শিকারিরা। প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করেই এমন ঘটনা ঘটছে। বিলগুলোর ইজারা মূল্য অন্তত ৪ কোটি টাকা। 

গত শনিবার সংঘর্ষের সময় মাছ শিকারিরা রসূলপুর ফেরিঘাটে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে কেউ কেউ সাতরে ধনু নদী পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন থেকে কয়েকজন নিখোঁজ থাকার কথা পরিবারের সদস্যরা জানান। এরপর থেকে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ডুবুরি দল নিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।
 
সোমবার বিকেলে তিনজন মাছ শিকারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার দিন সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছিলেন। শতাধিক যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মকবুল হোসেন বলেন, শনিবার সংঘর্ষের সময়  তিনজন নদী সাঁতরে পর হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পার হতে না পেরে তারা ডুবে মারা যান। এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা কাজ করছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র উপজ ল র ল কজন ত নজন

এছাড়াও পড়ুন:

রমজানে ৬টি অভ্যাস

রোজার মাসে তো বটেই, বছরজুড়ে এই অভ্যাসগুলো থাকা ভালো। এবারের রমজানে কী করবেন, তার একটা ধারণা দেওয়া হলো।

১. প্রতিদিন কোরআন পড়া: রমজানের মাসজুড়েই অল্প অল্প করে কোরআন পড়তে হবে। যদি নিয়ত থাকে খতম দেওয়ার, তাহলে প্রতি ওয়াক্তে পাঁচ পৃষ্ঠা করে পড়া যায়। তাহলে প্রতিদিন ২৫ পৃষ্ঠা এবং মাস শেষ হওয়ার আগেই একটি খতম হয়ে যাবে।

২. তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া: রোজার মাসে ঘুমাতে দেরি হয়। আবার সাহ্‌রির সময়ও দেখা যায় অনেকে আগে আগে ওঠেন। এ সময়টা কাজে লাগানো যায়। ফজরের আগমুহূর্তটা দোয়া কবুলের সময়। এ সময় তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া যায়। শুরুতে ২ রাকাত, ৪ রাকাত নামাজ দিয়েই শুরু করা যায়।

৩. সুন্নত ও নফল নামাজে যত্নশীল হওয়া: প্রতি ওয়াক্তের ফরজ নামাজের আগে বা পরের বেশ কিছু সুন্নত নামাজ রয়েছে। সারা বছর বিভিন্ন ব্যস্ততা বা অলসতার কারণে নিয়মিত এগুলো করা হয় না। এবারের রমজানে কোনো ওয়াক্তেই সুন্নত বা নফল নামাজ যেন বাদ না পড়ে।

আরও পড়ুনরমজানের সাহ্‌রি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৫২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

৪. নামাজ শেষে জিকির করা: ফরজ নামাজ শেষে কিছু দোয়া ও জিকির আছে। জিন শয়তান থেকে নিরাপত্তা, কাজে ও কর্মে, রিজিকে বরকত লাভ—ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই আমলগুলো বেশি কার্যকরী। প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট লাগে এগুলো করতে। এগুলো নিয়মিত করা যেতে পারে।

৫. সকাল-সন্ধ্যার জিকির করা: আল্লাহর রাসুল (সা.) সকাল–সন্ধ্যার কিছু জিকির শিখিয়ে গেছেন, যেগুলো অনেক ফজিলতপূর্ণ। রোজার মাসে এগুলো অভ্যাসে পরিণত করা যায়। হিসনুল মুসলিম বা দোয়ার বইতে পাওয়া যাবে।

৬. ইশরাক বা সালাতুদ দোয়া পড়া: সালাতুদ দোয়া হচ্ছে দেহের প্রতিটি হাড় জোড়ার সদকা। (মুসলিম, ৭২০) এই নামাজের সময় বেলা ওঠার ১৫ মিনিট পর থেকে দ্বিপ্রহরের ৫ মিনিট আগপর্যন্ত। সর্বনিম্ন রাকাতসংখ্যা দুই রাকাত থেকে নিয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী বেশিও পড়া যায়।

আরও পড়ুনরোজার প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন১২ মার্চ ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ