কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ শাসনামলের অনিয়ম-দুর্নীতি জানানোর বিষয়ে আদেশ জারি
Published: 10th, March 2025 GMT
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ জানাতে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। গত সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এই অফিস আদেশ জারি করা হয়। ১৯ মার্চের মধ্যে রেজিস্ট্রার দপ্তরে নির্দিষ্ট বক্সে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ জমা দিতে জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১ জানুয়ারি ২০০৯ সাল থেকে ৩১ জুলাই ২০২৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যত ধরনের প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণাদিসহ আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে রেজিস্ট্রার দপ্তরে নির্দিষ্ট বক্সে জমা দিতে অনুরোধ করা হলো।
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময় সংঘঠিত ঘটনা ও অনিয়মের তথ্যানুসন্ধান করার জন্য কলা অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদাকে প্রধান করে গত বছরের ২৭ অক্টোবর ১১ সদস্যের একটি ‘সত্যানুসন্ধান’ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটিকে ৬০ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।
গতকাল দুপুরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসনিক অনিয়ম-দুর্নীতি, একাডেমিক অনিয়ম-দুর্নীতি এবং বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে মারামারিসহ যে অঘটন ঘটেছে, এসব বিষয় তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট সদস্যদের সমন্বয়ে তিনটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। সিন্ডিকেটের প্রথম সভায় এই কমিটিগুলো করা হয়। পরে ‘সত্যানুসন্ধান’ কমিটি গঠন করা হয়। ‘সত্যানুসন্ধান’ কমিটির প্রতিবেদনের পর যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনিয়মের আরও যদি প্রমাণ থাকে, তা জানানোর জন্য চিঠির মাধ্যমে আদেশ জারি করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নজর ল
এছাড়াও পড়ুন:
জবির লংমার্চে পুলিশের বাধা, স্মারকলিপি দেবে প্রতিনিধিদল
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে আয়োজিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে তাঁতীবাজার মোড় থেকে তারা লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে ক্যাম্পাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দূতাবাসের উদ্দেশ্যে এ পদযাত্রা শুরু করেন তারা।
তবে আজ থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার কথা উল্লেখ করে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে অনুরোধ করে। পুলিশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বিক্ষোভকারীরা তাঁতীবাজার মোড় থেকে রায়সাহেব বাজার দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।
এ সময় ‘ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ইসরাইলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ইসরাইলি আগ্রাসন, বন্ধ করো করতে হবে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা। এ ছাড়াও তাদের হাতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মার্কিন দূতাবাস ও সৌদি আরবের দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান করবে প্রতিনিধিদল। স্মারকলিপিগুলো বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় লেখা হয়েছে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের জবি শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আমরা মুসলিম জাতি, খালিদ বিন ওয়ালিদের উত্তরসূরি। কিন্তু আমরা তা ভুলে গেছি। আজ আমরা শুধু ফতোয়াবাজিতে ব্যস্ত। এরই সুযোগে ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলিম ভাই-বোনদের হত্যা করছে। আমি মুসলিম যুবকদের জাগরণের আহ্বান জানাচ্ছি।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “যদি গাজার ফিলিস্তিনদের উপর বর্বরতা বন্ধ না হয়, তাহলে জাতিসংঘের অফিসে পরের সপ্তাহে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। আমরা শিক্ষক সমিতি গাজায় গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
এর আগে গত সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’র প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংহতি সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।
তিন দফার মধ্যে রয়েছে—গাজায় বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানানো, মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশে লংমার্চ ও স্মারকলিপি দেওয়া এবং দেশে ইসরায়েলি পণ্য নিষিদ্ধ করা।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী