ওয়ালটনের নতুন স্মার্টফোন ‘জেনন এক্স৯১’ বাজারে
Published: 10th, March 2025 GMT
দেশের শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানি ওয়ালটনের ‘জেনন’ সিরিজের নতুন স্মার্টফোন ‘জেনন এক্স৯১’ বাজারে এসেছে। দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনে তৈরি ৬৪ মেগাপিক্সেল সনি আইএমএক্স৬৮২ প্রাইমারি ক্যামেরার ফোনটিতে আছে ৬ ন্যানোমিটারের হিলিও জি১০০ প্রসেসর। গ্রাফাইট গ্রে কালারে ফোনটি বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
ওয়ালটন মোবাইলের মার্কেটিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের ইনচার্জ হাবিবুর রহমান তুহিন জানিয়েছেন, দেশের সব ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুমে নতুন মডেলের এই স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি ঘরে বসেই ওয়ালটনের অনলাইন সেলস প্লাটফর্ম (https://waltonplaza.
এই ফোনে আছে ১২০ হার্জ রিফ্রেশ রেটের ৬.৭ ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস থ্রি-ডি কারভড অ্যামোলেড ডিসপ্লে। ফোনটির টাচ স্যাম্প্লিং রেট ৩৬০ হার্জ। আকর্ষণীয় সেলফির জন্য সামনে আছে ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা।
অ্যান্ড্রয়েড ১৪ অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত এই ফোনে ২৪ জিবি র্যাপিড মেমোরি ব্যবহৃত হয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড ১৫ অপারেটিং সিস্টেম পর্যন্ত সুবিধা পাওয়া যাবে ডিভাইসটিতে। ব্যবহারকারীরা ২৫৬ জিবি পর্যন্ত ইন্টার্নাল স্টোরেজ সুবিধা পাবেন। গ্রাফিক্স হিসেবে আছে মালি-জি৫৭ এমসি২। ফোনটিতে চ্যাটজিপিটি, জেমিনি এআাই, কো-পাইলট ও ডিপসিকের মতো এআই অ্যাপগুলো প্রি-লোড হিসেবে আছে।
পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য ডিভাইসটিতে আছে পাঁচ হাজার এমএএইচ হাই-ক্যাপাসিটি লি-পলিমার ব্যাটারি। সঙ্গে ৩৩ ওয়াট টাইপ-সি ফাস্ট চার্জিং থাকায় দ্রুততম সময়ে চার্জিং সুবিধা থাকছে এই ডিভাইসে।
অন্যান্য ফিচারের মধ্যে আছে—নাইট লাইট, ইন-ডিসপ্লে ফিংগার প্রিন্ট স্ক্যানার, ফেস আনলক, থিম স্টোর ও বাইপাস চার্জিং ফিচার।
ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নিজস্ব কারখানায় তৈরি এই স্মার্টফোনে ৩০ দিনের বিশেষ রিপ্লেসমেন্ট সুবিধাসহ এক বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা পাচ্ছেন গ্রাহক।
ঢাকা/একরাম/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দিল্লির বাঙালিপাড়ার মাছবাজার বন্ধের হুমকি গেরুয়াধারীদের
ছবি: থামে মাছের ছবি এবং ভেতরে https://x.com/MahuaMoitra?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1909610390700671162%7Ctwgr%5E0f47f73e19ebaf9ff53fbee18992435844d44fc2%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Ftimesofindia.indiatimes.com%2Fcity%2Fdelhi%2Ffish-sellers-threatened-in-c-r-park-video-circulated%2Farticleshow%2F120104486.cms
দিল্লির বহুপরিচিত বাঙালি এলাকা চিত্তরঞ্জন পার্কে মন্দিরঘেঁষা এক মাছের বাজার বন্ধের হুমকি দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। বাজারে গিয়ে মাছ ব্যবসায়ীদের তাঁরা জানিয়েছেন, এই বাজার বন্ধ করতে হবে। কারণ, মন্দিরলাগোয়া এই বাজার মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করছে।
গেরুয়াধারী ওই যুবকেরা দোকানি ও ক্রেতাদের বলেন, এই বাজার সনাতন ধর্ম পরিপন্থী কাজ করছে। সনাতন ধর্মে প্রাণী হত্যা নিষিদ্ধ। মন্দির ও মাছবাজার একেবারে লাগোয়া। এই বাজার তাই বন্ধ করতে হবে।
গেরুয়াধারী যুবকদের একজন ক্রেতা-বিক্রেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘এটা আমার নির্দেশ।’
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর দক্ষিণ দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে চলে আসা বাঙালি হিন্দু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঙালিদের জমি দিয়েছিল সরকার। সেখানকার পুরোনো বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত ৬০ বছরে এই ধরনের হুমকি এই তল্লাটের কোনো বাজারের দোকানিদের দেওয়া হয়নি। তাঁরা বলেন, বাঙালি ও মাছ প্রায় সমার্থক। এ কথা অবাঙালিদের জানা।
তৃণমুল কংগ্রেস নেত্রী ও সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র গতকাল মঙ্গলবার একটি ভিডিও শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘অনুগ্রহ করে দেখুন কীভাবে বিজেপির গুন্ডারা চিত্তরঞ্জন পার্কের মৎস্যপ্রেমী বাঙালিদের হুমকি দিচ্ছেন। স্থানীয় লোকজনের দাবি, ৬০ বছরে এমন ঘটনা এই প্রথম।’
ভিডিওতে দেখা যায়, ১ নম্বর মার্কেটের এক দোকানি ওই যুবকদের বলছেন, এই বাজার দিল্লি উন্নয়ন পর্ষদের (ডিডিএ) তৈরি করা। তাঁরাই এই বাজারে মাছ বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন।
এর জবাবে এক গেরুয়াধারীকে বলতে শোনা যায়, ডিডিএ এমন বহু অকাজ করেছে। তাদের ব্যবস্থাও করা হবে। আপনাদের বলা হচ্ছে এখানে মাছ বিক্রি না করতে। সনাতন ধর্মে প্রাণী হত্যা অপরাধ।
এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, আসামের কামাক্ষ্যা মন্দিরে পশু-প্রাণী বলি হয়। তাঁকে থামিয়ে ওই যুবক বলেন, সেসবের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানেও প্রতিবাদ হচ্ছে। তাঁর দাবি, মন্দির ও বাজারের দেয়াল লাগোয়া। মাছ বিক্রির দরুন মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে।
দোকানিদের দাবি, বাজারের মাছ বিক্রেতারাই ওই মন্দির তৈরি করেছিলেন। সেখানে নিয়মিত পূজা করা হয়। কেউ কোনো দিন কোনো রকম আপত্তি বা প্রতিবাদ করেননি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে ভিডিওটি ভুয়া। ওটা যাঁরা করেছেন তাঁরা চিত্তরঞ্জন পার্ক এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চান।’ সচদেব বলেন, তাঁরা এই হুমকির কড়া নিন্দা করেন ও পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
সচদেব বলেন, মন্দিরের পবিত্রতা প্রত্যেকেরই রক্ষা করা উচিত। এই বাজারের দোকানিরা প্রত্যেকেই সব সময় সেই পবিত্রতা রক্ষা করে চলেছেন। তিনি বলেন, এই বাজার বেআইনি নয়। তা ছাড়া এই তল্লাটের বাসিন্দাদের কাছেও মাছ প্রয়োজনীয়। মাছ বিক্রেতারাও সব সময় পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করে ব্যবসা করেন। অঞ্চলের সামাজিক-ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও তাঁরা নিয়মিত অংশ নেন।
দিল্লিতে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে মাত্র তিন মাস। আম আদমির পার্টির আমলে অবশ্য সনাতন ধর্মাবলম্বীরা রাম নবমী উপলক্ষে কোনো কোনো এলাকায় মাছ–মাংসের দোকান বন্ধ রাখার ফরমান জারি করেছেন। উত্তর প্রদেশের কোনো কোনো জেলা শহরেও এই হুকুম জারি হয়েছে। কিন্তু বাঙালি অধ্যুষিত চিত্তরঞ্জন পার্কে এই জাতীয় হুমকি এই প্রথম। ওই গেরুয়াধারী যুবকেরা নিজেদের সনাতনী পরিচয় দিলেও কোন সংগঠনের পক্ষে ওই হুকুম জারি করছেন, তা জানা যায়নি।