অবসরের পর প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে নেমেই এবি ডি ভিলিয়ার্স ফের প্রমাণ করলেন কেন তাকে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বলা হয়। টাইটান লিজেন্ডসের হয়ে বুলস লিজেন্ডসের বিপক্ষে ‘টেস্ট অফ সুপারস্পোর্ট পার্ক লিগে’ টুর্নামেন্টে তিনি মাত্র ২৮ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের নস্টালজিক করে তুললেন।

তার ইনিংসটি ছিল পুরনো দিনের সেই বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের পরিচায়ক, যেখানে তিনি কোনো চার না মেরে ১৫টি ছক্কা হাঁকান। সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছান একটি বিশাল পুল শটের মাধ্যমে বলকে বাউন্ডারির বাইরে গ্রিন গ্যালারিতে দর্শকদের কাছে পাঠিয়ে।

তার এই বিধ্বংসী ইনিংসে ভর করে টাইটানরা ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করে। জবাবে বুলস ১৪ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান তোলার পর বৃষ্টির কারণে ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়।  

আরো পড়ুন:

ভারতকে ফাইনালে তুলে রোহিতের অনন্য রেকর্ড

বাংলাদেশের কাছে হারলে অন্যরকম ‘বিব্রতকর’ রেকর্ড গড়বে পাকিস্তান

২০২১ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর এটি ছিল ডি ভিলিয়ার্সের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। তার শেষ ম্যাচ ছিল আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে।

২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে তিনি এক বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার উপভোগ করেছেন। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে ১৯ হাজার ৮৬৪ রান নিয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তার গড় ৪৮.

৩৩।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার সাত বছর পরও ওয়ানডেতে সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির (৩১ বলে) রেকর্ডটি তারই দখলে রয়েছে এখনও। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডি ভিলিয়ার্স ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডস’ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশাদার ক্রিকেটে ফেরার ঘোষণা দেন। এই টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে খেলেছিলেন কেভিন পিটারসেন, ব্রেট লি, জ্যাক ক্যালিস, শাহিদ আফ্রিদি ও যুবরাজ সিং-এর মতো তারকারা। দ্বিতীয় আসর চলতি বছরের জুলাইতে অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণে দীর্ঘসূত্রতা!

কলেজ ও মাধ্যমিক স্কুল মিলে ২০১৬ সাল থেকে উপজেলা স্তরের অন্তত সাড়ে ৬০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ প্রক্রিয়ায় আনা হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান ‘কাঠখড় পুড়িয়ে’ দীর্ঘদিনে শিক্ষক-কর্মচারীদের পদায়নসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হলেও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান নানা কারণ ও অজুহাতে এখনও অনেক পিছে পড়ে রয়েছে।   

মন্ত্রণালয়-দপ্তর-বিভাগ; এ টেবিল-ও টেবিল; বড় কর্তা-মাঝারি কর্তা-ছোট কর্তা– সবার মন রক্ষা করা কঠিন হলেও তা করার জন্য সাধ্যানুসারে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
২০১৬ সালে শুরু হওয়া প্রক্রিয়াটি ৮-৯ বছরেও সম্পন্ন করা গেল না! তাহলে কী লাভ হলো এমন সরকারীকরণে? এ দীর্ঘ সময়ে সরকারীকরণের কোনো সুবিধা না পেয়েই অনেকে অবসরে চলে গেছেন। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। 

অনেক প্রতিষ্ঠানে এক বা দেড়-দুই বছর আগে অর্ধেক সংখ্যক (প্রতিষ্ঠানভেদে কম-বেশি হতে পারে) শিক্ষক-কর্মচারীর পদায়ন হয়েছে, বাকিগুলো ঝুলন্ত। 
না সরকারি-না বেসরকারি অবস্থায় তাদের রীতিমতো গলদ্ঘর্ম হতে হচ্ছে।
পদায়নকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্টদের মাঝে ভিন্ন রকমের বৈষম্য তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। জীবনপ্রদীপ নিভে যাওয়া কিংবা অবসরে গিয়েও শিক্ষক-কর্মচারীরা ‘ম্যানেজ সংস্কৃতি’ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। এ যেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সঙ্গে বসবাস! তা ছাড়া এটি যে কতটা মানসিক পীড়ার কারণ, তা ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কারও পক্ষে অনুমান করা কঠিন। 
সেই ২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে কতবার যে মূল সনদপত্র এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ ও নথিপত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এর কোনো হিসাব নেই। শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত; আমার মতো অনেকে অবসরে গেছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কারও রেহাই নেই। ফটোকপি আর ফটোকপি। চরম অস্বস্তিকর এক ব্যাপার।
একটি দপ্তরে (তা না হলে দুই জায়গায়) মূল সনদ ও নথিপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হলে বাকিগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী কিংবা প্রতিষ্ঠানকে না ডেকে ‘আন্তঃদাপ্তরিক যোগাযোগ’-এর মাধ্যমে তা সম্পন্ন করা উচিত ছিল।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যে বলতে গেলে ভেঙে পড়ার উপক্রম, এর একটি বড় কারণ অপরিকল্পিতভাবে এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের সরকারীকরণ।
সরকারি হওয়া তিন-সাড়ে তিনশ কলেজের মধ্যে কমপক্ষে দুইশ কলেজে নিয়মিত অধ্যক্ষ নেই। কোনোটি তিন বছর, কোনোটি আবার পাঁচ-সাত বছর, এমনকি আট-দশ বছর ধরে অধ্যক্ষশূন্য। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ভারে কলেজগুলো বলতে গেলে ন্যুব্জ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে কলেজগুলোয় চলা ভিন্ন রকমের খেলা এখনও শেষ হয়নি। অবসরে গেছেন কিংবা মৃত্যু হয়েছে, এমন শিক্ষকের স্থলে গত সাত-আট বছরে বিষয়ভিত্তিক কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
দীর্ঘদিন অধ্যক্ষহীন সরকারি হওয়া কোনো কোনো কলেজে শিক্ষা ক্যাডার থেকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিলেও মাত্র দুই-চার মাস কিংবা বড়জোর এক বছরের মধ্যেই তিনি বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন– এমন উদাহরণ এক-দুটি নয়, অনেক। এক কথায়, প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা লাটে উঠতে বড় বেশি বাকি বলে মনে হয় না। 
সবচেয়ে ভয়াবহ ও দুর্ভাবনার বিষয় হলো, সংশ্লিষ্টদের উপেক্ষা ও অবহেলা। এভাবেই পার হয়েছে অন্তত আটটি বছর। এ নিয়ে ভালো কোনো আলোচনা নেই। দেশে এখন রাজনীতি, নির্বাচন আর গদি ছাড়া যেন আর কোনো বিষয়ই নেই আলোচনার।
মেঘে মেঘে বেলা অনেক হয়ে গেছে। শুধু হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী নন, তাদের পরিবার ও নিকটজনও এ নিয়ে স্বস্তিতে নেই। দীর্ঘমেয়াদি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও বিড়ম্বনার নিরসন না হলে এমন সরকারীকরণের সার্থকতা কোথায়?   

বিমল সরকার: কলাম লেখক, অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণে দীর্ঘসূত্রতা!
  • কনকাশন সমস্যায় মাত্র ২৭ বছর বয়সে অবসরে পুকোভস্কি
  • বারবার মাথায় আঘাত, ২৭ বছরেই ক্রিকেট ছাড়লেন সেই পুকোভস্কি
  • কনকাশনের কাছে হার মেনে ২৭ বছরেই ক্রিকেট ছাড়লেন সেই পুকোভস্কি