মোংলা বন্দর উন্নয়নে ব্যয় হবে ৪০৪৬ কোটি টাকা
Published: 10th, March 2025 GMT
‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় জি টু জি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) কার্য ও পণ্য ক্রয় কার্যক্রমের প্রস্তাব অনুমোদনের উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৪৬ কোটি ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় জি টু জি ভিত্তিতে ‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি মোট ৪ হাজার ৬৮ কেটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা (চীন সরকারের প্রকল্প ঋণ ৩ হাজার ৫৯২ কোটি ৮৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং সরকারি অর্থায়ন ৪৭৫ কোটি ৩২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।
প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার ও চীনের অর্থায়নে জি টু জি পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের অনুকূলে জিওবি অংশে ৪৭৫ কোটি ৩২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিতে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল অফিস ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্রাথমিক অনুমোদন এবং ঠিকাদার নির্বাচন ও ঋণ আবেদনের পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য চিঠি পাঠায়। প্রকল্প ঋণের অংশে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মাধ্যমে চীন সরকারের সম্মতি নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর তারিখের সভায় উপস্থাপিত হয় এবং ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর তারিখে অনুমোদিত হয়।
২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর তারিখে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ ও অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে চীনের নমনীয় ঋণ গভর্নমেন্ট কনশেসনাল লোনের (জিসিএল) মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষাসহ চীন সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। চীন সরকার ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর এ প্রকল্পে অর্থায়নে প্রাথমিক সম্মতি দেয়।
পরে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের বিষয়ে গত ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি সিদ্ধান্ত দেয় যে, চীনা অর্থায়নে বাস্তবায়িতব্য সব প্রকল্পের ক্ষেত্রে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হবে। তবে, উভয় রাষ্ট্রের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট, যেমন: অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা বা অন্যান্য বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে সীমিত পর্যায়ে প্রয়োজনে ভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এ সিদ্ধান্ত এখন থেকে চীনা অর্থায়নে নতুন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
তবে শর্ত থাকে যে, চীনা অর্থায়নে জি টু জি ভিত্তিতে চীনা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে ডিপিএম পদ্ধতি অনুসরণের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে বা চীনা দুতাবাসে লোন অ্যাপ্লিকেশন পাঠানো হয়েছে, সেসব প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্ষেত্রে গত ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট তারিখের অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত প্রতিপালনপূর্বক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চীনের তিনটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি দেয়। তার মধ্যে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ওই তিন প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশনকে (সিসিইসিসি) উপযুক্ত বিবেচনা করে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ২৮২তম বোর্ড সভায় যাচাই- বাছাই করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিরূপণ করে উক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হয়েছে।
প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে একনেক সভায় উপস্থাপন করা হলে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তীতে একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে একনেক সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রকল্পের গুরুত্ব, উপযোগিতা বিবেচনায় যাচাই করে প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ২১৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা (৫.
প্রকল্পের ডিপিপিতে বর্ণিত প্রধান ক্রয়কার্যগুলো হলো:
(ক) মোংলা বন্দরে ৪ লাখ টিইউ কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা অর্জনের জন্য প্রকল্পটির অধীনে দুটি কন্টেইনার জেটি (৩৬৮ মিটার) নির্মাণ।
(খ) ৮৭ হাজার ৬০০ বর্গমিটার লোডের কন্টেইনার ইয়ার্ড এবং ৩৪ হাজার ১৭০ বর্গমিটার খালি কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ।
(গ) ৪ হাজার ২৬০ বর্গমিটার হ্যাজার্ডার্স কার্গো হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ।
(ঘ) চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন, সাতটি আরটিজি ও ৩৩টি অন্যান্য যন্ত্রপাতি ক্রয়, সার্ভে ও ডিজাইন।
(ঙ) ভূমি উন্নয়ন, আরসিসি পেভমেন্ট ও মেরিন স্ট্রাকচার।
(চ) আনুষাঙ্গিক সুবিধাদিসহ পরিচালন ভবন, তেল সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থা, ইলেক্ট্রিক্যাল কাজ ও আইসিটিসম্বলিত যোগাযোগের কাজ।
(ঘ) পানি সরবরাহ, নিষ্কাশন, অগ্নিনির্বাপণ, পরিবেশ সুরক্ষা এবং অটোমেশন ইত্যাদি।
মোংলা বন্দর আধুনিকায়নের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমবে। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ঢাকা/হাসনাত/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ন সরক র র ২০১৬ স ল র প রকল প র বর ত র খ কম ট র অন ম দ
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিন এবার ট্রাম্পকে লেনিন পদক দেবেন!
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অশুভ আঁতাত দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাপক জল্পনার বিষয়। কেজিবির সাবেক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, ১৯৮৭ সালে মস্কো ট্রাম্পকে নিয়োগ দিয়েছিল এবং ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার আগের বছরগুলোতে তাদের একটি সম্পদ হিসাবে ট্রাম্পকে লালনপালন করা হয়েছিল।
দুজন অবসরপ্রাপ্ত রাশিয়ান গুপ্তচর গত মাসে আবারও বলেছেন, তখন ৪০ বছর বয়সী ট্রাম্পের সাংকেতিক নাম ছিল ‘ক্রাসনভ’। তখন থেকেই ট্রাম্প গোপনে পুতিনের সুরে তাল মিলিয়ে নাচছেন।
এসব অভিযোগের কোনোটিই প্রমাণিত হয়নি এবং সবকিছুই অস্বীকার করা হয়েছে। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬-এর সাবেক প্রধানকে নিয়ে গঠিত কথিত কমিটি, এফবিআইয়ের মুলার রিপোর্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা—সবাই একমত হন যে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট আনার জন্য রাশিয়ার দিক থেকে ‘বেশ কিছু পদ্ধতিগত’ প্রচেষ্টা ছিল।
তখন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পুতিনকে ‘শক্তিশালী নেতা’ হিসেবে প্রশংসা করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন পুতিনের সঙ্গে তাঁর কখনো দেখা হয়নি। যদিও তার আগে তিনি বলেছিলেন, দেখা হয়েছিল।
আরও পড়ুনইউক্রেন যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত পুতিনই জিততে চলেছেন... ০৯ মার্চ ২০২৫ট্রাম্প এখন আরও সরব। ১২ ফেব্রুয়ারি দুজনের মধ্যকার ফোনালাপের স্থায়িত্ব ছিল ৯০ মিনিট। এবং সেই ফোনালাপে বিশ্বটাই বদলে গেছে।
ট্রাম্পকে কী বলেছেন পুতিন? নিশ্চয়ই কোনো প্ররোচনা এসেছে। এর পর থেকে ট্রাম্প নিজে ক্রেমলিনের স্বৈরশাসককে সন্তুষ্ট করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ইউক্রেনকে মার্কিন সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করেছেন। রাশিয়ার অন্যায্য শর্তে একটি ‘শান্তিচুক্তি’ করার দাবি জানিয়েছেন।
ট্রাম্পের এই আত্মবিক্রি ইউরোপ এবং চীন, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় পশ্চিমা স্বার্থের ওপর বিশাল নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ট্রাম্প যদি রশিয়ার কলের পুতুলই না হবেন, তাহলে এই যে তাঁর এত বড় ভোল পাল্টানো, সেটার ব্যাখ্যা কী? অজুহাত দিতে যারা সিদ্ধহস্ত, তাদের অজুহাতের অন্ত নেই। কেউ কেউ অজুহাত দিচ্ছেন, ইউক্রেন আমেরিকান সমস্যা নয়। এর থেকে অসার যুক্তি আর কী হতে পারে!
পুতিন এখন বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের একটি অংশীদারের মতো। যে দেশটি এখন এমন লোকেরা পরিচালনা করছেন, যাদের ‘প্রায়োগিক ও বাস্তববাদী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি’ রয়েছে এবং পূর্বসূরিদের তথাকথিত ‘নিয়মভিত্তিক বিশ্ব’ ও ‘ত্রাতাবাদী’ ক্লিশে মতাদর্শ পরিত্যাগ করেছে।একটা সার্বভৌম গণতান্ত্রিক দেশের বিরুদ্ধে বিনা প্ররোচনায় সামরিক আগ্রাসন হলে সেটা সব স্বাধীন দেশের জন্যই সমস্যা। অন্যরা যুক্তি দিচ্ছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ইউরোপের যুদ্ধে লড়াই করতে হবে না। নিজের স্বার্থেই মানুষ অন্য মানুষের ভূখণ্ডে গিয়ে যুদ্ধ করে। এটা সব সময় হয়ে আসছে।
সমর্থকেরা বলছেন, ট্রাম্প হলেন একজন পাকা চুক্তি প্রণেতা ও শান্তি স্থাপনকারী। এর চেয়ে বিরক্তিকর যুক্তি আর কী হতে পারে! তিনি এরই মধ্যে শূন্য লাভের বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউক্রেনকে পুতিনের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। আফগানিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ব্যর্থতার কথা মনে করে দেখুন তো।
ভক্তরা দবি করেন, ট্রাম্প খুব চতুরতার সঙ্গে রাশিয়া-চীন সম্পর্কে বিপত্তি তৈরি করে ‘নিক্সনের বিপরীত’ কৌশলটা প্রয়োগ করছেন। (১৯৭২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঠেকাতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।) কিন্তু বাস্তবতা হলো, মাত্র কয়েক দিন আগে, পুতিন ও সি চিন পিং রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার জোটবদ্ধ সম্পর্ক যে অনন্য, সেটা আবারও নিশ্চিত করেছেন।
ওভাল অফিসে পুতিনের প্রতি যে উষ্ণ অনুভূতি, তার প্রকাশ ট্রাম্প ঘটিয়েছেন জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের সময় বিশ্বাসঘাতকতা করে। অতীতে যখন কখনো কথা রাখেননি তাই পুতিন কেন শান্তিচুক্তিতে তাঁর কথা রাখবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ট্রাম্প। তিনি বলতে থাকেন, ‘তাঁরা আমাকে শ্রদ্ধা করে! আমাকে বলতে দিন। পুতিন আমার সঙ্গে যথেষ্ট নরকযন্ত্রণা ভোগ করেছেন। তিনি একটা ভুয়া ডাইনি শিকারের মধ্য দিয়ে গেছেন…।’
আরও পড়ুনপুতিনকে ঠেকানোর মোক্ষম অস্ত্রটা ইউরোপের হাতেই আছে১৩ ঘণ্টা আগেট্রাম্প এখানে রাশিয়ার সঙ্গে যোগসূত্র নিয়ে অতীতে যে তদন্ত হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গে এটা বলেছেন। এটা পরিষ্কার যে ট্রাম্প মনে করেন পুতিনকে অযথাই যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যাকারী বলে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। পুতিন কেবল রোল মডেল হিসেবে নয়, ব্যক্তিগত বন্ধু এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার একজন সহকর্মী বলে মনে করছেন।
এ ঘটনা থেকে নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া অনেক দিকে গড়িয়েছে। এর কোনোটাই যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর জন্য ভালো নয়। ইউক্রেনের আত্মসমর্পণ এখন যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার যৌথ যুদ্ধ লক্ষ্য। জেলেনস্কিকে ট্রাম্প হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন এবং কোনো ধরনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়াই ইউরোপকে একটি চুক্তির মাধ্যমে পদদলিত করার চেষ্টা করে চলেছেন।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বা পুরোপুরি তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প। তিনি এরই মধ্যে সাইবার অপারেশনের মাধ্যমে রাশিয়ার ‘ছায়াযু্দ্ধ’ মোকাবিলার জন্য ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে সহযোগিতা, সেটা স্থগিত করেছেন।
ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত থাকবে কি না, সে বিষয়ে জার্মানি ও ফ্রান্স সঠিক প্রশ্নটাই করেছে। এই সংকটে জোটটি আর না–ও টিকতে পারে। সম্ভাব্য সেতুবন্ধের ভূমিকা নিতে যাওয়া কিয়ার স্টারমারের অবস্থানের ক্ষেত্রে দৃঢ়তার ঘাটতি আছে। পোল্যান্ড ও বাল্টিক দেশগুলো বোধগম্যভাবেই ভয় পাচ্ছে যে তারাই রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু।
ট্রাম্পের এই আত্মসমর্পণের সুযোগে রাশিয়া যুদ্ধের তীব্রতা বাড়াচ্ছে, আরও বেশি ভূমি দখলে নিচ্ছে এবং কিয়েভের ওপর আরও চাপ তৈরি করছে।
পুতিন এখন বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের একটি অংশীদারের মতো। যে দেশটি এখন এমন লোকেরা পরিচালনা করছেন, যাদের ‘প্রায়োগিক ও বাস্তববাদী বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি’ রয়েছে এবং পূর্বসূরিদের তথাকথিত ‘নিয়মভিত্তিক বিশ্ব’ ও ‘ত্রাতাবাদী’ ক্লিশে মতাদর্শ পরিত্যাগ করেছে।
ট্রাম্প হয়তো নোবেল শান্তি পুরস্কার পাবেন না, কিন্তু নিশ্চিত করেই তিনি অর্ডার অব লেনিন পুরস্কার পাবেন। ট্রাম্প হচ্ছেন পুতিনের পোষ্য।
সাইমন টিসডাল, দ্য অবজারভার–এর পররাষ্ট্রবিষয়ক ভাষ্যকার
দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত