‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় জি টু জি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) কার্য ও পণ্য ক্রয় কার্যক্রমের প্রস্তাব অনুমোদনের উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৪৬ কোটি ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় জি টু জি ভিত্তিতে ‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি মোট ৪ হাজার ৬৮ কেটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা (চীন সরকারের প্রকল্প ঋণ ৩ হাজার ৫৯২ কোটি ৮৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং সরকারি অর্থায়ন ৪৭৫ কোটি ৩২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকার ও চীনের অর্থায়নে জি টু জি পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের অনুকূলে জিওবি অংশে ৪৭৫ কোটি ৩২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিতে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 

ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল অফিস ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্রাথমিক অনুমোদন এবং ঠিকাদার নির্বাচন ও ঋণ আবেদনের পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য চিঠি পাঠায়। প্রকল্প ঋণের অংশে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মাধ্যমে চীন সরকারের সম্মতি নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর তারিখের সভায় উপস্থাপিত হয় এবং ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর তারিখে অনুমোদিত হয়।

২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর তারিখে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ ও অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে চীনের নমনীয় ঋণ গভর্নমেন্ট কনশেসনাল লোনের (জিসিএল) মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষাসহ চীন সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। চীন সরকার ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর এ প্রকল্পে অর্থায়নে প্রাথমিক সম্মতি দেয়।

পরে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের বিষয়ে গত ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি সিদ্ধান্ত দেয় যে, চীনা অর্থায়নে বাস্তবায়িতব্য সব প্রকল্পের ক্ষেত্রে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হবে। তবে, উভয় রাষ্ট্রের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট, যেমন: অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা বা অন্যান্য বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে সীমিত পর্যায়ে প্রয়োজনে ভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এ সিদ্ধান্ত এখন থেকে চীনা অর্থায়নে নতুন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

তবে শর্ত থাকে যে, চীনা অর্থায়নে জি টু জি ভিত্তিতে চীনা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে ডিপিএম পদ্ধতি অনুসরণের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে বা চীনা দুতাবাসে লোন অ্যাপ্লিকেশন পাঠানো হয়েছে, সেসব প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্ষেত্রে গত ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট তারিখের অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত প্রতিপালনপূর্বক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চীনের তিনটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি দেয়। তার মধ্যে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ওই তিন প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশনকে (সিসিইসিসি) উপযুক্ত বিবেচনা করে। 

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ২৮২তম বোর্ড সভায় যাচাই- বাছাই করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিরূপণ করে উক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হয়েছে।

প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে একনেক সভায় উপস্থাপন করা হলে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তীতে একনেক সভায় উপস্থাপনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে একনেক সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রকল্পের গুরুত্ব, উপযোগিতা বিবেচনায় যাচাই করে প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় থেকে ২১৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা (৫.

০১%) কমিয়ে মোট ৪ হাজার ৬৮ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এটি ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তারিখের একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পের ডিপিপিতে বর্ণিত প্রধান ক্রয়কার্যগুলো হলো: 
(ক) মোংলা বন্দরে ৪ লাখ টিইউ কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা অর্জনের জন্য প্রকল্পটির অধীনে দুটি কন্টেইনার জেটি (৩৬৮ মিটার) নির্মাণ। 

(খ) ৮৭ হাজার ৬০০ বর্গমিটার লোডের কন্টেইনার ইয়ার্ড এবং ৩৪ হাজার ১৭০ বর্গমিটার খালি কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ। 

(গ) ৪ হাজার ২৬০ বর্গমিটার হ্যাজার্ডার্স কার্গো হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ।

(ঘ) চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন, সাতটি আরটিজি ও ৩৩টি অন্যান্য যন্ত্রপাতি ক্রয়, সার্ভে ও ডিজাইন।  

(ঙ) ভূমি উন্নয়ন, আরসিসি পেভমেন্ট ও মেরিন স্ট্রাকচার। 

(চ) আনুষাঙ্গিক সুবিধাদিসহ পরিচালন ভবন, তেল সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থা, ইলেক্ট্রিক্যাল কাজ ও আইসিটিসম্বলিত যোগাযোগের কাজ।

(ঘ) পানি সরবরাহ, নিষ্কাশন, অগ্নিনির্বাপণ, পরিবেশ সুরক্ষা এবং অটোমেশন ইত্যাদি।

মোংলা বন্দর আধুনিকায়নের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমবে। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ন সরক র র ২০১৬ স ল র প রকল প র বর ত র খ কম ট র অন ম দ

এছাড়াও পড়ুন:

১৪ বছরে বদলে যাওয়া জোভান

পরনে জিন্স, গায়ে শার্ট, পায়ে স্নিকার্স। শার্টটি বেশ পুরোনো ডিজাইনের। চুলগুলো এলোমেল। পাতলা গড়নের জোভানের চোখে-মুখে লেগে আছে উচ্ছ্বাস। ফেসবুকে পোস্ট করা দুটো ছবির একটিতে এমন লুকে দেখা যায়। অন্যটি সমকালীন। কোনো একটি নাটকের দৃশ্যের। যাতে আরো বেশি ফিটফাট ও পরিণত জোভানকে দেখা যায়।

অভিনেতা জোভান আহমেদ ছবি দুটো কয়েক দিন আগে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন। ক্যাপশনে লেখেন, “তুমি কুৎসিত নও, তুমি গরীব।” পাশাপাশি উল্লেখ করেন প্রথম ছবিটি ২০১০ সালে তোলা, অন্যটি ২০২৪ সালে। অর্থাৎ মাঝে কেটে গেছে ১৪ বছর। এই ১৪ বছরে পৃথিবী যেমন বদলেছে, তেমনি জোভানের শারীরিক-মানসিক ও অর্থনৈতিক অবস্থারও দারুণ পরিবর্তন হয়েছে। অভিনেতা হিসেবেও নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন।

যার ফলে, জোভানের ছবি দেখে তার ভক্ত-অনুরাগীরাও নস্টালজিয়া হয়ে পড়েছেন। তাদের নানা মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন এই অভিনেতা। ফয়সাল দীপ লেখেন, “তখন সেলাই করা শার্ট খুব জনপ্রিয় ছিল! বড় কলার!” জবাবে জোভান লেখেন, “এটা আমার বানানো শার্ট ছিল।” ইমন লেখেন, “আপনার এই জার্নিতে আমরা পাশে ছিলাম, আছি, থাকব সবসময়ই। আপনার জন্য দোয়া ও ভালোবাসা। আপনি আমার প্রিয় অভিনেতা।” এমন অসংখ্য মন্তব্য শোভা পাচ্ছে কমেন্ট বক্সে।

আরো পড়ুন:

চার বিজয়ীকে ‘প্রিয়জন’র সংবর্ধনা

মামলার গ্যাঁড়াকলে ইরেশ যাকের, শোবিজ তারকাদের ক্ষোভ

২০১১ সালে একটি টিভি বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন জোভান আহমেদ। তার দুই বছর পর আতিক জামানের ‘ইউনিভার্সিটি’ সিরিজে অভিনয় করেন। শাওন গানওয়ালা নাটকে তার ইচ্ছে মানুষ মিউজিক ভিডিওটি ২০১৬ সালে ইউটিউবে পঞ্চম সর্বাধিক দেখা বাংলাদেশি গান।

বাংলালিংকের বিজ্ঞাপন ‘আমি ঘুরি সারা বাংলাদেশ’-এর মাধ্যমে প্রথম আলোচনায় আসেন ফারহান আহমেদ জোভান। এরপর অসংখ্য জনপ্রিয় টিভি নাটক উপহার দিয়েছেন এই অভিনেতা। ২০১৬ সালে ‘অস্তিত্ব’ সিনেমায় অভিনয় করেন। এটি তার অভিষেক সিনেমা। ২০১৯ সালে ‘মরীচিকা’, ২০২১ সালে ‘পালাই পালাই’ শিরোনামে ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেন জোভান।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৪ বছরে বদলে যাওয়া জোভান