শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত
Published: 10th, March 2025 GMT
এবার ঈদে ব্যাংকের শাখা থেকে কোনো নতুন নোট মিলবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, টাকায় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় কয়েকটি পক্ষ থেকে আপত্তি উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে ঈদ সামনে রেখে নতুন নোট বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে বাজারে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ যেসব নোট রয়েছে, তার ব্যবহার অব্যাহত থাকবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী মাসের মধ্যে নতুন নকশার নোট বাজারে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মাঝে নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো। পাশাপাশি ব্যাংকের শাখায় যে নতুন নোট গচ্ছিত রয়েছে, তা বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণ করার জন্য বলা হলো। চিঠিতে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট দ্বারা সকল নগদ লেনদেন কার্যক্রম সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারাও নতুন নোট পাবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নতুন টাকা পাওয়া যাবে ১৯ মার্চ থেকে। এবার ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোট দেওয়া হবে। নতুন নোট বিনিময় হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক ও কয়েকটি ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে। ২৫ মার্চ পর্যন্ত জনসাধারণ ও গ্রাহকদের মধ্যে নতুন নোট বিনিময়ের পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে নতুন নোট বিতরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদে নতুন নোট বিনিময় করা হবে না। তবে বাজারে যেসব নোট রয়েছে, তার প্রচলন অব্যাহত থাকবে।
জানা গেছে, নতুন নকশার নোট বাজারে আসবে এপ্রিল-মে মাসে। এবার টাকার নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি বাদ দেওয়া হচ্ছে। এর পরিবর্তে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নতুন নোটের নকশায় স্থান পাচ্ছে।
টাকা ছাপানোর সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, বিশ্বের মাত্র ৮–১০টি কারখানা থেকে ১৯০টি দেশ টাকা ছাপানোর কাগজ কিনে থাকে। ফলে চাইলেই হঠাৎ করে টাকার নকশা পরিবর্তন করে নতুন নোট ছাপানো যায় না। এ ছাড়া কালি, ডাইসসহ টাকা ছাপানোর সব সরঞ্জাম বিদেশ থেকে আনতে হয়। ফলে নকশা পরিবর্তন করে নতুন নোট আনতে দুই বছর সময় প্রয়োজন। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দ্রুত সময়ে নতুন নোট আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে টাকার নিরাপত্তার পাশাপাশি মানও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ খ ম জ ব র রহম ন র
এছাড়াও পড়ুন:
পহেলা বৈশাখে নিরাপত্তা হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
জাতীয়ভাবে চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
এ বছর ব্যাপকভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তাও আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে৷। নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য যা যা করা প্রয়োজন, তার সবই করা হচ্ছে। তাছাড়া নববর্ষের শোভাযাত্রায় নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্যও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শোভাযাত্রার সামনে-পেছনে পুলিশ থাকবে কি না, এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, শোভাযাত্রাসহ নববর্ষ উদযাপনের পুরো বিষয়টি আয়োজন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তারাই নির্ধারণ করবে কারা কোথায় থাকবে। পুলিশ তো বাংলাদেশেরই নাগরিক। সবাই যদি আনন্দ শোভাযাত্রা করতে পারে, তবে পুলিশ বাহিনীও তা করতে পারবে।
ফিলিস্তিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের নামে বাটাসহ বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অফিস-দোকান ভাঙচুর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সারা দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। যারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সারা দেশে এর সঙ্গে জড়িত ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, নববর্ষের শোভাযাত্রার নাম ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ থাকবে কি না, এ বিষয়ে আগামী ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। কেননা, শোভাযাত্রার আয়োজক তারাই।
তিনি বলেন, নববর্ষ উদযাপনের বিষয়ে আগামীকাল (৯ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে। এবারের উৎসবে প্রচুর জনসমাগম হবে। আমাদের প্রস্তুতিও ব্যাপক। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ উপলক্ষে মেলাও আয়োজন করা হচ্ছে। বাঙালি ছাড়াও ২৬টি জাতিগোষ্ঠী উৎসবমুখর পরিবেশে নববর্ষের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভায় সরকারের উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ