মাগুরার সেই শিশুটি চোখের পাতা খুলেছে: ডেপুটি প্রেস সচিব
Published: 10th, March 2025 GMT
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটি চোখের পাতা খুলেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। চিকিৎসকরা আশা করছেন, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।
সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন শিশুটি চোখের পাতা খুলেছে।
এর আগে, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির ফুসফুসে বাতাস জমে যাওয়ার কারণে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে এবং বুকে টিউব বসানো হয়েছে। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে শিশুটির মস্তিষ্কেও ক্ষতি হয়েছে।
শিশুটির মা জানিয়েছেন, তিনি হাসপাতালে শিশুটির শয্যাপাশে রয়েছেন, তবে মেয়েটির কোনো নড়াচড়া নেই। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তাকে সুস্থ করার জন্য।
রবিবার সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিশুটিকে দেখতে সিএমএইচে যান এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দোষীরা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না।
ধর্ষণের ঘটনায় মাগুরা আদালত চত্বরের সামনে রবিবার বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে আসামিদের আদালতে হাজির এবং রিমান্ড আবেদন করা হয়নি।
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর, বোনের স্বামী, ভাশুর এবং শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যান্সারের থাবায় মৃত্যুমুখে ইব্রাহিম, দিশেহারা পরিবার
২২ বছরের তরুণ মো. ইব্রাহিম খাঁ বিএ ক্লাসের ছাত্র। পিতা গ্রামের দিন মজুর, দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। কুঁড়ে ঘরে বসবাস, পরিবারের এক একটি দিন মানে একটি কষ্টের গল্প।
টানাটানির সংসার হলেও ইব্রাহিমের ছিল অদম্য ইচ্ছা যে কারণে তার লেখাপড়া থেমে থাকেনি। ছোট বেলা থেকেই সে ক্লাসের সব পড়া ঠিক করে প্রতিদিন স্কুলে উপস্থিতি থাকত।
ইব্রাহিমের যেমন একদিন মানুষের মত মানুষ হওয়ার স্বপ্ন ছিল। পরিবারেও স্বপ্ন ছিল ইব্রাহিম একদিন দরিদ্র পরিবারের দুঃখ ঘোঁচাবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
মরণব্যাধী ক্যান্সার থাবা বসিয়েছে ইব্রাহিম খাঁ এর শরীরে। তার লড়াইটা যেন ধীরে ধীরে থেমে যাচ্ছে। সে এখন মৃত্যু পথযাত্রী। ইব্রাহিম আর খেলার মাঠে যায় না, বন্ধুদের সাথে আর আড্ডায় মেতে ওঠে না। বাড়ির বিছানায় শুয়ে থাকে সে। প্রতিদিনই প্রতিবেশী, আত্নীয় স্বজন, সহপাঠী ও বন্ধুরা তাকে দেখতে আসে।
ইব্রাহিমকে নিয়ে পুরো পরিবার এখন দিশেহারা। পুরো পরিবার জেনে গেছে চিকিৎসা না হলে বেশি দিন আর পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে না সে! তার আকুতি শুনতে শুনতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে তার স্বজনরা।
প্রায় দুই বছর আগে কোমরে ব্যথা দেখা দেয় ইব্রাহিমের। মাঝেমধ্যেই ব্যথা হতো। চিকিৎসরা কোমর ব্যথার সাধারণ ওষুধ দিতেন। এক সময় সাধারণ ওষুধে কাজ হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎই ওজন কমে যেতে শুরু করে। কিছু খেলেই গুলিয়ে আসে গা। সঙ্গে মাথা ঘোরা, দুর্বলতাও রয়েছে। খুলনার সিটি মেডিকেল কলেজের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেখানো হলো। এম আর আই করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এম আর আই করার পর ইব্রাহিমের ব্যাক বোন টিউমার ধরা পড়ে। তাকে দ্রুত জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু এখানেই অপেক্ষা করছিল এক দুঃসংবাদ। বায়োপসি রিপোর্টে ইব্রাহিমের মারাত্মক পর্যায়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে।
ইব্রাহিমের বাবা মো. ইউনুছ খাঁ সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের একজন দিন মজুর। মা নার্গিস বেগম একজন গৃহিণী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে ইব্রাহিম সবার বড়। তার বোনের বয়স ৭ বছর ও ছোট ভাইয়ের বয়স ৩ বছর।
সংসারে অনেক টানাটানি আর অভাবের কারণে প্রায়ই তাদেরকে আশ্রয় নিতে হয় পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী গ্রামে তার মামা জিনারুল ইসলামের সংসারে।
বর্তমানে ইব্রাহিম গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পিয়ার আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বিএ পাস কোর্সের (শিক্ষা বর্ষ-২০২১-২০২২) ছাত্র। বিগত প্রায় এক বছর ধরে কখনও হাসপাতালের বিছানায়, কখনও বাড়িতে বিছানায় শুয়ে। যে কারণে তার লেখাপড়াও এক প্রকার বন্ধ।
ইব্রাহিম বর্তমানে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ডা. নাহিদ হাসানের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, ১৭টি কেমো থেরাপি দিতে পারলে সে সুস্থ হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে তার মামা ও পিতা সহায়-সম্পত্তি বিক্রি করে ও ধার দেনা করে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ছয় লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন। ১৭টি কেমোর মধ্যে মাত্র ৪টি কেমো ও বেশ কিছু রেডিও থেরাপি দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
বর্তমানে টাকার অভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। পঞ্চম কেমো দেওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বাবার টাকা জোগাড়ের আর কোন পথ খোলা নেই।
এদিকে দিন দিন খারাপ হচ্ছে ইব্রাহিমের শারীরিক অবস্থা। সে এখন আর দাঁড়াতে পারে না। এদিকে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে তার পরিবার।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার চিকিৎসা সম্পন্ন করতে আরও অন্তত ২০ লাখ টাকার প্রয়োজন। একদিকে সন্তানের চিকিৎসা, অন্যদিকে সংসার খরচ। উভয় দিকেই চরম নাজুক অবস্থায় আছেন ইউনুছ খাঁ। একদিকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে প্রাণপ্রিয় সন্তান, অপর দিকে বিপুল পরিমাণ টাকার যোগাড়ের অনিশ্চয়তা। কোন দিকে যাবেন এই অসহায় পিতা?
এখন প্রাণপ্রিয় সন্তানকে বাঁচাতে সমাজের হৃদয়বান মানুষের দিকে তাকিয়ে আছেন ইব্রাহিমের বাবা ও পরিবার। ২০ লক্ষ টাকা ইব্রাহিমের মতো পরিবারে অকল্পনীয় হলেও সমাজের সবাই মিলে এগিয়ে এলে এই পরিমাণ অর্থ জোগাড় হওয়া হয়তো অতটা কঠিন হবে না। প্রয়োজন শুধুই সামান্য একটু ভালোবাসা আর অন্তর থেকে সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে আসা।
ইব্রাহিমকে বাঁচাতে তার বাবা ও মামার বিকাশ অ্যাকাউন্টে আপনার সহায়তা পৌঁছে দিতে পারেন। মো. ইউনুছ খাঁ (বাবা), মোবাইল ও বিকাশ নম্বর- 01799-141644; জিনারুল (মামা) রকেট নম্বর- 01915-891902. অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে পারেন। আপনার ছোট ছোট সহায়তা হয়তো তাদের কাছে অনেক বড় কাজে আসবে।
ঢাকা/মুকুল/এস