অবরোধ-মানববন্ধনসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী কর্মসূচি
Published: 10th, March 2025 GMT
দেশব্যাপী নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনগুলো তাদের নানা কর্মসূচি অব্যহত রয়েছে। সোমবার (১০ মার্চ) সকাল থেকেই তারা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করেন। রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
ধর্ষণের প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের কঠোর শাস্তির দাবিতে আবারো ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাবি শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা দলে দলে প্যারিস রোডে জড়ো হতে শুরু করেন। এরপর সেখান থেকে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। এ সময় তালাইমারি থেকে একদল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মেইন গেটে যোগদান করেন।
এ সময় তারা ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশান’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে জবাই কর’, ‘উই ওয়ান্ট যাস্টিস, নো মোর রেপিস্ট’, ‘খুনি কেন বাহিরে, ইনটেরিম জবাব চাই’, ‘রাবির অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশান’, ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’, ‘আমার মায়ের কান্না, আর না আর না’, ‘তুমি কে আমি কে? আছিয়া আছিয়া’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
২ ঘন্টা পর বেলা ১টার দিকে আগামীকাল মঙ্গলবারের কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব।
তিনি বলেন, “আগামীকাল আমরা চোখে কাপড় বেঁধে ফেসবুকে শেয়ার ও ‘উই ওয়ান্ট যাস্টিস নো মোর রেপিস্ট’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করবো।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
দেশব্যাপী নারীর বিরুদ্ধে সকল প্রকার সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহীদ মিনারের পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক হুমায়ুন হাবিব হিরণের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর.
অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক, যুগ্ম আহ্বায়ক জর্জিস মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সাবেক সভাপতি নবীনূর নবীন, মুরাদ হাসান, আব্দুল গাফফার প্রমুখ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইবি শাখা ছাত্রদল।
এসময় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুনের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব, আনারুল ইসলাম, মনিরুল হক, সদস্য সাব্বির, রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দিন, সৌরভ, উল্লাস, মুক্তাদির, সাক্ষর প্রমুখ কর্মীরা।
মানববন্ধনে তাদের হাতে ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘জাস্টিস ফর আছিয়া, আছিয়া আছিয়া’, ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’, ‘মাগুরায় ধর্ষণকাণ্ডের অভিযুক্তদের ফাসি চাই’, ‘ধর্ষণের বিচার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক’ বিভিন্ন প্লাকার্ড দেখা যায়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)
দুপুর ২ টার দিকে ধর্ষক ও নারী নিপীড়কদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে কুবি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এ সময় তারা ‘তুমি কে, আমি কে? আছিয়া আছিয়া’, ‘রশি লাগলে রশি নে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’ ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এই পর্যন্ত যত ধর্ষণ হয়েছে কোনটিরই সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হয়নি। তাই এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আছিয়ার সুষ্ঠু বিচার চাই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আছিয়ার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)
দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ব্যানারে দেশব্যাপী নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শাবিপ্রবি শিক্ষকরা। মানববন্ধনে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক অংশ নেন। এর মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন আওয়ামীপন্থি শিক্ষক।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি নিরোধ সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাবিনা ইসলাম এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো এবং আইনের কঠোর প্রয়োগেরও আহ্বান জানান।
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান আসামির জামিন বাতিল করে শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ
বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
দাসেরহাট বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে সাধুরপাড়া নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধনে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজীউর রহমান মোল্লা বলেন, একাধিক মামলার আসামি বাবু জামিনে এসে আবারও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার দখলের পাঁয়তারা করছেন। সাধুরপাড়া ইউনিয়নে কোনো খুনি, সন্ত্রাসী থাকবে না। তাঁকে সাধুরপাড়ার জনগণ অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। প্রয়োজনে এলাকাবাসী তাঁকে প্রতিহত করবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৪ জুন রাত ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পাটহাটি এলাকায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১৭ জুন ২২ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম। মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপির বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু কয়েক মাস আগে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।
গত বছরের ২৭ আগস্ট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযুক্তরা হলেন– প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবু, রাকিবিল্লাহ রাকিব, রেজাউল করিম, শরিফ মিয়া, মনিরুজ্জামান মনির, বাদশা মিয়া, মো. শাহজালাল, শফিকুল ইসলাম ও তোফাজ্জল মিয়া। পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়েছেন মামলার বাদী মনিরা বেগম।