সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে ডাকাতের কবলে পড়েছেন জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী জেলা কমিটির পাঁচ নেতা। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে মহাসড়কের ঝাঔল এলাকায় তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসে ডাকাতি হয়।

ওই ঘটনায় যমুনা সেতু পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন রাজশাহী জেলা জামায়াতের শিক্ষা সম্পাদক মো.

ওবায়দুল্লাহ। এতে সাত–আটজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী মো. ওবায়দুল্লাহ আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘খুব বেশি হলে দুই–তিন মিনিটের মধ্যে ডাকাতি করে চলে যায়। আমরা গাড়িতে আটজন ছিলাম। এর মধ্যে ছয়জনের কাছ থেকে টাকা ও মুঠোফোন লুট করা হয়। গাড়ি থামানোর পর আমাদের কয়েকজনের গলায় হাঁসুয়া ধরে ডাকাতেরা। কয়েকজন গাড়ির দুই পাশে হাঁসুয়া নিয়ে দাঁড়িয়েছিল।’  

ওই মাইক্রোবাসে মো. ওবায়দুল্লাহর সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী জেলা মাদ্রাসা পরিষদের সভাপতি ফারুক মোহাম্মদ ইসমাইল আলম, গোদাগাড়ী পৌর জামায়াতের কৃষি সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা, রাজশাহী জেলা জামায়াতের মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের সভাপতি আবদুল আজিজ ও গোদাগাড়ী পৌর জামায়াতের সভাপতি শওকত আলী।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাজশাহী জেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতারা গত শনিবার বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁরা ঢাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হন। তাঁদের মাইক্রোবাসটি রাত সাড়ে আটটার দিকে সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কের কোনাবাড়ী ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পশ্চিমে ঝাঔল এলাকায় পৌঁছালে গাড়ির পেছনে শব্দ হয়। চালক আশেক আল রহমান মাইক্রোবাসের চাকা পাঞ্চার হয়েছে সন্দেহে গাড়ি থামিয়ে নামেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন কেউ গাড়ির ওপর ইট ছুঁড়েছে। কিছু বুঝতে উঠতে না উঠতেই সাত থেকে আটজন লোক ঘিরে ধরে। ওই দলটি ধারালো অস্ত্র, রামদা, হাসুয়া, ডেগার ও লোহার রড নিয়ে প্রাণনাশের প্রদর্শন করতে থাকে।

আরও পড়ুনসিরাজগঞ্জে যমুনা সেতুর সংযোগ সড়কে মাইক্রোবাসে ডাকাতি, মুঠোফোন ও টাকা লুট৬ ঘণ্টা আগে

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, মামলার বাদী ওবায়দুল্লাহর একটি স্মার্ট ফোন, ফারুক মোহাম্মদ ইসমাইল আলমের ২৪ হাজার টাকা, গোলাম মোস্তফার দুইটি স্মার্টফোন ও ১৮ হাজার টাকা, আবদুল আজিজের একটি মুঠোফোন ও ৭ হাজার টাকা, শওকত আলীর একটি মুঠোফোন ও ৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং চালক আশেক আল রহমানের ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় পালিয়ে যায় ডাকাতেরা।

যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনারুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। ডাকাতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বান্দরবানের লামার তামাকখেত থেকে আট শ্রমিককে অপহরণ

বান্দরবানে লামা উপজেলার দুর্গম এলাকার একটি তামাকখেত থেকে আটজন শ্রমিককে একদল দুর্বৃত্ত অপহরণ করেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে তামাকখেত থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে গহিন জঙ্গলের দিকে তাঁদের ধরে নিয়ে যায় বলে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন।

লামার স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, লামা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে সরই ইউনিয়নের লুলাইন খাল এলাকায় কিছু খামারি তামাক চাষ করেন। সেখানে কক্সবাজারের চকরিয়া, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে গিয়ে শ্রমিকেরা কাজ করেন। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গভীর রাতে ওই তামাকের খামারে হানা দেয়। সেখানে ঘুমন্ত আটজন শ্রমিককে ঘুম থেকে তুলে ধরে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় অপহৃত শ্রমিকদের নাম ও ঠিকানা পাওয়া যায়নি।

সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস জানিয়েছেন, সরইয়ের লুলাইং ও লেমুপালং এলাকাগুলো অত্যন্ত দুর্গম। কোনো সড়ক যোগাযোগ নেই। বনাঞ্চল ও দুর্গমতার সুযোগ নিয়ে কিছু স্থানীয় সন্ত্রাসী অপহরণ–বাণিজ্য করে। এর আগেও সাতজন শ্রমিককে ধরে নিয়ে গিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। টাকার জন্য মূলত এই অপহরণ ঘটনা ঘটছে। আটজন শ্রমিকের জন্য মুক্তিপণ হিসেবে অপহরণকারীরা পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছে বলে জানা গেছে। তবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন তামাকখেতের আট শ্রমিক অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, শ্রমিকদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযান চলছে। তবে এলাকাটি বেশি দুর্গম হওয়ায় সারা দিনের অভিযানে শ্রমিকদের হদিস পাওয়া যায়নি। অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দাবি করার ব্যাপারে তাঁর কাছে কোনো তথ্য নেই বলে ওসি জানিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখলেন বিনিয়োগকারীরা
  • বান্দরবানের লামার তামাকখেত থেকে আট শ্রমিককে অপহরণ