ঢিল ছুড়ে মাইক্রোবাস থামায় ডাকাতেরা, লুট করে চলে যায় ২-৩ মিনিটে
Published: 10th, March 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে ডাকাতের কবলে পড়েছেন জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী জেলা কমিটির পাঁচ নেতা। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে মহাসড়কের ঝাঔল এলাকায় তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসে ডাকাতি হয়।
ওই ঘটনায় যমুনা সেতু পশ্চিম থানায় মামলা করেছেন রাজশাহী জেলা জামায়াতের শিক্ষা সম্পাদক মো.
মামলার বাদী মো. ওবায়দুল্লাহ আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘খুব বেশি হলে দুই–তিন মিনিটের মধ্যে ডাকাতি করে চলে যায়। আমরা গাড়িতে আটজন ছিলাম। এর মধ্যে ছয়জনের কাছ থেকে টাকা ও মুঠোফোন লুট করা হয়। গাড়ি থামানোর পর আমাদের কয়েকজনের গলায় হাঁসুয়া ধরে ডাকাতেরা। কয়েকজন গাড়ির দুই পাশে হাঁসুয়া নিয়ে দাঁড়িয়েছিল।’
ওই মাইক্রোবাসে মো. ওবায়দুল্লাহর সঙ্গে ছিলেন রাজশাহী জেলা মাদ্রাসা পরিষদের সভাপতি ফারুক মোহাম্মদ ইসমাইল আলম, গোদাগাড়ী পৌর জামায়াতের কৃষি সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা, রাজশাহী জেলা জামায়াতের মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরের সভাপতি আবদুল আজিজ ও গোদাগাড়ী পৌর জামায়াতের সভাপতি শওকত আলী।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাজশাহী জেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতারা গত শনিবার বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকায় যান। সম্মেলন শেষে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁরা ঢাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হন। তাঁদের মাইক্রোবাসটি রাত সাড়ে আটটার দিকে সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কের কোনাবাড়ী ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পশ্চিমে ঝাঔল এলাকায় পৌঁছালে গাড়ির পেছনে শব্দ হয়। চালক আশেক আল রহমান মাইক্রোবাসের চাকা পাঞ্চার হয়েছে সন্দেহে গাড়ি থামিয়ে নামেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন কেউ গাড়ির ওপর ইট ছুঁড়েছে। কিছু বুঝতে উঠতে না উঠতেই সাত থেকে আটজন লোক ঘিরে ধরে। ওই দলটি ধারালো অস্ত্র, রামদা, হাসুয়া, ডেগার ও লোহার রড নিয়ে প্রাণনাশের প্রদর্শন করতে থাকে।
আরও পড়ুনসিরাজগঞ্জে যমুনা সেতুর সংযোগ সড়কে মাইক্রোবাসে ডাকাতি, মুঠোফোন ও টাকা লুট৬ ঘণ্টা আগেএজাহারে আরও বলা হয়েছে, মামলার বাদী ওবায়দুল্লাহর একটি স্মার্ট ফোন, ফারুক মোহাম্মদ ইসমাইল আলমের ২৪ হাজার টাকা, গোলাম মোস্তফার দুইটি স্মার্টফোন ও ১৮ হাজার টাকা, আবদুল আজিজের একটি মুঠোফোন ও ৭ হাজার টাকা, শওকত আলীর একটি মুঠোফোন ও ৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং চালক আশেক আল রহমানের ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় পালিয়ে যায় ডাকাতেরা।
যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনারুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। ডাকাতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ ৮ জনের একজন মারা গেছেন
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে ঘরে জমা গ্যাসের আগুনে দগ্ধ দুই পরিবারের আটজনের মধ্যে রিকশাচালক মো. হান্নান (৪০) মারা গেছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান ওই হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
নিহত হান্নানের শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানান এ চিকিৎসক। গত সোমবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিম ধনকুন্ডা এলাকায় ইব্রাহিম খলিলের টিনশেড বাসার দুটি কক্ষে জমা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের পর আগুনে দুই পরিবারের নারী ও শিশুসহ আটজন দগ্ধ হন।
নিহত হান্নানের স্ত্রী পোশাক শ্রমিক নুরজাহান আক্তার লাকী (৩০), মেয়ে জান্নাত (৩), মেয়ে সামিয়া (৯), ছেলে সাব্বির (১৬), আরেক পরিবারের পোশাক শ্রমিক সোহাগ (২৩), তার স্ত্রী পোশাক শ্রমিক রুপালি (২০) ও তাদের একমাত্র দেড় বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়া এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হান্নানের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানা এলাকায়। তিনি পরিবারসহ সিদ্ধিরগঞ্জের ওই ভাড়া বাসায় থাকতেন বলে জানান তার আত্মীয় (স্ত্রীর ভাই) আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, হান্নানের দুই মেয়ে সামিয়া ও জান্নাত কিছুটা আশঙ্কামুক্ত জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু লাকি আর সাব্বিরের কন্ডিশন ভালো না। এক আগুনে পুরা পরিবারটা এখন শঙ্কার মুখে।
গত সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, দুই কক্ষের সেমিপাকা টিনসেড ঘরের নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন গেছে। সেখান থেকে কোনোভাবে গ্যাস লিকেজ হয় এবং এর থেকে ঘরের ভেতর গ্যাস চেম্বারের সৃষ্টি হয়। যে কোনোভাবে আগুনের স্পার্কের সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে এবং অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়।