আদালত প্রাঙ্গণে পলক বললেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ
Published: 10th, March 2025 GMT
দুদকের মামলায় আদালতে হাজিরা শেষে প্রিজন ভ্যানে নেওয়ার সময় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘অগ্নিঝরা মার্চে ধর্ষণের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ। জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো। জেগে ওঠো আবারও।’
আজ সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের করা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় হাজিরা দিতে এসে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন কারাগারে থেকে রোজা রাখতে কষ্ট হচ্ছে কিনা? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না। রোজা রাখতে কষ্ট হচ্ছে না। রিমান্ডেই রোজা শুরু হলো এবার।’
এ দিন দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে আদালতে আনা হয়। এ সময় পলক বলেন, ‘কথা বললেই মামলার সংখ্যা বাড়ে। পেছনে হ্যান্ডকাফ দিয়ে রাখে। কথা বলে কী লাভ?’
এ দিন দুদকের করা মামলায় পলকের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।
পলকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম বলেন, জুনাইদ আহমেদ পলককে নিয়মিতই বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হচ্ছে। এতে তিনি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন। এছাড়াও তার দুই হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে আনা হচ্ছে। এগুলো সাধারণত দাগী আসামিদের ক্ষেত্রে করা হয়।
পলকের বিরুদ্ধে হওয়া দুদকের মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো.
মামলায় বলা হয়, অভিযুক্ত জুনাইদ আহমেদ পলক অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৮ কোটি ৭৩ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে তা ভোগদখলে রেখেছেন। একইসঙ্গে নিজ নামে ২৫টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা এবং ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ সংঘটন করেছেন।
মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জুনায়েদ আহমেদ পলককে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দফায় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে আইনজীবীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি’
বিচার ব্যবস্থা সংস্কারে আইনজীবীদের কার্যকর অংশগ্রহণ ছাড়া ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। তারা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রসঙ্গে কমিশনের ৩৭টি সুপারিশের মধ্যে ১৪টি সুপারিশ অল্প সময়ের মধ্যে প্রশাসনিক উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। অনলাইনে মেনশন স্লিপ গ্রহণ এবং রায় প্রদানের বিষয়টি কার্যকর হলে বিচারিক কার্যক্রমে গতি আসবে।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘বিচার ব্যবস্থা সংস্কার ও জরুরি করণীয়: প্রসঙ্গ সুপ্রিম কোর্ট’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এ সভার আয়োজন করে। সভায় দুর্নীতিমুক্ত কোর্ট ব্যবস্থাপনা, প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো গঠন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার প্রসার, আদালতের বেঞ্চ পুনর্গঠন নীতিমালা প্রণয়ন এবং দ্রুত রায়-আদেশ পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর বক্তারা জোর দেন।
ব্লাস্টের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আলোচক ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম জামিউল হক ফয়সাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোশাররফ হোসেন, ড. কাজী জাহেদ ইকবাল, এস হাসানুল বান্না, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য ব্যারিস্টার তানিম হোসাইন শাওন, ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম প্রমুখ।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বার কাউন্সিলের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতার অভাব রয়েছে। অতীতের মতো শুনানির দিনেই আদেশ প্রস্তুত করার নিয়ম পুনরায় চালু হওয়া উচিত।
এম জামিউল হক ফয়সাল বলেন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে হবে। ই-জুডিশিয়ারি ও ভার্চুয়াল কোর্টের বিস্তারে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।
ড. কাজী জাহেদ ইকবাল বলেন, হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত না থাকলে কোনো আইনজীবী সনদ পাঠিয়ে জেলমুক্তি আটকে দিতে পারবেন না। এটি আইনসম্মত নয়। ব্যারিস্টার তানিম হোসাইন শাওন বলেন, অনেক সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব এবং তার জন্য সংবিধান বা আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। প্রশাসনিক উদ্যোগে এগুলো বাস্তবায়ন করা জরুরি। ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, আদালতের স্থগিতাদেশ ছাড়া হাইকোর্টের বিচারাধীন মামলা স্থগিত রাখা উচিত নয়। এজন্য অনুশীলন নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন।