ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি কারাগারে প্রায় ১৮ মাস ধরে বন্দী থাকার পর এক বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা জানান, অসুস্থ হয়ে ৭ মার্চ রাতে দমদম জেলখানায় তাঁর মৃত্যু হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মরদেহ দেশে আনার দাবি করেছেন তাঁরা।

ওই ব্যক্তির নাম আশরাফ হোসেন (৪৮)। তিনি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের বাসিন্দা।

আশরাফের স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় তাঁর স্বামীকে (আশরাফ) আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। পরে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগনা জেলার স্বদেশ খালি থানায় সোপর্দ করা হয়। ভারতের আদালত তাঁকে ৩৯ মাসের কারাদণ্ড দেন। পরে তাঁকে দমদম জেলখানায় রাখা হয়। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

নাছিমা বেগম আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে তাঁর পরিচিত একজন মুঠোফোনে স্বামীর মৃত্যুর খবর জানান। পরে সেখানে তাঁদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। স্বজনদের মাধ্যমে লাশ দেশে আনার জন্য কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনে আবেদন করেছেন।  

আশরাফ হোসেনের ভাই ইসমাইল গাজী বলেন, ‘আমার ভাই পেটের দায়ে ভারতে যাওয়ার সময় বিএসএফের কাছে ধরা পড়ে। আমরা তার লাশটা দেখতে চাই। সরকার আশরাফের লাশটা আমাদের দেখার সুযোগ করে দেখ (দিক)। এইটা আমাগো দাবি।’  
শ্যামনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রানী খাতুন বলেন, আশরাফ হোসেনের মৃত্যুর খবর শুনেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর পরিবারকে কিছু খাদ্য ও অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সহযোগিতা করা হবে। তাঁর মরদেহ কীভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, সেই প্রক্রিয়া চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আশর ফ

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত, পতাকা বৈঠক

পঞ্চগড়ের ভিতরগড় সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে মো. আল আমিন (৩৬) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। লাশটি ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় সীমান্তের ৭৪৪ নম্বর মেইন পিলারের ৭ নম্বর সাব–পিলার–সংলগ্ন এলাকার ওপারে ভারতের ভাটপাড়ায় কাঁটাতারের বেড়ার লিংক রোড–সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ওই সীমান্তে বিজিবি–বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে লাশ ফেরত চেয়েছে বিজিবি। নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত মো. আল আমিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের জিন্নাতপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে। তিনি সীমান্তে চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে বিজিবি।

শেখ মো. বদরুদ্দোজা জানান, আল আমিন নামের ওই ব্যক্তি প্রায়ই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করতেন বলে জানা গেছে। তিনি চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত এবং ভারতীয় চোরাকারবারিরা তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। পাঁচ থেকে ছয় দিন আগে আল আমিন ভারতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার পর ১০ থেকে ১৫ চোরাকারবারি ভারত থেকে গরু নিয়ে বাংলাদেশের দিকে আসছিলেন। এ সময় ভারতের ৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ভাটপাড়া বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে আল আমিন ভারতের অভ্যন্তরেই মারা যান। বিষয়টি জানতে পেরে বিজিবি ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পতাকা বৈঠক আহ্বান করে।

বদরুদ্দোজা বলেন, পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দাবি করেছে, গরু নিয়ে চোরাকারবারিরা বাংলাদেশে আসার সময় বিএসএফ বাধা দিলে তাঁরা বিএসএফের ওপর আক্রমণ করেন। এতে তাদের বিএসএফ সদস্যরা আহত হয়েছেন। পরে আত্মরক্ষার্থে তারা গুলি চালালে ওই ব্যক্তি মারা যায় বলে দাবি করেছে বিএসএফ।

লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে বদরুদ্দোজা বলেন, ‘পতাকা বৈঠকে আমরা জানিয়েছি, কেউ অপরাধ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কিন্তু গুলি করে হত্যা কখনোই কাম্য নয়। এ ঘটনায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পরে আমরা লাশ ফেরত চাইলে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে বিজিবি–বিএসএফের উপস্থিতিতে দুই দেশের পুলিশের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরায় ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার স্বর্ণের বার জব্দ 
  • ‘আমার বাপটার লাশটা আইনা দেন, আমি নিজের হাতে গোসল করামু’
  • বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, কড়া প্রতিবাদ বিজিবির 
  • ভারতীয় খাসিয়াদের হামলায় নিহত যুবকের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ
  • ভারতীয় কারাগারে বন্দি বাংলাদেশির মৃত্যু
  • পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক নিহত, পতাকা বৈঠক
  • পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যু
  • পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
  • ভারতীয় খাসিয়াদের হামলায় বাংলাদেশি যুবক নিহত