লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় সালিসে ডেকে ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীকে উল্টো অপবাদ দেওয়ার পর ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছে সে। ৬ মার্চ ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন মামলা করেন তার মা। ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসামি রাকিব হোসেনকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে কুমিল্লার লাকসাম এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার রাকিব হোসেন রামগতি উপজেলার পশ্চিম চর কোলাকোপা এলাকার মো.

খবির হোসেনের ছেলে।

ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনায় ৭ মার্চ ১২ জনের বিরুদ্ধে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে রাকিব হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলার পর হেলাল উদ্দিন নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এ নিয়ে এই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

পুলিশ জানায়, ১ মার্চ ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। পরদিন ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো বিচার পায়নি ওই কিশোরী। উল্টো তাকে অপবাদ দেওয়া হয়। ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরীকে বাড়িতে রেখে তার মা বাড়ির পাশের জমিতে ফসল দেখতে যান। এসে দেখেন, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১ মার্চ রাতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে রাকিব ধর্ষণ করেন। কিশোরীর মা টের পেয়ে ঘরে ঢুকলে রাকিব পালিয়ে যান। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি তিনি রাকিবের মা–বাবাকে জানান। পরে এ নিয়ে অভিযুক্ত রাকিবের পরিবার একটি সালিস বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে ধর্ষণের ঘটনায় কোনো বিচার করা হয়নি। উল্টো কিশোরীকে অপবাদ দেওয়া হয়। এরপর মামলার আরেক আসামি হেলাল উদ্দিন কিশোরীর বাড়িতে ঢুকে তার চুল কেটে গ্রামে ঘোরানোর হুমকি দেন। ওই দিনই কিশোরী আত্মহত্যা করে।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, কিশোরীর আত্মহত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত রাকিব হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর সালিসি বৈঠকের হেলাল উদ্দিন অপবাদ দিয়ে হুমকি দেন। তাঁদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ওই ক শ র অপব দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

নববর্ষের শোভাযাত্রার মোটিফে আগুন নিয়ে রহস্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য বানানো দুটি মোটিফ আগুনে পুড়েছে। কে কোন উদ্দেশ্যে আগুন লাগিয়েছে, এ নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে।

নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ দুটি শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে পুড়ে যায়। এর মধ্যে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে যায় এবং শান্তির পায়রা মোটিফটি আংশিক পুড়ে যায়।

অনেকে বলছেন, অন্য মোটিফগুলো ঠিক থাকলেও ওই দুটি মোটিভ কীভাবে পুড়ল? নিশ্চয়ই কেউ ইচ্ছে করে শুধু ওই দুটি মোটিফে আগুন দিয়েছে। 

এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। 

চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইসরাফিল রতন গণমাধ্যমকে বলেছেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, শনিবার ভোরে জিন্স প্যান্ট ও কালো টি-শার্ট পরা এক যুবক চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। তার মুখে মাস্ক ছিল, চেহারা বোঝা যাচ্ছিল না। তার মধ্যে কোনো ধরনের চাঞ্চলতা বা উদ্বেগ দেখা যায়নি। সে খুব ধীর-স্থিরভাবে প্রতিকৃতিতে আগুন লাগায়। 

শনিবার দুপুরে শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর রাইজিংবিডিকে বলেছেন, “আমরা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছি। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত, তা আমরা খুঁজে বের করব।”

সিদ্দিকবাজার ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা রুহুল আমিন মোল্লা বলেছেন, শোভাযাত্রার জন্য অনেক মোটিভ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু, টি নির্দিষ্ট মোটিফে আগুন লাগে, যা নিঃসন্দেহে রহস্যজনক। এ বিষয়ে তদন্ত করছি।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শোভাযাত্রার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বিভিন্ন ধরনের ও আকৃতির মোটিফ তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে অনেক রাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কাজ করেছেন। আগুন লাগলে তখনো তো লাগতে পারত। অথচ, খুব ভোরে মানুষজন যখন ঘুমিয়ে ছিল, তখনই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ঘটনাস্থল এবং আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।

শনিবার ভোর ৫টা ৪ মিনিটে চারুকলা অনুষদে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ