ওসমানী মেডিকেলের বহির্বিভাগে তালা দিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিক্ষোভ
Published: 10th, March 2025 GMT
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে বা বহির্বিভাগে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ সময় মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে এই অবস্থা। দাবি মানা না হলে মঙ্গলবার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিরও ঘোষণা দেওয়া হয়। ডিগ্রি ছাড়া ডাক্তার পদবি ব্যবহার বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বলেন, ডাক্তার পদবি শুধুমাত্র এমবিবিএস এবং বিডিএস ডিগ্রিধারীদের জন্য সীমিত রাখতে হবে। দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী এমবিবিএস অথবা বিডিএস ছাড়া কেউ চিকিৎসক পরিচয় দিতে পারবে না। দ্রুত ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ এবং বিসিএসের চাকরিতে প্রবেশ বয়সসীমা ৩৪ বছর পর্যন্ত বাড়ানো, মানহীন বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ, বিএমডিসি চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের রায় বিলম্ব না করার দাবি জানানো হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বলেন, সকাল সাড়ে ১১টা থেকে থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের আউটডোরে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করা হয়েছে। এ সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগী ও তাদের স্বজনকে।
এ ব্যাপারে সিওমেকহা ইন্টার্ন চিকিৎসক সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক ডা.
এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভে অংশ নেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মিড লেভেলের চিকিৎসকরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরার সেই শিশুর বুকে বসানো হলো টিউব
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুর জ্ঞান চার দিনেও ফেরেনি। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) কর্তৃপক্ষ। সিএমএইচের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বুকে প্রচণ্ড চাপ দেওয়ায় শিশুটির ফুসফুসের বিভিন্ন জায়গায় বাতাস জমে গেছে। রোববার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অতিরিক্ত বাতাস বের করে বুকে টিউব বসানো হয়েছে। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে তার মস্তিষ্কেও ক্ষতি হয়েছে।
শিশুটির মা ফোনে সমকালকে জানান, হাসপাতালে মেয়ের শয্যাপাশে আছেন তিনি। কোনো নড়াচড়া নেই। সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।
রোববার সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিশুটিকে দেখতে সিএমএইচে যান। খোঁজখবর নিয়ে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন তিনি। দোষীরা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন উপদেষ্টা।
মাগুরা আদালতের সামনে অবস্থান, ফাঁসি দাবি
ধর্ষণে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে রোববার মাগুরা আদালত চত্বরের সামনে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ করেন। ফলে নিরাপত্তা শঙ্কায় আসামিদের আদালতে হাজির এবং রিমান্ড আবেদন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব হোসেন।
ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, বোনের স্বামী, ভাশুর ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে জেলা আদালত চত্বরের সামনে অবস্থান নেন মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা মাগুরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মূল ফটকে অবস্থান নেন। তারা আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে মূল ফটকে তারা বিক্ষোভ করেন। যৌথ বাহিনীর আশ্বাসে বেলা ৩টার দিকে সেখান থেকে সরে ভায়নার মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এখানে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে কর্মসূচি।
আন্দোলনকারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নৃশংস এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান। এর ব্যত্যয় হলে আইন উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
শিশুটির ছবি-ভিডিও অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশ
হাইকোর্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম, অনলাইন পোর্টালসহ যেসব জায়গায় শিশুটির ছবি ও ভিডিও ছড়িয়েছে, তা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। যেসব মাধ্যমে শিশুটির ছবি প্রকাশ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও তিন দিনের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বিটিআরসি, পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ১৩ মার্চের মধ্যে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এসব নির্দেশনা দেন। আদেশে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ এবং ১৮০ দিনের মধ্যে মামলার বিচার শেষ করতে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই আদেশে ভুক্তভোগী শিশু ও তাঁর ১৪ বছর বয়সী বড় বোনের স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির পক্ষে জনস্বার্থে রিট এবং শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান। পরে সৈয়দ মাহসিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্ট দুইজন সমাজসেবা কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন। ঢাকায় একজন শিশুটির দেখাশোনা করবেন; অন্যজন মাগুরায় তাঁর বোনকে দেখাশোনা করবেন। কারণ শিশুটির বিবাহিত বোনও শিশু। তার শ্বশুরবাড়ি হচ্ছে ঘটনাস্থল। সেখানে সেও নিরাপদ নয়। তাদের কল্যাণ নিশ্চিতে দুই কর্মকর্তা কাজ করবেন।