পিচের ওপর ট্রফিটি রেখে দাঁড়িয়ে হার্দিক পান্ডিয়া। হাত দিয়ে ট্রফি দেখিয়ে চোখেমুখে তাঁর এমন ভঙ্গি যে এ তো হওয়ারই কথা ছিল!

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত এক ম্যাচও হারেনি। শক্তি এবং কন্ডিশনের সুবিধা বিচারে আসলে ভারতেরই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা। তবে কাল রাতের ফাইনালটি পান্ডিয়ার জন্য ছিল বিশেষ উপলক্ষ। এটা ছিল তাঁর জন্য প্রতিশোধের ফাইনাল।

আরও পড়ুনগাভাস্কারকে মুখ সামলে কথা বলতে বললেন ইনজামাম৪৮ মিনিট আগে

২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিশ্চয়ই মনে আছে? সেবার ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল ভারত। এবার ফাইনালে ৮ বছর আগের সেই হারের ক্ষতমোচন করতে চেয়েছিলেন পান্ডিয়া। নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ক্ষতমোচনের পর সাংবাদিকদের ভারতের এই অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘এখন যেহেতু জিতেছি, তাই বলতে পারি ২০১৭ ফাইনাল হারের প্রতিশোধ নিলাম। কিন্তু আট বছর অনেক লম্বা সময়, অনেক কিছুই ঘটে গেছে। আমার কাছে ভারতের জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সমর্থকেরা খুশি; নিজেদের জায়গা থেকে আমরা এটাই সর্বোচ্চ করতে পারি।’

পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক হলেও প্রতিবেশী দেশটিতে একটি ম্যাচও খেলেনি ভারত। নিজেদের সব ম্যাচ দুবাইয়ে খেলেছে রোহিত শর্মার দল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগেই ভারত জানিয়ে দিয়েছিল, পাকিস্তানে তাঁরা খেলতে যাবে না। এ কারণে টুর্নামেন্টটি হাইব্রিড পদ্ধতিতে আয়োজন করা হয়।

দুবাইয়ে বসবাসরত পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন পান্ডিয়া। তবে ভারত কী কারণে পাকিস্তানে খেলতে যায়নি, সেই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দিতে পারেননি এই তারকা, ‘আমি নিশ্চিত দুবাইয়ে বসবাস করা পাকিস্তানিরা আমাদের পারফরম্যান্স উপভোগ করেছেন। আমরা কেন (পাকিস্তানে) যাইনি, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।’

ফাইনালে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৫১ রান তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। তাড়া করতে নেমে ষষ্ঠ উইকেটে লোকেশ রাহুল–হার্দিক পান্ডিয়ার ৩৬ বলে ৩৮ রানের জুটি জয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ৪৭.

৩ ওভারে পান্ডিয়া যখন ১৮ বলে ১৮ রানে আউট হন, ১৫ বলে ১১ রান দরকার ছিল ভারতের। ৬ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকা রবীন্দ্র জাদেজা চার মেরে দলকে জেতান।

আরও পড়ুন৭৫ বছর বয়সী গাভাস্কারের শিশুর মতো নাচ ও রোহিতের ‘দ্বিতীয় গুরুদক্ষিণা’৩ ঘণ্টা আগে

পান্ডিয়া যখন ক্রিজে আসেন, ৫ উইকেট হাতে রেখে ৫১ বলে ৪৯ রান দরকার ছিল ভারতের। তখন দ্রুত একটি–দুটি উইকেটের পতনে বিপদ হতেই পারত। রাহুল–পান্ডিয়ার জুটি তা হতে দেয়নি এবং তারপর দলকে আরামসেই জেতান জাদেজা, যেটা তাঁর কাজ।

সেই কাজ ভালোভেবে সেরে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কথা বলেছেন জাদেজা। গতকাল আটে নামলেও এ সংস্করণে ছয়ে ও সাতেই বেশি ব্যাট করেন এই স্পিন অলরাউন্ডার। এসব পজিশনে নেমে ম্যাচ জিতিয়ে আসা কিংবা দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেওয়াই আসল দায়িত্ব। জাদেজার ভাষায় সেটা করতে পারলে ‘হিরো’ না পারলে ‘জিরো।’

ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সম্প্রচারকদের জাদেজা বলেছেন, ‘আমার ব্যাটিং পজিশন এমন যে ম্যাচ শেষে হয় নায়ক কিংবা খলনায়ক হব। সৌভাগ্যবশত হার্দিক ও রাহুল শেষ ১০ ওভারে খুব ভালো ব্যাট করে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েছে। মাঝে রান তোলা সহজ নয়। কিন্তু আমাদের ওপর থেকে চাপ শুষে নেওয়ার কৃতিত্বটা তাদের।’

সপ্তম উইকেটে রাহুল–জাদেজার ৯ বলে ১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জেতে ভারত। ৩৩ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন রাহুল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ফ ইন ল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ঘুষসহ গ্রেপ্তার নৌ অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর ৩ বছরের দণ্ড

ঘুষের পাঁচ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার নৌ অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও শিপ সার্ভেয়ার এ কে এম ফখরুল ইসলামকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ রায় দেন।

দণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো দুই মাস কারাভোগ করতে হবে।

দুদক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর সাজার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, এদিন এ কে এম ফখরুল ইসলাম আদালতে হাজির ছিলেন। রায় শেষে জামিন বাতিল করে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

২০১৭ সালের ১৮ জুলাই মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে নিজের কার্যালয়ে বসে একটি জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় ফখরুলকে আটক করে দুদক। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।

মামলায় বলা হয়, বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস নামে একটি প্রতিষ্ঠান ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২২টি জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন অধিদপ্তরে আবেদন করে। কিন্তু জাহাজের আকারভেদে প্রতি নকশা অনুমোদনের জন্য বিভিন্ন সময়ে ৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন প্রকৌশলী একেএম ফখরুল ইসলাম। 

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল এমভি নওফেল লিহান জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন ফখরুল ইসলাম। ওই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বেঙ্গল মেরিন কর্তৃপক্ষ ওই বছর ১৮ জুলাই তাকে দাবিকৃত ঘুষ প্রদানে সম্মত হয়ে বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনকে অবহিত করে। 

বিষয়টি জানার পর দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে বিশেষ টিম সকাল থেকে ওই ভবনের চারদিকে অবস্থান নেয়। এরপর ওইদিন বেলা ২টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের অথরাইজড পারসন এএনএম বদরুল আলমের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার পর ওই টাকাসহ হাতে নাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু হয়।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঘুষসহ গ্রেপ্তার নৌ অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর ৩ বছরের দণ্ড