ধর্মীয় উৎসব অর্থনীতিতে গতি নিয়ে আসে। উৎসবকেন্দ্রিক নির্দিষ্ট কিছু কার্যক্রম থাকে। তাতে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের বেচাকেনা বাড়ে। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব এই হোলি। কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের (সিএআইটি) প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হোলি উপলক্ষে এবার ভারতে ৬০ হাজার কোটি রুপির ব্যবসা হবে।

সারা ভারতে ধুমধাম করে উদ্‌যাপিত হয় রঙের উৎসব হোলি। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনও এই উৎসবে মেতে ওঠেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অর্থনীতিতে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। উৎসব মানেই খাওয়াদাওয়া, কেনাকাটা, উপহার দেওয়া-নেওয়া। এর জেরে বিক্রিও বাড়ে। হোলিতেও তার ব্যতিক্রম হয় না। রং ও আবির থেকে শুরু করে মিষ্টি বা জামাকাপড়ের বিক্রি বেড়ে যায় হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে। খবর লাইভ মিন্ট।

এ বছর ১৪ মার্চ ভারতে হোলি উৎসব। তবে সব জায়গায় এক দিনে এই উৎসব হবে না, কোনো কোনো অঞ্চলে ভিন্ন দিনে উদ্‌যাপিত হবে এই উৎসব। এখন থেকেই সেই উৎসব উপলক্ষে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। এসব মিলিয়েই ব্যবসার পরিমাণ ৬০ হাজার কোটিতে পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছর এই অঙ্ক ছিল ৫০ হাজার কোটি রুপি। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় হোলিতে ব্যবসা বাড়বে প্রায় ২০ শতাংশ, এমনটাই আশা করছে সিএআইটি। এর মধ্যে ভারতের রাজধানী দিল্লিতেই ব্যবসা হতে পারে আট হাজার কোটি রুপির।

গত কয়েক বছরের মতো এবার হোলিতে চীনের জিনিস বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীদের একাংশ। এর জেরে ভারতে তৈরি হারবাল রং, আবির, পিচকারি, বেলুন, পূজার জিনিস বিক্রি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মিষ্টি, শুকনা ফল, ফুল ও উপহারসামগ্রীর বিক্রি গতবারের চেয়েও বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুদিপণ্য, দীর্ঘস্থায়ী ভোগ্যপণ্যের চাহিদাও বাড়বে বলে উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে। হোলিকেন্দ্রিক পোশাকের বিক্রিও চাঙা থাকবে। এসব মিলিয়েই হোলিতে ভারতের অর্থনীতিতে বেশ গতি আসবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

হোলির দিন মানুষ একে অপরের গায়ে রং মাখিয়ে দেন। সে কারণে সেদিন একাধিক জামাকাপড়ের প্রয়োজন হয়। এই বাস্তবতায় ভারতের বাজারে ইতিমধ্যে টি-শার্ট, কুর্তা-পাজামা ও সালোয়ার কামিজের বিক্রি বেড়েছে। একই সঙ্গে হ্যাপি হোলি লেখা টি-শার্টের চাহিদা বাড়ছে।

সিএআইটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এ বছর রং বা আবির কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের মধ্যে হারবাল বা প্রাকৃতিক রং কেনার চাহিদা বেড়েছে। রাসায়নিক রং পরিহার করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ই উৎসব ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ফের নিজের তৈরি বিমানে উড়লেন জুলহাস, যমুনাপাড়ে উৎসবের আমেজ

ফের নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েছেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস মোল্লা (২৮)। রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জে যমুনার পাড়ে নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েন তিনি।

এ সময় বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, গত সোমবার (৩ মার্চ) পরীক্ষামূলক প্রথম ওড়েন তিনি।

জুলহাসের তৈরি বিমানে আকাশে উড়া দেখতে রবিবার সকাল থেকে হাজারো মানুষ যমুনার পাড়ে ভিড় করেন। লোকে লোকারণ্য যমুনাপাড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে লোকমান রহমান ছেলে রোরহানকে নিয়ে এসেছেন জুলহাসের বিমান দেখতে। তিনি বলেন, ‘‘জুলহাসের তৈরি বিমান টিভিতে দেখার পর ছেলে সামনে থেকে দেখার বায়না ধরেছে। ছেলের আবদার পূরণে আজ সকালে যমুনার পাড়ে ছুটে আসি। বিমানটি সামনে থেকে দেখতে পেরে বোরহান খুবই খুশি।’’

মানিকগঞ্জ শহরের উত্তর সেওতা থেকে এসেছেন জুয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে অনেক কঠিন কাজও সম্ভব। সেটাই প্রমাণ করেছেন মানিকগঞ্জের এক তরুণ। তিনি নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমে বিমান তৈরি করেছেন। শুধু তাই নয়, নিজেই সেটি সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছেন।’’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলহাস মোল্লার বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাইটঘর তেওতা গ্রামে। জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লার গ্রামের বাড়ি ছিল জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায়।

নদীভাঙনের কারণে বর্তমানে তারা শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। তিনি জিয়নপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। পরে অর্থাভাবে আর পড়তে পারেননি। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। ছুটিতে বাড়িতে এসে তৈরি করেছেন বিমানটি।

জুলহাস মোল্লা জানান, তিন বছর গবেষণা এবং এক বছর সময় লেগেছে বিমানটি তৈরি করতে। অ্যালুমিনিয়াম ও লোহা দিয়ে বিমানটির অবকাঠামো তৈরি। পানির পাম্পের ‘সেভেন হর্স পাওয়ারের’ ইঞ্জিন ব্যবহার করেছেন।

তিনি বলেন, ‘‘বিমানটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে, সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা যেতে পারে। বিমানটি ৫০ ফুট ওপরে উড়তে পারে।’’

বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘‘জুলহাসের বিমানটি তৈরিতে যে গবেষণা হয়েছে, তা কীভাবে আরো উন্নয়ন ঘটানো যায় সে বিষয়ে সবাই কাজ করব। সেই সঙ্গে তার একাডেমিক রিসোর্স ও কারিগরি যেসব সহযোগিতা প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করব।’’

ঢাকা/চন্দন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফ্যাশন হাউজে বুবলী-দীঘির সিনেমার প্রচারণা
  • ইফতার উৎসবে রাবি শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা
  • খুশির খবর দিয়ে মেহজাবীন লিখলেন, ‘কী সুন্দর একটি সকাল’
  • ফের নিজের তৈরি বিমানে উড়লেন জুলহাস, যমুনাপাড়ে উৎসবের আমেজ
  • মোশাররফ করিমের ‘চক্কর’ মুক্তি পাবে ঈদে, থাকছে এক ডজন নাটকেও
  • স্মার্টফোনে ঈদ উৎসব
  • জাতীয় নারী ফুটবল দলের অয়ন্তের বাড়িতে উৎসবের আমেজ
  • নারীদের ওপর হামলা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সম্পূর্ণ বিপরীত: প্রধান উপদেষ্টা
  • ঝোঁকের মাথায় অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার বদভ্যাস ত্যাগ করবেন যেভাবে