ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে: সভাপতি
Published: 10th, March 2025 GMT
ধর্ষণের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। তিনি বলেন, ‘মাগুরায় আমাদের বোনকে যারা ধর্ষণ করেছে, তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। অতি দ্রুত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
সোমবার হাইকোর্ট গেটের সামনের সড়কে ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন।
মানববন্ধনে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটি থেকে আসা প্রায় হাজারখানেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘দিনের পর দিন নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা গতানুগতিক ধারার বক্তব্য শুনতে পাচ্ছি। সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব আমরা স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করছি।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনরা ধর্ষণের বিচারের দাবিতে রাজ পথে নেমে এসেছে। তারা ক্লাস বর্জন করেছে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকে সর্বাত্মক সমর্থন জানাচ্ছি। আমাদের বোনের ধর্ষকদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথে থাকবে। অতি দ্রুত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
ছাত্রদলের সভাপতি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরের সমাজ ব্যবস্থা যে পরিমাণে ধ্বংস হয়েছে, আমরা সেটির পরিবর্তন চাই। আমরা বিশ্বাস করি, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যদি কোনো সরকার গঠিত হয়, তাহলে সেই সরকার নারী নির্যাতন বন্ধ করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যতদিন রয়েছেন, দয়া করে আজ থেকে আপনারা আরও বেশি সচেষ্ট হন। প্রতিটি ধর্ষণ, নিপীড়নের ঘটনার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে সুনিশ্চিত করেন। এছাড়াও অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে না পারলে আমরা আপনাদের ওপর আঙুল তুলতে বাধ্য হবো।’
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল সরকার। এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ দেশের সব মানুষ সমর্থন দেওয়ার পরেও তারা কিন্তু আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তারা উন্নতি করতে পারেনি। আপনারা দেখেছেন মাগুরাতে আট বছরের শিশুকে কীভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু এ দেশের কিছু মানুষ নারীদের পোশাক নিয়ে বার বার কথা বলে। নারীদের পোশাক যদি সমস্যা হতো তাহলে কীভাবে আমার আট বছরের বোন ধর্ষনের শিকার হয়, ছাত্রদল প্রশ্ন রাখতে চায়। বাংলাদেশের গত ১৫ বছরে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠেছে সেজন্য গত সাত বা আট মাস ধরে নারীর প্রতি যে সহিংসতা যে নির্যাতন সেগুলো কিন্তু ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ধর্ষণের কার্যক্রম বেড়েই চলেছে। ছাত্রদল আহ্বান জানাচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবশ্যই আইন-আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কঠোর করতে হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র জপথ পর স থ ত সরক র ত করত
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারের দাবিতে রাস্তায় চলচ্চিত্র শিল্পীরা
মাগুরায় বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বোনের শ্বশুরের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮ বছরের এক শিশু। এই ঘটনায় বিস্মিত গোটা দেশ। জড়িতদের উপযুক্ত বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন স্থানে চলছে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ। অপরাধীদের শাস্তি চেয়ে সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে এফডিসি’তে মানববন্ধন করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যরা।
শিল্পী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে সকল ধর্ষণ ও নারীদের প্রতি সহিংসতার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছেন শিল্পীরা।
সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমরা সবাই অবগত যে কী হয়েছে? কী ঘটেছে? এবং আমরা সবাই এই ব্যাপারে সোচ্চার যে আমরা কী করতে চাই, কী বলতে চাই। ওই চাওয়া-পাওয়ার মাঝখান থেকে আজ আবেগের বহিঃপ্রকাশ। আমরা কী চাই? আমরা চাই শিশু ধর্ষণসহ সকল ধর্ষণ ও নারীদের প্রতি সহিংসতার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হোক। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক; যাতে অন্যরা এই ধরনের অপরাধ করার আগে একবার না, দশবার ভাবে। একইসঙ্গে, প্রমাণ সংগ্রহ ও তদন্ত প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, যাতে অপরাধীরা কোনোভাবেই রেহাই না পায়।’
শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগের কাছে আহ্বান জানাই, অনুরোধ জানাই শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করুন।’
বিএফডিসি’তে অনুষ্ঠিত ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশে মিশা সওদাগর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রোজিনা, ডিএ তায়েব, শিপন মিত্র, রুমানা ইসলাম মুক্তি, সনি রহমান প্রমুখ।