কোচ ও ক্রিকেটার হিসেবে গম্ভীর ছাড়াও আইসিসি ট্রফি জিতেছে যারা
Published: 10th, March 2025 GMT
খেলোয়াড় হিসেবে আইসিসি ট্রফি জয় করা গৌতম গম্ভীর এবার কোচ হিসেবেও সেই সাফল্যের স্বাদ পেলেন। রোববার দুবাইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা ঘরে তুলেছে ভারত। এই জয়ের মাধ্যমে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছেন গম্ভীর।
ক্রিকেটার হিসেবে ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের জয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন গম্ভীর। এবার কোচ হিসেবে যোগ দিলেন ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ে। যদিও কোচিংয়ের শুরুটা সহজ ছিল না তার জন্য। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাজে পারফরম্যান্স ও অস্ট্রেলিয়ায় বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ হারের পর তার কোচিং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি চাকরি নিয়েও তৈরি হয়েছিল শঙ্কা। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় দিয়ে নিজের অবস্থান সুসংহত করেছেন গম্ভীর।
গম্ভীর ছাড়াও এর আগে ভারতের আরেক কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড় একই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। ২০০২ সালে খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০২৪ সালে কোচ হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতেন তিনি। এই তালিকায় রয়েছেন আরও তিনজন। অস্ট্রেলিয়ার ড্যারেন লেহম্যান খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপ জয় করেন এবং ২০১৫ সালে কোচ হিসেবে একদিনের বিশ্বকাপ জেতেন। একই দেশের জিওফ মার্শ ১৯৮৭ সালে খেলোয়াড় এবং ১৯৯৯ সালে কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয় করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার গ্যারি কারস্টেন খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৯৮ সালে (আইসিসি নকআউট) ও কোচ হিসেবে ২০১১ সালে ভারতের সঙ্গে বিশ্বকাপ জয় করেন। এই গৌরবময় তালিকায় এবার যুক্ত হলো গৌতম গম্ভীরের নামও।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গম ভ র
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজার উপদেষ্টা কমিটি বাতিল
দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ২০১১ সালে গঠিত ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি বাতিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এ উপদেষ্ট কমিটি প্রায় ৫ বছর ধরে নিষ্ক্রিয়। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এ কমিটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারায় তা রহিত করার সিদ্ধন্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ উপদেষ্টা কমিটি বিএসইসির ওয়েবসাইট থেকেও সিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন পুনর্গঠিত বিএসইসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০১১ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের নির্দেশে এ উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে অর্ধমন্ত্রীকে পরামর্শ দিতে এ কমিটি গঠিত হয়। সে সময় উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব ছিলেন তৎকালীন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন।
২০১০ সালের শেষদিকে পঁজিবাজারে ধসের পরিপ্রেক্ষিতে খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিএসইসিকে নতুন করে ঢেলে সাজায় সরকার। সে সময়ে ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট বিএসইসিতে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন। টানা ৯ বছর বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০২০ সালের ১৪ মে তার মেয়াদ শেষ হয়।
এরপর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিএসইসির হাল ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। সে সময় পদাধিকাবলে ওই উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব ছিলেন তিনি। শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ২০২০ সালের ১৭ মে বিএসইসিতে যোগ দেন। পাঁচ বছর বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট তিনি পদত্যাগ করেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বাধ্য হলে পদত্যাগ করেন। শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের মেয়াদকালে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় এ উপদেষ্ট কমিটির তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকা দেখা যায়নি।
বিএসইসির সিদ্ধান্ত
২০১১ সালের ২৮ মার্চ একটি নির্দেশনা জারি করে ১৭ সদস্যের বিএসইসি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। তবে, এ উপদেষ্টা কমিটির কার্যক্রমের কোনো রেকর্ড না থাকায় উক্ত কমিটি রহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি, বিএসিইসির ওয়েবসাইট থেকে কমিটি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
উপদেষ্টা কমিটি গঠনে বিএসইসির আগের নির্দেশনা
২০১১ সালের ২৮ মার্চ বিএসইসির তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ফরহাদ আহমেদ স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নং XVII) এর ধারা ২৭ এর বিধানের অধীনে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হলো।
উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরা হলেন—সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান (পূর্বর নাম), সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সকল সদস্য (বর্তমান পদ কমিশনার), অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক জন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক জন ডেপুটি গভর্নর, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) সভাপতি, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি, ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সভাপতি, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিসএসই) সভাপতি, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ থেকে ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের সভাপতি, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার এবং ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন।
উপদেষ্টা কমিটির কার্যক্রমের শর্ত হিসেবে উল্লেখ রয়েছে—দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য উপযুক্ত নীতির বিকল্প প্রস্তাব করা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নীতি ও কর্মসূচি সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া, বিএসইসি দ্বারা উল্লেখ করা যেতে পারে এমন অন্য কোনো বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া, উপদেষ্ট কমিটির যেকোনো সভায় বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো, উপদেষ্টা কমিটি কমিশন কর্তৃক প্রয়োজনীয় বিবেচিত যেকোনো সময় সভা করতে পারবে এবং উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এসইসির চেয়ারম্যান।
পুঁজিবাজার উন্নয়ন কমিটি গঠন
এদিকে, চলতি বছরের ১৭ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বিএসইসিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে মনিটরিং বাড়ানো, বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বাজারকে স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আলোচ্য কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এর সদস্য সচিব থাকবেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ফারজানা লালারুখ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকুল ইসলামকে কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ইন্স্যুরেন্স ও ক্যাপিটাল মার্কেট ডিপার্টমেন্টের এক জন অতিরিক্ত সচিবকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ কমিটি বিএসইসিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে মনিটরিং বাড়ানো, বিনিয়োগ আকর্ষণ ও বাজারকে স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে সুপারিশ করবে। এছাড়াও এ কমিটি পুঁজিবাজারে তারল্য তথা অর্থের প্রবাহ বাড়ানো, করপোরেট গভর্ন্যান্সের মান উন্নয়ন এবং নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তির জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়েও সুপারিশ করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম বলেন, “পূর্বের উপদেষ্টা কমিটি বাতিল করা হয়েছে। প্রয়োজন সাপেক্ষে বিএসইসি তা নতুন করে করবে।”
ঢাকা/এনটি/রফিক