শিক্ষার্থীরা দাঁড়ানোর পর সরকারের টনক নড়ল
Published: 10th, March 2025 GMT
নারীর প্রতি সহিংসতা-নির্যাতন বরাবরই চলে আসছে বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কেউ কেউ বলছেন বিচ্ছিন্ন ঘটনা, কেউ বলছেন আগে থেকেই এসব বিষয় চলে আসছে। একটা অপরাধ আগে থেকে চলে আসছে বলে তা পাশ কাটিয়ে যাব, এটা কোন ধরনের মানসিকতা?
বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কারণ, নারীরা এর শিকার বলে? কিন্তু এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ কথা নারী আন্দোলনের কর্মীরা বলে আসছেন, গণমাধ্যমও একই কথা বলে আসছে। তবু কেন জানি এটা হালে পানি পায় না।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা, তারা মানুষের পক্ষে অবস্থান নেবে। সরকার অবশ্য নড়েচড়ে বসছে। কিন্তু উচ্চপর্যায় থেকে কঠোর বার্তা দেওয়ার কথা বলা হলেও প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাঠপর্যায়ে সেভাবে তৎপরতা দেখা যায় না।
মাগুরায় শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনাতেও পুলিশ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের আশায় থাকে। এটা হতভম্ব হওয়ার মতো ঘটনা। পরিবার কি সেই অবস্থার মধ্যে থাকে? রাষ্ট্রই তো ব্যবস্থা নেবে। জনগণের করের টাকায় এই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চলে। নারীর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়নের সব ঘটনা গণমাধ্যমে বা প্রকাশ্যে আসে না। আড়ালে থেকে যায়।
অজুহাত তিন রকমের আসছে—বিচ্ছিন্ন ঘটনা, আগে থেকেই ঘটছে এবং আমরা করছি। আরও একটা গুরুতর অজুহাত আছে—ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর দোসররা করছে, টাকা ঢালছে। এসব বললে হবে না। জনগণ তো সরকারের কাছে প্রত্যাশা করে। সরকারকে তার দায়িত্ব কঠোরভাবে পালন করতে হবে। দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই রাষ্ট্রের। তা ভুক্তভোগী নারী, শিশু বা পুরুষ হোক। নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকার অবস্থান না নিলে মানুষ অবস্থান নিতে শুরু করবে। শনিবার মধ্যরাতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, নতুন প্রজন্ম তা দেখিয়েছে। তারা দাঁড়ানোর পর সরকারের টনক নড়ল, এটা ঠিক নয়। যেকোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় আমরা প্রত্যাশা করি, জনগণকে সুরক্ষা দিতে সরকার দাঁড়াবে।
তবে সমাজে-রাজনীতিতে একটা ইতিবাচক চিত্রও দেখা যাচ্ছে। নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিলে, কথা বললে, বক্তব্য দিলে সে ব্যাপারে কোনো রাজনৈতিক দল আপত্তি করেনি।
নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ার সদিচ্ছা সরকারের আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সেই সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ যথাসময়ে যথাস্থানে দেখাতে হবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সহিংসতার বিরুদ্ধে গণমাধ্যম, নারী অধিকারকর্মী—সবাই মিলে চিৎকার করছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই নতুন প্রজন্ম বা শিক্ষার্থীরা টনক নড়িয়েছে, তাদের ধন্যবাদ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুলি ছুড়ে পালাচ্ছিল পুলিশ পরিচয়ে হানা দেওয়া ডাকাত দল, অস্ত্রসহ একজন গ্রেপ্তার
পুলিশ পরিচয়ে একটি রাবারবাগানের গুদামে হানা দেয় সশস্ত্র ডাকাত দল। তবে পোশাক ও অস্ত্র দেখে সন্দেহ হওয়ায় গুদামের কর্মচারীরা স্থানীয় লোকজনকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। এরপর স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালাতে থাকেন ডাকাত দলের সদস্যরা। তবে ধাওয়া দিয়ে একটি দেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক ডাকাতকে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
গতকাল রোববার রাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম আব্দুল করিম (৪০)। তাঁর বাড়ি রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের করলিয়ামুরা গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, রাতে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন একটি রাবারবাগানের গুদামে ঘটনাটি ঘটেছে। ছয় থেকে আটজনের সশস্ত্র ডাকাত দলটি রাবার লুট করার উদ্দেশ্যে গুদামটিতে যায়। এরপর কর্মচারীদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাতেরা রাবারবাগানের গুদামটিতে ঢুকে পড়েন।
বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতদের গুলিতে মো. আলী (৫৫) ও মকবুল হোসেন (৪১) নামের স্থানীয় দুই বাসিন্দাও আহত হয়েছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসরুরুল হক বলেন, ডাকাতির ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় গ্রেপ্তার আব্দুল করিমসহ আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আব্দুল করিমকে গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।