মুক্তিপণের ২৫ লাখ দিয়েও ছেলেকে ফেরত পাননি বাবা, মিলন কোথায় ?
Published: 10th, March 2025 GMT
ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক যুবককে অপহরণ করেছে একটি চক্র। ২৩ বছর বয়সী মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র।
মিলনের পরিবার জানিয়েছে, মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে ফিরে পাননি তারা।
রবিবার (৯ মার্চ) রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেন মিলনের বাবা পানজাব আলী। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও এর চাপাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
মিলনের পরিবার জানায়, অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজ পড়ুয়া মিলনকে অপহরণ করে একটি চক্র। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮ টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পিছনে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মিলন। এইদিন রাত ১ টার সময় মুঠো ফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় তারা। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। পরে চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। পরদিন আরও বেড়ে ১০ লাখ হয়। তিনদিন পরে ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সবশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র।
মিলনের পরিবারের দাবি, অপহরণকারীরা যখন যত টাকাই চেয়েছে তা দিতে রাজি ছিলেন তারা। তবে বিভিন্ন সময় টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে ঘটনাটি দীর্ঘ করেছে অপহরণকারীরা। সবশেষ ৯ মার্চ রাতে অপহরণকারীরা তাদের ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী ১০ টার ট্রেন উঠতে বলে। এরপর জেলার পীরগঞ্জের সেনুয়া নামক স্থানে চলন্ত ট্রেন থেকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগটি বাইরে ফেলে দিতে বলে। মিলনের জন্যে দুই সেট গায়ের পোশাকসহ ২৫ লাখ টাকা ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ১০ মিনিট পরে টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহরণকারী চক্র। এরপর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপহৃত মিলনকে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেয় অপহরণকারী চক্রটি। স্টেশনে গিয়ে সম্পূর্ণ স্টেশন তন্নতন্ন করে খোঁজাখুঁজি করা হয়। সেই রাতের ১১ টা থেকে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও ছেলে মিলনের দেখা পায়নি পরিবার।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান বলেন, “অপহরণের ঘটনাটি ঘটার পরদিন মৌখিকভাবে পুলিশকে জানায় মিলনের পরিবার। তখন থেকেই চক্রটিকে ধরার জন্যে কাজ করছিলো পুলিশ। তবে তদন্ত কাজে মিলনের পরিবারের কাছ থেকে তেমন সহযোগিতা পায়নি পুলিশ। সবশেষ ৫ মার্চ ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করে মিলনের বাবা পানজাব আলী। এর পর থেকে পুলিশের সাথে পানজাব আলী আর কোনো প্রকার যোগাযোগ রাখেনি। সেইসাথে অপহরণকারীদের সাথে ২৫ লাখ টাকা লেনদেনের বিষয়টি তারা পুলিশের কাছে গোপন রেখেছে।
ঢাকা/হিমেল/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণক র র ২৫ ল খ ট ক ঠ ক রগ
এছাড়াও পড়ুন:
‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে গার্মেন্টস কর্মকর্তাকে অপহরণ, গ্রেপ্তার ৪
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে পোশাক কারখানার এক কর্মকর্তা ও তার চালককে বাসা থেকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নগরের আকবরশাহ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে অপহরণের পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন– নগরের ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের নাজমুল আবেদিন, একই ওয়ার্ডের সিটি গেইট এলাকার নইমুল আমিন ইমন, আকবরশাহ থানার সিডিএ আবাসিক এলাকার আরাফাত হোসেন ফাহিম ও রিসতি বিন ইউসুফ। তাদের মধ্যে নাজমুল আবেদীন নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেন। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন, এই নামে তাদের কোনো সদস্য নেই।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাজমুলের নেতৃত্বে নগরের আকবরশাহ থানার সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসা থেকে প্যাসিফিক জিন্সের এজিএম আবেদিন আল মামুনকে অপহরণ করা হয়। তার গাড়িচালক জুয়েলকেও জিম্মি করে তারা। পরে গাড়িতে নগরের পতেঙ্গা সাগরপাড়, কর্নেলহাট জোন্স রোড, পাহাড়তলী ও আকবরশাহ থানার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকে দলটি। এর মধ্যে মামুনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার লিলির সঙ্গে যোগাযোগ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। লিলি তাদেরকে পাঁচ লাখ টাকা নগদ পরিশোধ করেন। বাকি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক লিখে দেন। পরে রাত আড়াইটার দিকে নগরের জাকির হোসেন সড়কের অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের সামনে মামুন ও জুয়েলকে রেখে সটকে পড়ে দলটি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এরপর সকাল ৯টা পর্যন্ত একাধিক অভিযানে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ইমনের বাসা থেকে পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) হুসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া বলেন, বারবার স্থান পরিবর্তন করায় দলটিকে তারা প্রথমে ধরতে পারেননি। একপর্যায়ে তারা ওই কর্মকর্তা ও তার চালককে রেখে পালায়। পরে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, কমিটি ঘোষণার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা কেউ আমাদের সদস্য নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে কেউ অপকর্ম করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করেছি।