এবার বিএসইসির সার্ভিলেন্স বিভাগে দুদকের অভিযান
Published: 10th, March 2025 GMT
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আবারো অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে সার্ভিলেন্স ও মনিটরিং বিভাগে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে দুদক সূত্র জানা গেছে।
সোমবার (১০ মার্চ) ঢাকার আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে বিএসইসির কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে এই অভিযান শুরু হয়েছে। দুইজন সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম এই অভিযান পরিচালনা করছেন।
জানা গেছে, দুদকের তদন্ত দল প্রথমে এসেই বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর বিএসইসির সার্ভিলেন্স ও মনিটরিং বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে অভিযান পরিচালনা করছেন।
এর আগে গত ২ মার্চ বিএসইসিতে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। অভিযানকালে পাওয়া অনিয়মগুলো শিগগিরই কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে বলেও জানায় দুদক।
এর আগে অভিযানকালে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ২০১০ সাল পরবর্তী দুই কমিশনের মেয়াদের অনিয়ম ও দুর্নীতির অনেক প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানির প্রসপেক্টাসে থাকা আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যেও ম্যানিপুলেট করা হয়। আর্থিক অবস্থা দুর্বল থাকা কোম্পানিকে সবল দেখানো হয়। তারপর মার্কেটে ছাড়া হয় আইপিও। সেই কোম্পানি অব্যাহত প্রবৃদ্ধিও করেছে। তারপর একপর্যায়ে তাদের শেয়ারদর পড়তে শুরু করে। এতে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে বিভিন্ন সময় এসব কোম্পানির বিষয়ে সতর্ক করে সুপারিশ করা হলেও বিএসইসি তা আমলে নেয়নি।
এছাড়া, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট জালিয়াতি ও বাণিজ্য, অধিক মূল্যে শেয়ার প্রাইস নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ ও অল্প সময়ে শেয়ার বিক্রি, প্রাইসের দ্রুত অবনমনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টিও পরিলক্ষিত হয়েছে বলে দুদক জানায়।
দুদক জানিয়েছে, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় টিম আরো প্রত্যক্ষ করে যে দুর্বল কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে অনুমোদন দেওয়ায় ক্যাপিটাল মার্কেটে প্রবেশের অল্পদিনেই তাদের লো পারফর্মিং কোম্পানি হিসেবে জেড ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, জালিয়াতির মাধ্যমে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের প্রস্তুতকৃত উইন্ডো ড্রেসড ব্যালান্সশিট ও ফ্যাব্রিকেটেড আর্নিং রিপোর্ট ও ইস্যু ম্যানেজারের তৈরীকৃত ওভারভ্যালুড কোম্পানি প্রোফাইলের পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়মের আশ্রয়ে বিএসইসি আইপিওর অনুমোদন দিয়েছে। প্রাপ্ত অনিয়মগুলোর বিষয়ে দুদক টিম প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
ঢাকা/এনটি/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারে তারল্য বাড়বে
পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ডিবিএ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন থেকে একটি সার্কুলার জারি করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ডিবিএর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, “পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে তফসিলি ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ করে আমরা ডিবিএর পক্ষ থেকে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছিলাম। গভর্নর আমাদের সুপারিশ বিবেচনায় নিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে এ বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করায় আমরা তাকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।”
তিনি বলেন, “আমরা আশা করি, এই তহবিলের যথাযথ ব্যবহার ও বিনিয়োগ পুঁজিবাজারের তারল্য প্রবাহ বৃ্দ্ধিতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি দৈনিক শেয়ার লেনদেনে গতি এনে বাজারকে ইতিবাচক ধারায় নিয়ে যাবে। গভর্নর পুঁজিবাজারের প্রতি সর্বদা সুদৃষ্টি রাখবেন এবং এর উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন। এ কাজে সহযোগিতার জন্য আমরা ডিবিএর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (বিএসইসি) সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানাই।”
পুঁজিবাজারের সার্বিক স্বার্থে আগের মতো ভবিষ্যতেও সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি, ডিএসইসহ বাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে একযোগে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ডিবিএর প্রেসিডেন্ট। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
ঢাকা/এনটি/রফিক