টাঙ্গাইলের সেই ‘সমন্বয়ক’ ৪ দিনের রিমান্ডে
Published: 10th, March 2025 GMT
টাঙ্গাইলে দখল, ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক’ মারিয়াম মোকাদ্দাস মিস্টির (২৭) চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১০ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মাহবুব খান তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে সকালে মারিয়াম মোকাদ্দাস মিস্টিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ।
গতকাল রোববার রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা খান বাদী হয়ে মারিয়াম মোকাদ্দাস মিস্টির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই মিস্টিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মারিয়াম মোকাদ্দাস মিস্টি বাসাইল উপজেলার জশিহাটী গ্রামের শাহ আলমাসের স্ত্রী। তবে তিনি টাঙ্গাইল শহরের পশ্চিম আকুরটাকুর পাড়ায় বাস করেন।
এর আগে শনিবার সকালে ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে নিয়ে জোয়াহেরুল ইসলামের বাসার তালা ভেঙে সেখানে প্রবেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি। সেখানে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীনদের জন্য আশ্রম বানানোর ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে ‘সাবেক এমপির বাসা দখল করে পাগলের আশ্রম’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি ডটকম।
বিষয়টি জানাজানি হলে জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। এতে নড়চড়ে বসে প্রশাসন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে বাড়িটি দখলমুক্ত করে। সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান চালায়। মুচলেকা নিয়ে রাতেই মিষ্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, রবিবার রাত ১১টার দিকে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জনকে ময়মনসিংহ ও গাজীপুরে সরকারি আশ্রমে পাঠানো হয়। টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক লুৎফর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানবীর আহমেদ জানিয়েছেন, মামলার পর শহরে অভিযান চালিয়ে মিস্টিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম ৫ আগস্টের পর থেকেই পলাতক। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। তারপর থেকে ওই বাড়িতে আর কোনো লোক দেখা যায়নি।
ঢাকা/কাওছার/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভয় দেখালে আলোচনা নয়, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ইরান
ইরান আজ সোমবার বলেছে, ‘ভয় দেখানো’ হলে দেশটি কোনো ধরনের আলোচনায় অংশ নেবে না।
এর আগে ইরানের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা থেকে ইরাককে কিছু ছাড় দেওয়ার সুযোগ বাতিল করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ছাড়ের আওতায় নিষেধাজ্ঞার পরও ইরাক প্রতিবেশী দেশটি থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারত।
বিশ্লেষকদের মতে, তেহরানকে আরও বেশি চাপ দেওয়ার কৌশলের অংশ হিসেবে ইরাকের জন্য বিশেষ ছাড় বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এর পরই ইরান জানাল, ভয় দেখালে দেশটি পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনায় বসবে না।
জাতিসংঘে ইরানের মিশন গতকাল রোববার ইঙ্গিত দেয়, পারমাণবিক কর্মসূচির সম্ভাব্য সামরিকীকরণ সম্পর্কে মার্কিন উদ্বেগ দূর করতে আলোচনার জন্য উন্মুক্ত থাকতে পারে তেহরান। যদিও কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ হবে না।
এর পরদিন, অর্থাৎ আজ সোমবার ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক এমন আলোচনার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বরাবরই পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সামরিকীকরণ বলে কিছুই নেই।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরঘাচি বলেন, ‘চাপপ্রয়োগ আর ভয় দেখানোর পর আমরা আলোচনা করব না। এটা কখনোই বিবেচনা করা হবে না। যা–ই হোক না কেন।’
এ বছরের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতি পুনর্বহাল করেন। বিশেষ করে তেল শিল্পকে বিপর্যয়ে ফেলার লক্ষ্যে নতুন করে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার জানায়, তেহরানের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞায় ইরাকের ছাড় পাওয়ার বিষয়টি নতুন করে নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইরান যাতে অর্থনৈতিক বা আর্থিকভাবে কোনো ধরনের স্বস্তি না পায়, আমাদের পক্ষ থেকে সেটা নিশ্চিত করা হবে।
ইরাকের গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদার এক–তৃতীয়াংশ জোগান দেয় প্রতিবেশী ইরান। এর ফলে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা তেহরান যথেষ্ট পরিমাণ আয়ের সুযোগ পায়।
২০১৮ সালে ইরাককে এই ছাড় দেওয়া হয়েছিল। একই সময়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে তেহরানের সঙ্গে সই হওয়া পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র গতকাল বলেন, ইরানের জ্বালানি উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে ইরাককে যত দ্রুত সম্ভব বের হয়ে আসতে হবে।
ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির রাশ টানা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) সর্বোচ্চ চাপ দেওয়ার কৌশল বেছে নিয়েছেন।
আরও পড়ুনইরানের ওপর ট্রাম্পের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ আবার ব্যর্থ হবে?২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনপারমাণবিক চুক্তি আলোচনায় ট্রাম্পের কোনো চিঠি পায়নি ইরান০৮ মার্চ ২০২৫