লাউয়ের দরকষাকষি নিয়ে দ্বন্দ্ব, পিতা-পুত্রকে কুপিয়ে জখম
Published: 10th, March 2025 GMT
বরিশালের বানারীপাড়ায় লাউ কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে তুচ্ছ ঘটনায় খোকন শীল (৪৫) ও হীরা শীল (১৭) নামের দুই পিতা-পুত্রকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সদর ইউনিয়নের কাজলাহার বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের প্রথমে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং অবস্থার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো করা হয়।
জানা গেছে, উপজেলার কাজলাহার বাজারের ফুটপাতের বাদাম বিক্রেতা নিতাই মন্ডল তার ক্ষেতের লাউ বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে আসেন। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই বাজারের সার ব্যবসায়ী মো, হাবিব একটি লাউয়ের মূল্য ৩০ টাকা বললে নিতাই ওই দামে বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাবিব নিতাইকে ওই লাউ দিয়ে আঘাত করেন। একপর্যায়ে তার পিঠে হাতের কনুই দিয়েও আঘাত করেন।
বিষয়টি দেখতে পেয়ে বাজারের সেলুন মালিক খোকন শীল প্রতিবাদ করেন। এনিয়ে হাবিব ও খোকন শীলের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর পেয়ে হাবিবের ছেলে রাসেল, রাজিব ও ফাগুন এবং ভায়রা ছেলে মিথুন বাড়ি থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে খোকন ও হীরাকে কুপিয়ে জখম করে।
এ সময় বানারীপাড়া-স্বরূপকাঠি সড়কের পাশের ওই বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় জনতা তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বানারীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাদেরকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
এদিকে খবর পেয়ে থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক প য় জখম বর শ ল অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কমানো নিয়ে দরকষাকষি
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের শেষ তিন মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুই লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সংস্থাটির অতিরিক্ত আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ দুই লক্ষ্যমাত্রার কোনোটিই অর্জন সম্ভব নয়। তাই এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা কমানোর অনুরোধ জানিয়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যানসহ কাস্টমস, আয়কর ও ভ্যাট অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এসব বৈঠকে কর্মকর্তারা জানান, আইএমএফের শর্তের কথা মাথায় রেখে কিছু ক্ষেত্রে করহার বাড়ানো, কর অব্যাহতি তুলে দেওয়াসহ নীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসা হচ্ছে। এতে আশা করা হচ্ছে, রাজস্ব আহরণ বেশ বাড়বে। তবে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে তা সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাস্তবসম্মত নয়। তাই এ লক্ষ্যমাত্রা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার অনুরোধ করেন তারা। এ বিষয়ে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বেশ ইতিবাচক বলেও বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠকের বিষয়ে এনবিআরের কর্মকর্তারা সমকালকে বলেন, গত জুন শেষে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এটি চলতি অর্থবছর শেষে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত করার শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ। এর জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের পরবর্তী তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার বাকি রাজস্ব আদায় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তারা আরও বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাড়তি ৫৭ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এসব বাড়তি রাজস্ব কীভাবে আদায় হবে তা জানতে চেয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি অসম্ভব। তাই লক্ষ্যমাত্রা কমানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও বলেন, দেশের রাজস্ব খাত সংস্কারে উদ্যোগী মনোভাবের কথাও তাদের জানানো হয়েছে। আইএমএফ প্রতিনিধি দল বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে। সামনে আরও বৈঠক হবে। আশা করা হচ্ছে, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনবে আইএমএফ।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে বাংলাদেশ কতটা শর্ত পূরণ করেছে, তা পর্যালোচনায় ঢাকা সফর করছে প্রতিনিধি দলটি। এ দুই কিস্তির জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কর রাজস্বের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার চেয়ে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফ গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি গত রোববার থেকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। মিশনটি আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।