স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী বাজারমূল্যে কোম্পানির ১৫ লাখ শেয়ার কিনেছেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি এই শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। এরপর আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় জানানো হয়েছে, এই ১৫ লাখ শেয়ার কেনা সম্পন্ন হয়েছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই ঘোষণা দেওয়ার পর শেয়ারবাজারে স্কয়ার ফার্মার প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২১৫ টাকা। সেই হিসাবে ১৫ লাখ শেয়ারের বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁর এই শেয়ার কেনার কথা। ঠিক কত দামে এই শেয়ার তিনি কিনেছেন, তা জানা যায়নি।

স্কয়ার ফার্মা দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি। প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরী ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু মিলে কোম্পানিটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে কোম্পানিটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন স্যামসন এইচ চৌধুরীর চার ছেলে-মেয়ে।

সর্বশেষ গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ৬৬০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ১৩৫ কোটি টাকা বা ২৬ শতাংশ। গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে কোম্পানিটির আয় বা ব্যবসায় প্রায় ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় কোম্পানিটি ১ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। ২০২৩ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ২২৩ কোটি টাকার।

অতীতেও দেখা গেছে, যখনই বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমে যায়, তখনই বাজার থেকে কোম্পানিটির শেয়ার কেনার উদ্যোগ নেন পরিচালকেরা। এবারও একই উদ্দেশ্যে এক পরিচালক শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন বলে কোম্পানি সূত্রে জানা যায়।

আগের প্রান্তিকে ভালো মুনাফা করলেও স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের দাম তেমন একটা বাড়ছে না। এমনকি আজ এই শেয়ার কেনার ঘোষণা আসার পরও শেয়ারের দাম বাড়েনি। গত এক মাসে এই কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম ছিল ২১৪ টাকা এবং সর্বোচ্চ দাম ছিল ২১৭ টাকা। এ অবস্থায় কোম্পানিটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার কিনলেন পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১৫ ল খ শ য় র এই শ য় র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির ‘নামধারী সন্ত্রাসীদের’ হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় বিএনপি নেতা

রাজশাহীর রাজপাড়া থানা বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও মহানগর যুবদলের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন ও তাঁর পরিবার বিএনপির নামধারী সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নগরের লক্ষ্মীপুর বাকির মোড় এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে রুহুল আমিন এ অভিযোগ করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে রুহুল আমিন বলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিএনপির আদর্শ ছাড়া অন্য কোনো আদর্শে কখনোই জড়িত ছিলেন না। এ কারণে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ৯টির বেশি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ১০ বারের বেশি কারাবরণ করেছেন। এখনো নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। দল করতে গিয়ে পারিবারিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হলেও দমে যাননি।

তিনি বলেন, এত কিছুর পরও দলের বিপথগামী কিছু সদস্য, আওয়ামী লীগের এজেন্ট ও পতিত সরকারের সুবিধাভোগী অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি রাতে তাঁর বাসভবনে হামলার শিকার হয়েছেন।

রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, হামলায় নেতৃত্ব দেন রাজপাড়া বিএনপির বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ তৎকালীন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন আহমেদ ও তাঁর ভাই তুহিন, কাশিয়াডাঙ্গা থানা বিএনপির সদস্য মুরাদ পারভেজ, আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী ক্যাডার খিচ্চু, নাইম, সবুজ ও হৃদয়সহ তাঁদের সহযোগীরা। তাঁরা তাঁর বাসভবনে ভাঙচুর করে পরিবারসহ তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন দেন। এলোপাতাড়ি গুলি করে লুটতরাজ করেন। পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনার আলামত হিসেবে গুলির খোসাও উদ্ধার করেছে। কোনোমতে প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় বর্তমানে আতঙ্কিত ও চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছেন।

যুবদলের এই নেতা বলেন, মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি, মহানগরের আওতাধীন রাজপাড়া থানা কমিটিসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের কমিটিগুলোতে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও সুবিধাভোগীদের সরাসরি সদস্য করা হয়েছে। এরপরও বিগত রমজানে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে রাজপাড়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে একই ব্যক্তিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অর্থাৎ অভিযুক্ত সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমানকে সভাপতি ও সাবেক সদস্যসচিব আমিনুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে কাউন্সিল ও মতামত ছাড়াই কমিটি ঘোষণা করা হয়, যা প্রহসনের নামান্তর মাত্র বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এত অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের আবার নতুন করে পদায়ন করা আর অপরাধীদের পুরস্কৃত করা একই কথা। এই কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে অপরাধীদের বিভিন্ন কমিটিতে পদায়ন করে পুনর্বাসন করার কারণে স্থানীয়ভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দল থেকে বিমুখ হয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

রুহুল আমিন বলেন, শুধু দুর্নীতি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণেই পরিবারসহ তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছে দলে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীরা। তিনি এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরও দৃশ্যমান কোনো ফলাফল এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। প্রতিনিয়ত বিতর্কিত ব্যক্তি ও বিএনপির কথিত নেতাদের থেকে পরোক্ষভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি পাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর স্ত্রী নাদিরা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘রুহুল আমিন আমার ঘনিষ্ঠ মানুষ। আমি তাঁর হেফাজতকারী। তাঁকে হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে হয়তো আমার বিরুদ্ধে এসব কথা বলেছেন। তাঁর যে ক্ষতি করা হয়েছে, সে ব্যাপারে আমি নিজেই তদন্তের দাবি করেছি।’ আওয়ামী লীগের লোকজনকে কমিটিতে রাখার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এ রকম যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে কেন্দ্র তাঁদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ