বিদ্যুৎ বিভাগকে টাকা পরিশোধের সাত বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গাইবান্ধা শহরের ব্যস্ততম ডিবি রোডের উত্তর পাশের ৪৪টি বিদ্যুতের খুঁটি এখনো সড়ানো হয়নি। খুঁটিগুলো যানবাহন চালক ও পথচারীদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, গত বছর ৪৪টি খুঁটির পাশে নতুন খুঁটি বসানো হয়েছে। সেগুলোতে তার সংযোগ দিয়ে পুরাতন খুঁটি অপসারণ করা হবে।

গাইবান্ধা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা শহরের পূর্ব দিকে বড় মসজিদ থেকে পশ্চিমে পুলিশ সুপার কার্যালয় পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার চার লেন সড়ক নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সড়ক নির্মাণে ৬ কোটি ও জমি অধিগ্রহণের জন্য ১১১ কোটি টাকা। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স এই কাজের দায়িত্ব পায়। ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে চার লেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ছিল। সওজের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ শেষ করার সময় বাড়ানো হয়। কিছু কাজ অসমাপ্ত রেখে ২০২২ সালের প্রথম দিকে চার লেন সড়ক নির্মাণকাজ শেষ হয়।

সড়ক প্রশস্ত হওয়ায় দুই পাশের বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। এ জন্য ২০১৯ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ বিভাগকে ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করে সড়ক বিভাগ। টাকা পরিশোধের ৭ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ৪৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি এখনো সরানো হয়নি। শহরের পশ্চিমে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে পূর্বে রেলগেট পর্যন্ত এসব খুঁটিতে বৈদ্যুৎ–সংযোগ রয়েছে। একই অংশের দক্ষিণ পাশে নকশাবহির্ভূত ৪৯টি খুঁটি স্থাপিত হয়। সেগুলোর কারণেও যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অবশ্য সড়কের বাকি অংশের দুই পাশের খুঁটি সরানো হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শহরের রেলগেট থেকে পশ্চিম অংশে ফায়ার সার্ভিস, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মতো অসংখ্য গুরত্বপুর্ণ অফিস-আদালত রয়েছে। এ জন্য পশ্চিম অংশ সব সময় ব্যস্ত থাকে। এ অংশের খুঁটি সড়াতে বিলম্ব হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। সড়কটিও সংকুচিত হয়েছে। গাইবান্ধা শহরের পলাশপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী জিসান মাহমুদ বলেন, ‘উত্তর পাশের সড়ক থেকে খুঁটি না সড়ানোর কারণে সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। যেখানে খুঁটি আছে, সেখানে কখনো সড়ক দিয়ে, কখনো দোকানপাট ঘেঁষে যানবাহন চলাচল করছে। ফলে সার্বক্ষণিকভাবে আমাদেরকে সর্তক থাকতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’

সড়কের দক্ষিণ পাশেও নকশাবহির্ভূতভাবে মূল সড়ক ঘেঁষে খুঁটি বসানো হয়েছে হলে জানান ফকিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ নুরুল আলম। তিনি বলেন, এসব খুঁটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে পাকা নর্দমা নির্মিত হয়েছে। আগে থেকেই নর্দমার দক্ষিণ পাশ দিয়ে খুঁটি ছিল। অথচ নর্দমার দক্ষিণ পাশে খুঁটি বসানোর কথা। অর্থাৎ খুঁটি ও মূল সড়কের মাঝখানে নর্দমা হওয়ার কথা। এসব খুঁটির কারণে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে ভয় লাগছে। 

বিষয়টি নজরে আনা হলে গাইবান্ধা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২–এর (নেসকো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

আসিফ বলেন, সড়কের দক্ষিণ পাশে অনেক অবকাঠামো রয়েছে। এসব অবকাঠামোর মালিকদের বাঁধার কারণে নর্দমার উত্তর পাশে খুঁটি বসানো রয়েছে। এসব খুঁটিতে বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু রয়েছে।

বিদ্যুতের এসব খুঁটি সরাতে দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালের ট্রাকচালক বাবলু মিয়া বলেন, ‘এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শহরে চার লেনবিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মূল সড়ক ঘেঁষে খুঁটি থাকায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।’

এ বিষয়ে গাইবান্ধা সওজের বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিয়াস কুমার সেন প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক ন র ম ণ চ র ল ন সড়ক এসব খ শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতা আটক

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে মাকসুদ মজুমদার (৩৯) ও মনির হোসেন (৩৭) নামের দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

রবিবার (৯ মার্চ) দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ গ্রামের সরকার বাড়ি থেকে পুলিশ তাদের আটক করে।

আটক মনিরের বাড়ি সুলতানগঞ্জ ও মাকসুদের বাড়ি নীলগঞ্জ গ্রামে। মাকসুদ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং মনির নীলগঞ্জ ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

আরো পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক মাদকসহ আটক

বোনের বাড়িতে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, এবার দুলাভাই আটক

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রাতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ১০-১২ জনের একটি ডাকাতদল সরকার বাড়িতে প্রবেশ করে। ওই বাড়িতে ৭-৮টি ঘর রয়েছে। ডাকাতদল ওই বাড়ির নীল কান্তি সরকারের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় পার্শ্ববর্তী ঘরের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ গিয়ে ওই ঘর থেকে দুজনকে আটক করে। এ সময় পালিয়ে যায় বাকিরা।

সরকার বাড়ির মিঠুন সরকার বলেন, ‘‘১০-১২ জনের ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে আমার ঘরের সামনে গিয়ে দরজায় লাথি মারে। এ সময় জানালা দিয়ে লাইট মেরে তাদের হাতে অস্ত্র দেখতে পাই। পরে তারা আমার ঘরের কাছ থেকে সরে গিয়ে নালিকান্তি সরকারের ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় বাড়ির সবাই একত্রিত হয়ে তাদের ওই ঘরের মধ্যে আটকে ফেলি। এর আগে, প্রতিবেশীরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেয়।’’

কলাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে, মাকসুদ আগে থেকেই পুলিশের সন্দেহেরে তালিকায় ছিল।’’

ঢাকা/ইমরান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ