বিশ্বের ১২৬টি দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ রাজধানী ঢাকার অবস্থান প্রথম। আজ সোমবার সকাল ৯টা ৭ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই-বায়ুর মান সূচক) স্কোর ২৪৭। বায়ুর এই মানকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

একিউআই সূচক তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, স্কোর ২০৯, অর্থাৎ সেখানকার বায়ুও খুব অস্বাস্থ্যকর। তৃতীয় স্থানে পাকিস্তানের লাহোর, স্কোর ২০৭। ১৯৩ স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে ভিয়েতনামের হ্যানয়। পঞ্চমে চীনের বেইজিং, স্কোর ১৮৮। 

প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়। 

একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.

৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে দুই দশমিক পাঁচ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) যদি শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওই বাতাসকে বায়ু মানের সূচকে (একিউআই) ‘ভালো’ বলা যায়। এই মাত্রা ৫১-১০০ হলে বাতাসকে ‘মধ্যম’ মানের ও ১০১-১৫০ হলে ‘বিপদসীমায়’ আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। আর পিপিএম ১৫১-২০০ হলে বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১-৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ ও ৩০১-৫০০ হলে ‘বিপজ্জনক’ বলা হয়।

বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো—ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ুদূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সচিব করার দাবি অবসরে যাওয়া ‘বঞ্চিত’ অতিরিক্ত সচিবদের, জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে দেখা করে সচিব করার দাবি জানিয়েছেন অবসরে যাওয়া ‘বঞ্চিত’ অতিরিক্ত সচিবেরা।

‘বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত সচিব ফোরাম’–এর উদ্যোগে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে বেশ কিছুসংখ্যক অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান। তাঁদের দাবি, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাঁরা বারবার পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ১৬ বছরে জনপ্রশাসন থেকে অবসরে যাওয়া ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত এই পদোন্নতি দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ১১৯ জন সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।

আজ দাবি জানাতে আসা অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিবেরা সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ইতিমধ্যে অবসরে যাওয়া যে ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতিতে দেওয়া হয়েছে, তাতে নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে। এ–সংক্রান্ত কমিটির আহ্বানে কমিটির কাছে মোট ১ হাজার ৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল। তাঁদের মধ্যে অতিরিক্ত সচিব আবেদন করেন ৫১২ জন। তাঁদের মধ্যে ৫১ জনকে অতিরিক্ত সচিব থেকে সচিব করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ৩৮ জন অতিরিক্ত সচিব হওয়ার ক্ষেত্রে কখনো পদোন্নতিবঞ্চিত হননি। এ ছাড়া আবেদন না করেও পদোন্নতি পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে পদোন্নতিতে মেধাক্রমকে আমলে নেওয়া হয়নি।

‘বঞ্চিত’ এই অতিরিক্ত সচিবদের দাবি, তাঁরা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বারবার পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন। এখন আবার পদোন্নতিবঞ্চিত হওয়ায় পরিচয় সংকটে পড়েছেন। তাঁদের ভাষ্য, চাকরিতে সবাই সচিব হিসেবে পদোন্নতি পাবেন না, এটি তাঁরা জানেন। কিন্তু সামাজিক মর্যাদার জন্য তাঁরা সচিব পদে পদোন্নতি চান।

এ বিষয়ে বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত সচিব ফোরামের আহ্বায়ক মো. নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে বলেছেন, আর্থিকসংকটের বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁরা কোনো বকেয়া বা আর্থিক সুবিধা চাচ্ছেন না। তাঁরা কেবল একটি পরিচয় ও মর্যাদা চান। এ জন্য সচিব পদে পদোন্নতি চান। এ বিষয়ে জনপ্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সচিব তাঁদের বলেছেন, বিষয়টি (ইতিমধ্যে দেওয়া ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি) পর্যালোচনা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ