বইয়ের আলোয় বদলে যাচ্ছে ৩৬ ইউপি কার্যালয়
Published: 10th, March 2025 GMT
এক কক্ষের পাকা একটি ঘর। তিন পাশে আলমারি। তাতে সাজানো সারি সারি বই। গল্প, উপন্যাস, দর্শন, ধর্ম আলাদা করে ভাগ করে রাখা হয়েছে বিষয় অনুযায়ী। রয়েছে কবিতা, কিশোর সাহিত্য, ইতিহাস, খেলাধুলা, বিজ্ঞান, রাজনীতির বইও। সামনে রাখা লম্বা টেবিলে কয়েকটি কাঠের চেয়ার। সেখানে বসে বইয়ের পাতায় মগ্ন কয়েকজন কিশোর ও বৃদ্ধ। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের গণপাঠাগারে গিয়ে চোখে পড়ল এমন দৃশ্য।
তবে শুধু মান্দারী নয়, লক্ষ্মীপুর জেলার ৫টি উপজেলার ৩৬টি ইউপি কার্যালয়ে গণগ্রন্থাগার স্থাপন করা হয়েছে। বাকি ২২টি ইউপি কার্যালয়ে গ্রন্থাগার স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন। লক্ষ্মীপুর জেলা ও উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন গণগ্রন্থাগারগুলো। এতে যুক্ত হয়েছেন শিক্ষকসহ নানা পেশার মানুষ।
বই পাঠে মগ্ন দুই তরুণ। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দুই বছরেও শেষ হয়নি ৩৭ মিটার সেতুর কাজ
ধর্মপাশা উপজেলা সদরের মধ্যবাজারে অবস্থিত মাত্র ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের শয়তানখালী সেতুর পুনর্নির্মাণ কাজ দুই বছরেরও শেষ হয়নি। নির্মাণকাজে অবহেলা ও ধীরগতির কারণে ঠিকাদারের ওপর অসন্তুষ্ট থাকলেও এখন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময়ে সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রায় ১৫-২০টি গ্রামের মানুষকে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে অর্ধশত বছরের পুরোনো শয়তানখালী সেতুটি দেবে যেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন সেতুটির ওপর দিয়ে পথচারী ও যান চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। দেবে যাওয়া পুরোনো সেতুর পরিবর্তে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ২০২৩ সালে এলজিইডির হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শয়তানখালী সেতু নির্মাণসহ ধর্মপাশা থানার সামনে থেকে বাহুটিয়াকান্দা পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ মিটার সড়ক ও একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ৯ কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার ৪৮০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ কাজ বাস্তবায়নে সুনামগঞ্জের মাহবুব এন্টারপ্রাইজকে ঠিকাদার নিযুক্ত করে ওই বছরের ২৬ মার্চ কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি। একই বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সেতু ও সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। কাজে ধীরগতির অভিযোগ এনে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা বাজারের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু এতেও কোনো হেলদোল নেই ঠিকাদারের। ঠিকাদার আগের মতোই ধীরগতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ধর্মপাশা বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, শয়তানখালী সেতুটি দ্রুত নির্মাণ না হওয়ায় মধ্যবাজারের ব্যবসায়ীরা ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ব্যবসায় মন্দা দেখা দেওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
আরেক ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ বলেন, শয়তানখালী সেতুটির কারণে দীর্ঘ চার বছর ধরে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করা হলে মধ্যবাজারে ব্যবসায় গতি ফিরে আসবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবুল মহসিন মো. মাহবুবের ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। প্রকল্প সাইটে ঠিকাদারের নিযুক্ত ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটি রাজধানীর হাতিরঝিলের সেতুর আদলে তৈরি হচ্ছে। শুরুর দিকে মিস্ত্রি পাওয়া যাচ্ছিল না এবং গত বর্ষায় কাজ করতে না পারায় কাজ পিছিয়েছে। মাস দুয়েকের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন বলেন, অত্যন্ত ধীরগতিতে সেতুটির নির্মাণকাজ চলতে থাকায় প্রকল্প পরিচালক কার্যাদেশ বাতিল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নতুন ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ার কারণে কাজটি আরও পিছিয়ে যেতে পারে– এমন ভাবনা থেকে তা করা হয়নি। তাই ঠিকাদারকে সতর্ক করে দিয়ে আগামী ২৫ জুনের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে কার্যাদেশ বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।