‘পুষ্পা’খ্যাত পরিচালক সুকুমার ২০১৮ সালে দক্ষিণী সিনেমার তারকা অভিনেতা রাম চরণকে নিয়ে ‘রাঙ্গাস্থালাম’ নির্মাণ করেন। সিনেমাটিতে রাম চরণের বিপরীতে অভিনয় করেন সামান্থা রুথ প্রভু। প্রায় ৭ বছর পর এ জুটিকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন সুকুমার। এখানেই শেষ নয়, এতে রাশমিকা মান্দানাও থাকবেন বলে গুঞ্জন উড়ছে!

১২৩ তেলেগুর বরাত দিয়ে পিঙ্কভিলা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সুকুমারের পরবর্তী সিনেমার নাম আপাতত ‘আরসি১৭’ রাখা হয়েছে। সিনেমাটিতে রাম চরণের বিপরীতে অর্থাৎ কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে সামান্থা রুথ প্রভুর অভিনয়ের খবর উড়ছে। তা ছাড়াও শোনা যাচ্ছে, সিনেমাটির আরেকটি চরিত্রে অভিনয় করবেন রাশমিকা মান্দানা। এখন দুজন অভিনেত্রী যদি সিনেমাটিতে অভিনয়ের চূড়ান্ত সম্মতি দেন, তবে তাদের ভক্তরা আরো বেশি উচ্ছ্বসিত হবেন।

একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, “আধুনিক স্টাইলে দ্রুতগতির একটি অ্যাকশন সিনেমা হবে ‘আরসি১৭’। পরিচালক সুকুমার বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা দর্শকদের কথা মাথায় রেখে এটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন। ‘ট্রিপল আর’ সিনেমা মুক্তির পর রাম চরণের খ্যাতি বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি পেয়েছে। তার নতুন এই সিনেমা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক হিট করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা।”

এ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করবেন দেবী প্রসাদ (ডিএসপি)। এর আগেও সুকুমারের সঙ্গে অনেক কাজ করেছেন তিনি। সিনেমাটি প্রযোজনা করছে মিথরি মুভি মেকার্স।

পরিচালক বুচি বাবু নির্মাণ করছেন ‘আরসি১৬’ সিনেমা। বর্তমানে এ সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাম চরণ। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করছেন জাহ্নবী কাপুর। সিনেমাটির শুটিং শেষ হলেই ‘আরসি১৭’ সিনেমার শুটিং শুরু করবেন রাম চরণ।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ম চরণ র করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘সংসার চালানোই মুশকিল, ইফতার কিনবো কিভাবে’

গাইবান্ধা শহরে কুলির কাজ করেন সদর উপজেলার পূর্ব কোমরনই মিয়াপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করেন। কাজকর্ম তেমন না থাকায় অতিরিক্ত আয়ও হয়না। তবুও কষ্ট করে ৭০ থেকে ৮০ টাকার ইফতার কিনতে হয়। তা দিয়েই চলে পরিবারের চারজনের ইফতার। 

শুধু জাহিদুল ইসলাম নন, তার মতো আরও অনেক মানুষের আয় কমে যাওয়ায় এবার তাদের অনেকেই  ইফতার সামগ্রী কিনতে পারছেন না। 

সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া প্রায় প্রত্যেক পেশাজীবির আয় কমেছে। এর মধ্যে দিনমজুর, অটোভ্যান-রিকশা চালক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অন্যতম। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির তুলনায় তাদের আয় বাড়েনি, বরং কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে পবিত্র রমজান মাসের ইফতার সামগ্রী বিক্রির দোকানেও।

গাইবান্ধা ডিবি রোডের রড সিমেন্টের দোকানে কুলির কাজ করেন শফিকুল ইসলাম। সারাদিনে আয় করেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তিনি বলেন, “এই টাকা দিয়ে সংসার চালানোই মুশকিল। ইফতার কিনবো কিভাবে? এবছর এক দিনও ইফতার কিনিনি। ভাত-তরকারি দিয়েই ইফতার করি।” 

ডিবি রোডের কাচারি বাজার এলাকায় সড়কের পাশে ভ্রাম্যমাণ ইফতার বিক্রেতা শুভ মিয়া। তিনি বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর বেচা-বিক্রি অনেক কম। গত বছর সারাদিনে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার ইফতার বিক্রি করেছিলাম। এ বছর ৩ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মানুষের হাতে টাকা নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যও ভালো না।” 

মাঠ বাজার এলাকার আজাদ মিয়া জর্জ কোর্টে চাকরি করেন। বিকেলে ইফতার কিনতে এসেছেন। তিনি বলেন, “আগের মতো আর ইফতার কিনতে পারিনা। এখন বুট, বুন্দিয়াসহ তিন-চারটা আইটেম ৮০ টাকায় কিনেছি। বাসায় মুড়ি আছে, এসব দিয়েই পরিবারের সবাই ইফতার করবো।” 

তিনি বলেন, “চাল, ডাল, তেল, মাছ-মাংসসহ  নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় মানুষের আয় বাড়েনি। সবকিছু কেমন যেন থমকে আছে। যারা ব্যবসা করেন, তারাও ভালো নেই। তাই, ইফতারের পিছনে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়।” 

রমজানে শহরের ডিবি রোড, স্টেশন রোড, পার্ক মোড়, কাচারি বাজার, পুরাতন বাজার মোড়, জেলা পরিষদ মোড়, হাসপাতাল রোড, বাস টার্মিনাল, খন্দকার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় বসেছে অস্থায়ী এসব ইফতার সামগ্রীর দোকান।

ইফতারের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০০ গ্রাম ছোলা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, বেগুনি ৫ টাকা, পিঁয়াজু ৫ টাকা, প্রতি পিস জিলাপি আকার ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা, চিংড়ির বড়া ১০ টাকা, গ্রিল চিকেন সিঙ্গেল ৮৫ টাকা, বুন্দিয়া ১০০ গ্রাম ১৫ টাকা, খাসির কার্টলেট ৩০ টাকা, চিকেন ফ্রাই কোয়ার্টার ১২০ টাকা, হালিম হাফ ৮০ টাকা, চিকেন বিরানি ১৫০ টাকা, খাসির কাচ্চি ১৫০ টাকা, বিফ রোল ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

ভ্রাম্যমান ইফতার বিক্রেতা ডি বি রোডের সিয়াম বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রি কমেছে। গত বছর রোজার শুরু থেকেই ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ইফতার বিক্রি করেছি। এবছর ছয় রোজা পার হলেও একদিনে ৫ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না।” 

সদর উপজেলার মিয়াপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম রড সিমেন্টের দোকানে কুলির কাজ করেন। সারাদিনে আয় করেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তিনি জানান, এই টাকা দিয়ে সংসার চালানোই মুশকিল। ইফতার কিনবো কিভাবে? 

রড সিমেন্টের দোকানে কাজ করেন শহরের মিতালিবাজার এলাকার কবির মিয়ার ইফতার কেনার সামর্থ্য নেই 

শহরের মিতালিবাজার এলাকার ভ্যানচালক কবির মিয়া। বিভিন্ন দোকানে কুলির কাজ করেন। তিনি বলেন, “আগের মতো আয়, রোজগার নাই। এখন সারাদিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কামাই করি। ইফতার কেনার সামর্থ্য নেই। ভাত খেয়েই ইফতার করি।”

শহরের বড় মসজিদ এলাকার ভ্রাম্যমাণ ইফতার বিক্রেতা বাদশা মিয়া গত বছর ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা ইফতার বিক্রি করতেন। এ বছর ৩ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারছেন না তিনি। 

বিক্রেতা বাদশা মিয়া বলেন, “এবছর যে বেচা-বিক্রি হচ্ছে, তাতে করে দোকানের কর্মচারীদের বেতন দিতেই শেষ। আগে কখনো এত কম বিক্রি হয়নি। ব্যবসার অবস্থা একেবারেই খারাপ।”

ঢাকা/মাসুম/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ