দই-চিড়া থেকে আপনি পাবেন শর্করা। সারা দিন রোজা রাখার পর দেহে শক্তি জোগাতে এ শর্করা প্রয়োজন। দই প্রোবায়োটিক, তৈরি হয় দুধ থেকে। কাজেই দই থেকে আপনি পাবেন খানিকটা আমিষসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ইফতারির এই সস্তা পদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
ক্যালরি কম, শক্তি বেশিদই-চিড়া খেলে আপনি শক্তি পাবেন ঝটপট। তবে দারুণ ব্যাপার হলো, এতে ক্যালরির মাত্রা খুব বেশি নয়। আবার চিড়া খেলে যেহেতু সহজে ক্ষুধা পায় না, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও সহজ হয়। রোজা রেখাও যাঁদের ওজন কমে না, তাঁদের জন্যও দই-চিড়া সেরা ইফতারি।
আরও পড়ুনসাহ্রির সময় বেশি পানি খেয়ে ফেললে কী হয়?০৮ মার্চ ২০২৫হজমে উপকারীআমাদের অন্ত্রে কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই বহু ব্যাকটেরিয়া বাস করে। এসব আমাদের পেটের সুস্থতার জন্য আবশ্যক। দই হলো প্রোবায়োটিক, অর্থাৎ এতে আছে উপকারী ব্যাকটেরিয়া। তার মানে দই খেলে আপনার পেট ভালো থাকবে। সহজভাবে বলা যায়, দই আপনার পেট ঠান্ডা রাখবে। দই-চিড়া সহজপাচ্য খাবার তো বটেই, অন্যান্য খাবার হজমে সহায়তা করে, বদহজমেও উপকারী। দুধের তৈরি খাবার বলে দই কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।
যদি খান লাল চিড়ালাল চিড়ায় থাকা আঁশও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। এই আঁশের কারণেই দই-লাল চিড়া খাওয়ার পর চট করে আবার ক্ষুধা লাগে না। আঁশসমৃদ্ধ খাবার রক্তের খারাপ চর্বি কমাতে সাহায্য করে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেলে রক্তের সুগার হুট করে বেড়ে যায় না; খাবার খাওয়ার কিছু সময় পর হুট করে তা কমেও যায় না। অর্থাৎ রক্তের সুগার ধীরে ধীরে বাড়িয়ে একটি স্বাস্থ্যকর মাত্রায় রাখার জন্য এ ধরনের খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এটি যে কেবল ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্যই ভালো, তা কিন্তু নয়; বরং সবার জন্যই স্বাস্থ্যকর। তবে সাদা চিড়ায় কিন্তু খুব বেশি আঁশ নেই। আঁশের উপকারিতা সবচেয়ে বেশি পেতে হলে লাল চিড়া বেছে নিন।
আরও পড়ুনরোজায় ইফতারে কী কী খাবেন০১ মার্চ ২০২৫দেহের ক্ষয়পূরণে সহায়তাসারা দিনের কর্মব্যস্ততায় স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দেহে যে ক্ষয় হয়, তা পূরণ করতে প্রয়োজন আমিষ। প্রথম শ্রেণির আমিষ, অর্থাৎ প্রাণিজ উৎস থেকে পাওয়া আমিষ আমাদের দেহের ক্ষয়পূরণের জন্য খুবই জরুরি। তাই সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারে দই-চিড়া খেলে দইয়ের আমিষ আপনার দেহের ক্ষয়পূরণ করতে সহায়তা করবে। ফলে রাতের অন্যান্য কাজের জন্য নিজেকে পূর্ণ উদ্যমে প্রস্তুত করে তোলাটা সহজ হবে।
আরও যাদই-চিড়ার মতো একটি পুষ্টিকর খাবার খেলে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমবে। এতে আপনি সুস্থ থাকবেন। তবে দই–চিড়ায় চিনি বা গুড় যোগ করবেন না। চিড়া ভেজানোর সময় কেবল সামান্য লবণ যোগ করলেই আপনার আর দই-চিড়া খেতে পানসে লাগবে না। ফলে তাতে চিনি বা গুড় যোগ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভবও করবেন না। এ ছাড়া দই-চিড়ার সঙ্গে কলা বা অন্যান্য ফল যোগ করলে তা থেকে আপনি সেসব ফলের পুষ্টি পাবেন, স্বাদ বাড়বে। দই-চিড়া তৈরি করা খুবই সহজ। চুলা ধরানোর ঝামেলাই নেই। অফিসে ইফতার করতে হলেও অনায়াসে এর ব্যবস্থা করতে পারবেন।
আরও পড়ুনরান্না, কাঁচা না সেদ্ধ কোন ছোলায় পুষ্টিগুণ বেশি০৭ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য গ কর দই চ ড় র জন য আম দ র উপক র ইফত র আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
পরীক্ষায় নকল সরবরাহের শর্তে টাকা আদায়
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা নিয়ে এবারও নকল সরবরাহসহ বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা। শঙ্কায় আছেন অভিভাবকরাও। পরীক্ষায় নকল সরবরাহের শর্তে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মমিন মণ্ডল বলেন, যেসব কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বা আগে অনিয়ম হয়েছে, সেখানে নজরদারি বাড়ানো হবে। কোচিং সেন্টারের শিক্ষকদের পরিদর্শক হিসেবে রাখা যাবে না। নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোচিং শিক্ষকদের পরিদর্শক হিসেবে রাখা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে এবার মোট ৯টি বিদ্যালয়ের এক হাজার ৬৫ জন পরীক্ষা দেবে। বিদ্যালয়গুলো হলো– চূহড় উচ্চ বিদ্যালয়, বেতগাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, বিরাহীমপুর উচ্চ বিদ্যালয়, পাইকান উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, জায়গীর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং শালমারা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। কেন্দ্রের আশপাশে জায়গীরহাট গুগল কোচিং সেন্টার, পারফেক্ট স্টাডি কেয়ার, শাহিন কোচিং সেন্টার, টু-ইন-ওয়ান, ম্যাথ প্লাস কোচিং সেন্টার, শালমারা সংকল্প এবং তারাগঞ্জ শাহিন কোচিং সেন্টারের অবস্থান। অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এসব কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত। গত বছর তাদের অনেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করে টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দিয়েছেন। এ নিয়ে সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড তদন্ত করে। সত্যতা পেয়ে কেন্দ্রসচিব ও প্রতিষ্ঠান প্রধান মাহেদুল ইসলামকে ভর্ৎসনা করা হয়। তাঁকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড না করার জন্য নির্দেশ দেয়।
এবারও পরীক্ষা শুরুর আগেই জায়গীরহাট গুগল ও শাহীন কোচিং সেন্টারসহ কয়েকটি সেন্টারের পরিচালক শিক্ষার্থীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে নিশ্চয়তা দিয়েছেন। এ কাজের জন্য তারা মোটা অঙ্কের টাকাও নিয়েছেন। বিশেষ করে ইংরেজি এবং গণিত পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ১ হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
জায়গীরহাট গুগল কোচিং সেন্টারের পরিচালক মওলা মিয়া বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়। তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন করতে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। একইভাবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাহিন কোচিং সেন্টারের পরিচালক শাহিন মিয়াসহ অন্যরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, পায়রাবন্দ কেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাড়তি নজরদারিতে থাকবে কেন্দ্রটি।’