শান্তি প্রক্রিয়া কার্যকরে প্রস্তুত ইসরায়েল-হামাস
Published: 10th, March 2025 GMT
গাজায় দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। তারা কাতারের দোহায় আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে হামাস দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ইসরায়েলকে চাপ দিয়ে আসছিল। অবশেষে যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ঘটবে বলে আশা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটির। তবে হামলা অব্যাহত থাকায় ফিলিস্তিনিরা আবারও যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে।
রয়টার্স জানায়, হামাসের একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কাতারের কর্মকর্তারাও এই আলোচনায় যুক্ত রয়েছেন। হামাসের মুখপাত্র আবদেল লতিফ আল-কানুয়া এক বিবৃতিতে বলেন, গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে ত্রাণ সরবরাহ জোরদার করা হোক। একটি সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন হওয়ার আগ পর্যন্ত গাজা পরিচালনায় ‘স্বাধীন কমিটি’ গঠনে তারা সম্মত।
গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে হামাসের কাছে থাকা বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়ার শর্ত রয়েছে। এর পর তৃতীয় ধাপে গাজা পুনর্গঠনের আলোচনা ও সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের সমাপ্তি টানার কথা। যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে হামাস। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধবিরতি আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র হামাসের সঙ্গে আরও সরাসরি আলোচনা চায়।
এদিকে গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছে ইউরোপের চার দেশ। গত শনিবার ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পরিকল্পনাটিকে ‘বাস্তবসম্মত’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন। এই পরিকল্পনায় পাঁচ বছরের মধ্যে গাজা পুনর্গঠনের কথা বলা আছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ বিলিয়ন ডলার।
আলজাজিরা জানায়, ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখলের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। সম্প্রতি সৌদিতে অনুষ্ঠিত ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভায় তিনি বলেন, যারা ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে গাজা দখল করতে চায়, তাদের জানা উচিত সংকটের মূলে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব। এ সময় কায়রোতে গৃহীত পরিকল্পনাকে তিনি সমর্থন জানান।
অন্যদিকে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় তিন ফিলিস্তিনি নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পূর্বে আবু হালাওয়েহ এলাকায় এ হামলা চালানো হয়। রাফায় ফিলিস্তিনি বাড়িঘরে গুলি হয়েছে। তারা ট্যাঙ্ক থেকে সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করেছে। গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে সাত লাশ উদ্ধার হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৪৫৩ নিহত ও ১ লাখ ১১ হাজার ৮৬০ জন আহত হয়েছে।
জ্বালানির অভাবে গাজার খান ইউনিসে ছয়টি বেকারি বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলোর ওপর হাজার হাজার পরিবার নির্ভরশীল। গাজা উপত্যকায় কোনো বিনামূল্যে খাবার থাকবে না বলে হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এ ছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী জেনিনের মসজিদগুলোতে আজান বন্ধ করে দিয়েছে।
গত সপ্তাহে গাজায় প্রথম দফা যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। ইসরায়েল প্রথম দফা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে ছিল। হামাস এতে সায় দেওয়ায় গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেয় ইসরায়েল। তাদের দাবি ছিল, সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। তেলআবিবের আশঙ্কা, হামাসের হাতে থাকা ৫৯ জিম্মির মধ্যে অর্ধেকও আর বেঁচে নেই। গতকাল তেলআবিবে জিম্মিদের স্বজনরা বিক্ষোভ করেছে। তারা হামাদের দাবি মেনে নিয়ে জিম্মিদের মুক্তির জন্য নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের পর লেবাননের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের জন্য ১১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার সরকারি খাতে ও অবকাঠামো খাতে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এ ছাড়া বেসরকারি খাতে ৬ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
স্কয়ার ফার্মার ১৫ লাখ শেয়ার কিনেছেন অঞ্জন চৌধুরী
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী বাজারমূল্যে কোম্পানির ১৫ লাখ শেয়ার কিনেছেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি এই শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। এরপর আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণায় জানানো হয়েছে, এই ১৫ লাখ শেয়ার কেনা সম্পন্ন হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই ঘোষণা দেওয়ার পর শেয়ারবাজারে স্কয়ার ফার্মার প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২১৫ টাকা। সেই হিসাবে ১৫ লাখ শেয়ারের বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁর এই শেয়ার কেনার কথা। ঠিক কত দামে এই শেয়ার তিনি কিনেছেন, তা জানা যায়নি।
স্কয়ার ফার্মা দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি। প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরী ও তাঁর কয়েকজন বন্ধু মিলে কোম্পানিটি গড়ে তোলেন। বর্তমানে কোম্পানিটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন স্যামসন এইচ চৌধুরীর চার ছেলে-মেয়ে।
সর্বশেষ গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ৬৬০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ১৩৫ কোটি টাকা বা ২৬ শতাংশ। গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে কোম্পানিটির আয় বা ব্যবসায় প্রায় ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় কোম্পানিটি ১ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। ২০২৩ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ২২৩ কোটি টাকার।
অতীতেও দেখা গেছে, যখনই বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমে যায়, তখনই বাজার থেকে কোম্পানিটির শেয়ার কেনার উদ্যোগ নেন পরিচালকেরা। এবারও একই উদ্দেশ্যে এক পরিচালক শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন বলে কোম্পানি সূত্রে জানা যায়।
আগের প্রান্তিকে ভালো মুনাফা করলেও স্কয়ার ফার্মার শেয়ারের দাম তেমন একটা বাড়ছে না। এমনকি আজ এই শেয়ার কেনার ঘোষণা আসার পরও শেয়ারের দাম বাড়েনি। গত এক মাসে এই কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম ছিল ২১৪ টাকা এবং সর্বোচ্চ দাম ছিল ২১৭ টাকা। এ অবস্থায় কোম্পানিটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার কিনলেন পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।