নারীর প্রতি বিদ্বেষ, ধর্ষণ, নির্যাতন বন্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। নানা স্থানে শিশু ধর্ষণসহ নারী নিপীড়ন বেড়ে যাওয়ার পটভূমিতে দল-মত নির্বিশেষে প্রতিবাদী কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। গতকাল রোববার সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্তে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন ও মিছিল করতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও সড়ক-মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন মানুষ। তাদের স্লোগানে অভিন্ন দাবি– ধর্ষক-নিপীড়ককে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ করে আসছে। তবে দু’দিন ধরে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ প্রশ্নে মানুষ যেভাবে মাঠে নেমেছেন, এমন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ গত সাত মাসে দেখা যায়নি। এমনকি নিকট অতীতেও এই ইস্যুতে সর্বস্তরের মানুষের মধ্য থেকে উঠে আসা এত বড় বিক্ষোভ কমই দেখা গেছে।
এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারকরা ধর্ষক ও নারী নির্যাতকের কঠোর শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন। গতকাল আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.

) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। দেশে ধর্ষকের স্থান হবে না। একই দিন আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলায় জামিন পাওয়ার অধিকার আমরা রাখব না। 

এ বিষয়ে মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল সমকালকে বলেন, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই নারী নির্যাতনের খবর আসছে। তাতে উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, নারী নির্যাতনের হার এবং নারীর মর্যাদা খাটো করে দেখার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। শুধু তাই নয়, এর ধরন ও মাত্রা ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে। 

নারী নির্যাতন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে উদাসীনতায় হতাশা প্রকাশ করে সুলতানা কামাল বলেন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী ‌নির্যাতনকে শাসন বা নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না; বরং এসব ঘটনাকে আগেও এমন ঘটেছে বলে প্রশ্রয়ই দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলার ফলাফলেও তেমন কোনো দৃষ্টান্ত আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি, যা থেকে আশাবাদী হওয়া যায় যে নারী শুধু নারী পরিচয়ে এ সমাজে সমঅধিকার ও সমমর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচার পথ খুঁজে পাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা মনে করেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো না থাকলে অন্য ঘটনার সঙ্গে নারীর ওপর অভিঘাত বেশি হয়। আদতে গণঅভ্যুত্থানের পর সমাজে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এর মানে এটা না, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের আমলের চেয়েও পরিস্থিতি অনেক খারাপ হয়ে গেছে। তবে কয়েকদিনের ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে নির্যাতকের পক্ষে সাফাই গাওয়ায় অনেক বেশি প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। নারীরা বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। 

নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফুঁসেছেন শিক্ষার্থীরা
অব্যাহত নারী নিপীড়নের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে রোববার দিনভর বিক্ষোভ ছাড়াও রাতে মশাল মিছিল করেন। ঢাবি ক্যাম্পাসে লাঠি মিছিলও হয়েছে। সেখান থেকে ধর্ষণের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি তোলা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের আলাদা বিবৃতিতে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

গতকাল সকালে ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। সেখানে বক্তব্য দেন অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক তাসনীম মাহবুব, অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক সেলিম রায়হান, শিক্ষক সামিনা লুৎফা, শিক্ষক ফাহমিদুল হক, কবি-লেখক ফেরদৌস আরা রুমি, সংস্কৃতিকর্মী সুস্মিতা রায় প্রমুখ। 
বিকেলে লাঠি মিছিল করেছেন ঢাবির শিক্ষার্থীরা। ধর্ষণের বিচারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে দশটিরও বেশি বিভাগ। ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু করেন। এ সময় তাদের হাতে বাঁশের লাঠি দেখা যায়। ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ মোড় ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে এসে মিছিলটি শেষ হয়। মিছিলে ‘জান, মালের নিরাপত্তা দে/ নইলে গদি ছেড়ে দে’, ‘খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন/ রুখে দাঁড়াও জনগণ’, ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের/ বিচার করো করতে হবে’, ‘ধর্ষকরা ধর্ষণ করে/ প্রশাসন কী করে?’, ‘বেগম রোকেয়া শিখিয়ে গেছে/ লড়াই করে বাঁচতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়।

পরে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ প্ল্যাটফর্মের ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন সীমা আক্তার। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে– জননিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায় স্বীকার করে পদত্যাগ; অব্যাহত ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; সব ঘটনার বিচার নিশ্চিত করা; প্রয়োজনে ধর্ষণের ঘটনার বিচারে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন; ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন প্রতিরোধ আইনের যৌক্তিক সংযোজন, বিয়োজন ও সংশোধন; যৌন হয়রানি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাবির নারী শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ প্ল্যাটফর্ম থেকে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল বের করেন। সব নারী হল থেকে শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘জাস্টিস ফর আছিয়া’, ‘চব্বিশের বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই’, ‘ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে’– স্লোগান দিয়ে এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
এ ছাড়া ঢাবির লোকপ্রশাসন, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান, ভাষাবিজ্ঞান, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, বাংলাসহ একাধিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আলাদা আলাদা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছেন। তারা মাগুরার শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি জানান।

ঢামেক শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে ধর্ষকের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তারা। ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন থেকে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডসহ ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়।

এর আগে শনিবার রাত ২টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ নামের প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে সেখানে দুটি দাবি তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী রাফিয়া রেহনুমা হৃদি। দাবি দুটি হচ্ছে– বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সব ধর্ষককে বিচারের আওতায় আনা ও মাগুরায় শিশু ধর্ষকদের ফাঁসি কার্যকর করা। দাবি দুটি বাস্তবায়ন হওয়া পর্যন্ত মঞ্চ থেকে নিয়মিত কর্মসূচি পালিত হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়া শনিবার রাতে ঢাবি ক্যাম্পাসে দেশজুড়ে সংঘটিত ধর্ষণ, নারীবিদ্বেষী মবের আগ্রাসন এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রা করে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। 
ধর্ষণ ও নারী নিপীড়কের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবিতে গতকাল বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার মোড় হয়ে ক্যাম্পাসে ফেরে।

ধর্ষণের প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ
মাগুরায় শিশু ধর্ষণসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গতকাল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। দুপুর পর্যন্ত অন্তত ২০টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন। দুপুর পৌনে ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। কর্মসূচি থেকে সোমবার একইভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বেলা সাড়ে ১১টায় মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’ এই কর্মসূচি আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে নারী নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। তবে বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে এমন বিচারহীনতা ও নিরাপত্তাহীনতা কখনোই কাম্য নয়।
এদিকে, মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকদের তিন দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরসহ তিন দাবিতে চোখে ও হাতে কালো কাপড় বেঁধে আমরণ অনশনে বসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতিন আলমাস অপূর্ব। শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে গতকাল বিকেলে তিনি অনশন শুরু করেন। রাত ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি অনশনে ছিলেন।

নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দিনভর বিক্ষোভ হয়েছে। ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানিয়ে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগরসহ দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করতে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ গঠন করা হয়েছে।
গতকাল সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ধর্ষণ ও হত্যার বিচার দাবি এবং ধর্ষণের শাস্তি ফাঁসি কার্যকরের জন্য সন্ধ্যায় মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন বিভিন্ন হলের ছাত্রীরা।

ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত ও জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে গতকাল কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন করেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে এ মানববন্ধন হয়। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ধর্ষণের প্রতিবাদ, ধর্ষকদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত এবং মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন।
কুমিল্লায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল নগরীর কেন্দ্রস্থল কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। একই দাবিতে চান্দিনায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। ছিনতাই ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে ফরিদপুরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল দুপুরে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে সাধারণ ছাত্রসমাজের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাগেরহাটের মোংলায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। গতকাল দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণে শহরের পৌর মার্কেটের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ঢাকা-যমুনা সেতু মহাসড়ক আটকিয়ে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী-জনতা। এ ছাড়া শেরপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। রংপুরে ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসি কার্যকর দাবিতে গতকাল রাতে মশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতা।

বিভিন্ন সংগঠনের বিবৃতি
দেশজুড়ে নারী-শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার, সহসভাপতি শাহীন আক্তার ডলি, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম প্রমুখ।
মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনা জাহেলি যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান। গতকাল এক বিবৃতিতে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ধর্ষকদের প্রকাশ্য শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা)

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ল স পর ক ষ প ল য টফর ম ব ক ষ ভ কর ভ কর ছ ন ভ স কর য পর স থ ত ম ছ ল কর ক র যকর সরক র র উপদ ষ ট গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি, প্রতিবাদে মানববন্ধন

গাজীপুরের শ্রীপুরে ‘ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে টাকার বিনিময়ে মিলছে সিরিয়াল’ এমন সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে জবাই করে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীপুর থানা ভবন এলাকায় ছাত্রদলের মিছিলে ওই সাংবাদিককে জবাই করার স্লোগানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। 

ওই সাংবাদিকের নাম মো. মোজাহিদ। তিনি দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় গাজীপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। 

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, মিছিলে নেতাকর্মীরা স্লোগানে বলছেন, ‘একটা একটা মোজাহিদ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর।’

মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করেন সাংবাদিক এম এম ফারুক, আব্দুল লতিফ মাস্টার, আবুল কালাম আজাদ, ফজলে মমিন আকন্দ, শাহান সাহাবুদ্দিন, ফয়সাল খান, মোতাহার খান, রাতুল মন্ডল, সফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।

এসময় আগমী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সারাদেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে রূপগঞ্জে ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন
  • ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ
  • কুবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • চাঁদাবাজিতে অসহায় খুলনার ব্যবসায়ীরা
  • মেডিকেল কলেজ বন্ধে ছাত্রদলের প্রতিবাদ
  • বাউল শিল্পীকে মারধরে জড়িতদের শাস্তি দাবি
  • নারীদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদে নারীরা
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির প্রতিবাদে মানববন্ধন, হামলায় আহত ৪
  • সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি, প্রতিবাদে মানববন্ধন