নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।

তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।

হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।        

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ন র য়ণগঞ জ ছ ত রদল র ব এনপ র কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ : আহত শতাধিক 

রূপগঞ্জে রবিনটেক্স গার্মেন্টস নামে একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় শ্রমিক ছাটাই, বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এ সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে কয়েকটি স্থানে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় শ্রমিকরা পুলিশের দুটি গাড়ি ভাংচুর করে।  

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপে করে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ শতাধিক লোক আহত হয়েছে।

আহতদের মধ্যে তাৎক্ষনিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট মুবীন, সৈনিক বাঁধন, সোহরাব, মেহেদী, শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদিকুর রহমান, শ্রমিকদের মাঝে শাফিয়া, রুনা, মলিনা, মাজেদা ও রুপুর নাম জানা গেছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আউখাবো এলাকায় ওই গার্মেন্টসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  এ ঘটনায় ১০ জন শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে টানা ৪ ঘন্টা ঢাকা সিলেট মহাসড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। 

শ্রমিকরা জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৯ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত পোষাক পোশাক কারখানাটি বন্ধ রাখা হয়। বন্ধ দেওয়ার আগে গত ২৮ মার্চ বিনা নোটিশে কোন প্রকার কারণ ছাড়াই ৬৫ জন শ্রমিককে ছাটাই করা হয়। এছাড়া পোশাক কারখানা বন্ধ দেওয়ার আগে শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশ বোনাস দেওয়ার কথা থাকলেও ৫০শতাংশ মালিকপক্ষ প্রদান করেন। 

এছাড়া এক মাসের বেতন প্রদানের কথা থাকলেও ২০ দিনের বেতন দিয়েই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার কারখানা খোলার দিন শ্রমিকরা মালিকপক্ষকে ছাটাইয়ের কারণ, বেতন ও বোনাস দেওয়ার কথা বললে মালিকপক্ষ নানা রকম টালবাহানা শুরু করেন। 

বুধবার সকালে আগের মতোই তাদের দাবি নিয়ে কারখানার ভিতরে অবস্থান করছিল। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে কাজে যোগ দেওয়ার কথা বললে তাদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়।

দুপুর ১২টার দিকে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে সেনাবাহিনী, পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর চড়াও হন। উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেন। 

পরে শ্রমিকরা কারখানার বাহিরে এসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিদ্যুৎের খুঁটি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এসময় মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। 

নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মো. মেহেদী ইসলাম বলেন, দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মবিন ও কয়েকজন সৈনিকসহ পুলিশের ১৫-২০ জন আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষের সময় আমার এবং রুপগঞ্জ থানার ওসির গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা ১০ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে চিকিৎসায় অবহেলা, রোগী মৃত্যুর অভিযোগ
  • রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ : আহত শতাধিক 
  • রূপগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহ
  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
  • গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য  সংগঠকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ
  • রূপগঞ্জে সড়ক দূর্ঘটনায় স্টেডফাস্ট কর্মী নিহত, আহত ১ 
  • ফতুল্লা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশ
  • ফতুল্লায় ডাইং কারখানায় মাটি চাপা পড়ে শ্রমিক নিহত, আহত ৩
  • রূপগঞ্জে ৩ ডাকাত গ্রেপ্তার, বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার