Samakal:
2025-03-10@01:22:57 GMT

কালভার্টে মরছে জলাশয়

Published: 9th, March 2025 GMT

কালভার্টে মরছে জলাশয়

দখল-দূষণসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণে ধ্বংস হচ্ছে জলাধার। সিলেট ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার ইউনিয়নে তেমনই একটি দৃশ্য নজরে পড়ে। এখানে কালাসারা হাওর থেকে প্রমত্তা রত্না নদীর শেষ চিহ্ন দাশপাড়া খাল হয়ে দয়ালং হাওরে জল প্রবাহিত হয়।
প্রায় দুই যুগ আগেও এই খাল দিয়ে সব ধরনের নৌকা চলাচল করতে দেখা গেলেও এখন পানি চলাচল করতে পারে না। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে খালের বিভিন্ন স্থানে বিরাট অংশ মাটি ভরাট করে সরু কালভার্ট নির্মাণের ফলে জলপ্রবাহের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এখনও এ ধরনের সরু কালভার্ট নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।
এমন অবস্থায় একদিকে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার কৃষি ব্যবস্থা, অন্যদিকে তৈরি হয়েছে বন্যার ঝুঁকি। এসব সরু কালভার্ট উচ্ছেদ করে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্ট নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 
জানা যায়, কালাসারা হাওর থেকে দাশপাড়া হয়ে দয়ালং হাওরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী খালের কালাসারা হাওর অংশে প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে খালটি ভরাট হয়ে গেলে জলপ্রবাহের পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এমন অবস্থায় ২০২৫ সালে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। কিছু 
ব্যক্তি নিজেদের প্রয়োজনে খনন করা খালের বিভিন্ন স্থান ভরাট করে খালের প্রশস্ততা কমিয়ে সরু কালভার্ট নির্মাণের ফলে জলপ্রবাহের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে।
সম্প্রতি ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের ফলে খালের দুই পাশের জায়গার কদর বেড়ে যাওয়ায় সরু কালভার্ট নির্মাণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গত প্রায় এক যুগে খালের ওপর অন্তত ৬টি এমন কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এখনও কালভার্ট নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।
সম্প্রতি একটি কালভার্ট নির্মাণের খবর পেয়ে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালটি পরিদর্শন করেছেন। এলাকাবাসীর দাবি, সরু কালভার্ট না করে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্ট নির্মাণ করলে জলপ্রবাহে কোনো প্রতিবন্ধকতা 
সৃষ্টি হতো না।
শুধু এ খাল নয়, উপজেলার সর্বত্র এমন অবস্থা বিরাজ করছে। দখল ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে খালবিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বর্ষায় জলাবদ্ধতা এবং গ্রীষ্মে পানির অভাবে প্রতিবছর অনেক জমি পতিত পড়ে থাকছে। খালগুলো দখলমুক্ত করে খননের মাধ্যমে সচল করা গেলে কৃষির উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
হস্তিদুর গ্রামের তুতিউর রহমান চৌধুরী তোতা মিয়া বলেন, এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েও লাভ হয়নি। খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে এখানে বন্যা দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে। কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে খালের প্রশস্ততা অনুযায়ী কালভার্টগুলো নির্মাণ করা প্রয়োজন ছিল। 
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (সেচ, উইং) সিলেটের বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী রুবায়েত ফয়সাল মো.

হাবিবুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, কিছুদিন পূর্বে সম্প্রতি এ উপজেলায় যোগদান করেছেন তিনি। খালের একটি কালভার্ট নির্মাণের খবর পেয়ে পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর প রব হ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শান্তি প্রক্রিয়া কার্যকরে প্রস্তুত ইসরায়েল-হামাস 

গাজায় দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। তারা কাতারের দোহায় আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে হামাস দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ইসরায়েলকে চাপ দিয়ে আসছিল। অবশেষে যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ঘটবে বলে আশা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটির। তবে হামলা অব্যাহত থাকায় ফিলিস্তিনিরা আবারও যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে।

রয়টার্স জানায়, হামাসের একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কাতারের কর্মকর্তারাও এই আলোচনায় যুক্ত রয়েছেন। হামাসের মুখপাত্র আবদেল লতিফ আল-কানুয়া এক বিবৃতিতে বলেন, গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে ত্রাণ সরবরাহ জোরদার করা হোক। একটি সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন হওয়ার আগ পর্যন্ত গাজা পরিচালনায় ‘স্বাধীন কমিটি’ গঠনে তারা সম্মত। 

গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে হামাসের কাছে থাকা বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের ছেড়ে দেওয়ার শর্ত রয়েছে। এর পর তৃতীয় ধাপে গাজা পুনর্গঠনের আলোচনা ও সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের সমাপ্তি টানার কথা। যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে হামাস। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধবিরতি আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র হামাসের সঙ্গে আরও সরাসরি আলোচনা চায়। 

এদিকে গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছে ইউরোপের চার দেশ। গত শনিবার ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা পরিকল্পনাটিকে ‘বাস্তবসম্মত’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন। এই পরিকল্পনায় পাঁচ বছরের মধ্যে গাজা পুনর্গঠনের কথা বলা আছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ বিলিয়ন ডলার।

আলজাজিরা জানায়, ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখলের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান। সম্প্রতি সৌদিতে অনুষ্ঠিত ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সভায় তিনি বলেন, যারা ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে গাজা দখল করতে চায়, তাদের জানা উচিত সংকটের মূলে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব। এ সময় কায়রোতে গৃহীত পরিকল্পনাকে তিনি সমর্থন জানান। 

অন্যদিকে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় তিন ফিলিস্তিনি নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পূর্বে আবু হালাওয়েহ এলাকায় এ হামলা চালানো হয়। রাফায় ফিলিস্তিনি বাড়িঘরে গুলি হয়েছে। তারা ট্যাঙ্ক থেকে সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করেছে। গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে সাত লাশ উদ্ধার হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৪৫৩ নিহত ও ১ লাখ ১১ হাজার ৮৬০ জন আহত হয়েছে।   

জ্বালানির অভাবে গাজার খান ইউনিসে ছয়টি বেকারি বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলোর ওপর হাজার হাজার পরিবার নির্ভরশীল। গাজা উপত্যকায় কোনো বিনামূল্যে খাবার থাকবে না বলে হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এ ছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী জেনিনের মসজিদগুলোতে আজান বন্ধ করে দিয়েছে।  

গত সপ্তাহে গাজায় প্রথম দফা যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। ইসরায়েল প্রথম দফা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে ছিল। হামাস এতে সায় দেওয়ায় গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেয় ইসরায়েল। তাদের দাবি ছিল, সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। তেলআবিবের আশঙ্কা, হামাসের হাতে থাকা ৫৯ জিম্মির মধ্যে অর্ধেকও আর বেঁচে নেই। গতকাল তেলআবিবে জিম্মিদের স্বজনরা বিক্ষোভ করেছে। তারা হামাদের দাবি মেনে নিয়ে জিম্মিদের মুক্তির জন্য নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের পর লেবাননের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের জন্য ১১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার সরকারি খাতে ও  অবকাঠামো খাতে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এ ছাড়া বেসরকারি খাতে ৬ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ