বরিশালের উজিরপুরে যুবদলের দুই নেতাকে চাঁদা না দেওয়ায় বিএনপির ব্যানার টানিয়ে মুক্তিযোদ্ধার দোকান দখলের অভিযোগ উঠেছে।  
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা যুবদলের দুই যুগ্ম আহ্বায়ক জালিস মাহমুদ মৃধা ও রুহুল কুদ্দুস হাওলাদারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলী সুজার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মাসুম। 
অভিযুক্ত জালিস ও রুহুলের দাবি, উজিরপুর পৌর ও শিকারপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কিছু ব্যক্তি গিয়ে ওই ব্যানার টানিয়েছে। এ বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। 
দোকান মালিক মাসুম জানান, ১৯৫০ সাল থেকে শিকারপুর বন্দরের চান্দিনা ভিটার ৪ শতাংশ জমি বার্ষিক ইজারায় দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা শুরু করেন তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান। ২০১৫ সালে বাবার মৃত্যুর পর তারা তিন ভাই দোকান চালাচ্ছিলেন। ২০১৮ সালে তাদের দোকান দখলে নিয়ে শিকারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কার্যালয় করা হয়। ৫ আগস্টের পর তিনি দোকান বুঝে নেন। যুবদল নেতা জালিস ও রুহুল তাঁর কাছে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।  এর পর জালিস দোকানঘরটি মৌখিক চুক্তিতে কিছুদিনের জন্য ভাড়া নেন। কিছুদিন পর তাঁকে মালপত্র সরিয়ে নিতে অনুরোধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে দোকান তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর ছবি সংবলিত শিকারপুর ইউনিয়ন বিএনপির স্থায়ী কার্যালয় লিখে একটি ব্যানার সাঁটিয়ে দেন। ব্যানার নামাতে বললে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সংবলিত আরেকটি ব্যানার সাঁটিয়ে দেন। 
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হুমায়ুন খান বলেন, দোকানটি সাংবাদিক মাসুমের। এটা আওয়ামী লীগ দখল করেছিল। এখন বিএনপির কিছু নেতা সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দিয়েছে শুনেছি। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এস সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টু দেশের বাইরে। তিনি ফেরার পর মাসুমকে দোকান বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

আলী সুজা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দুই বছরেও শেষ হয়নি ৩৭ মিটার সেতুর কাজ

ধর্মপাশা উপজেলা সদরের মধ্যবাজারে অবস্থিত মাত্র ৩৭ মিটার দৈর্ঘ্যের শয়তানখালী সেতুর পুনর্নির্মাণ কাজ দুই বছরেরও শেষ হয়নি। নির্মাণকাজে অবহেলা ও ধীরগতির কারণে ঠিকাদারের ওপর অসন্তুষ্ট থাকলেও এখন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময়ে সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রায় ১৫-২০টি গ্রামের মানুষকে। 

জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে অর্ধশত বছরের পুরোনো শয়তানখালী সেতুটি দেবে যেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তখন সেতুটির ওপর দিয়ে পথচারী ও যান চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। দেবে যাওয়া পুরোনো সেতুর পরিবর্তে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ২০২৩ সালে এলজিইডির হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শয়তানখালী সেতু নির্মাণসহ ধর্মপাশা থানার সামনে থেকে বাহুটিয়াকান্দা পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ মিটার সড়ক ও একটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ৯ কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার ৪৮০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ কাজ বাস্তবায়নে সুনামগঞ্জের মাহবুব এন্টারপ্রাইজকে ঠিকাদার নিযুক্ত করে ওই বছরের ২৬ মার্চ কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি। একই বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সেতু ও সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। কাজে ধীরগতির অভিযোগ এনে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা বাজারের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু এতেও কোনো হেলদোল নেই ঠিকাদারের। ঠিকাদার আগের মতোই ধীরগতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।  

ধর্মপাশা বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, শয়তানখালী সেতুটি দ্রুত নির্মাণ না হওয়ায় মধ্যবাজারের ব্যবসায়ীরা ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ব্যবসায় মন্দা দেখা দেওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

আরেক ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ বলেন, শয়তানখালী সেতুটির কারণে দীর্ঘ চার বছর ধরে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করা হলে মধ্যবাজারে ব্যবসায় গতি ফিরে আসবে।  

অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবুল মহসিন মো. মাহবুবের ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। প্রকল্প সাইটে ঠিকাদারের নিযুক্ত ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটি রাজধানীর হাতিরঝিলের সেতুর আদলে তৈরি হচ্ছে। শুরুর দিকে মিস্ত্রি পাওয়া যাচ্ছিল না এবং গত বর্ষায় কাজ করতে না পারায় কাজ পিছিয়েছে। মাস দুয়েকের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন বলেন, অত্যন্ত ধীরগতিতে সেতুটির নির্মাণকাজ চলতে থাকায় প্রকল্প পরিচালক কার্যাদেশ বাতিল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নতুন ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ার কারণে কাজটি আরও পিছিয়ে যেতে পারে– এমন ভাবনা থেকে তা করা হয়নি। তাই ঠিকাদারকে সতর্ক করে দিয়ে আগামী ২৫ জুনের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে কার্যাদেশ বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ