বরিশালের বাকেরগঞ্জের নিয়ামতি বাজারে খাসজমি দখল করে ভবন নির্মাণ করেছেন বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভবন নির্মাণ শুরু হয়। পাঁচটি দোকানঘরের কাজ প্রায় শেষ। পাশাপাশি পেছনে বসতঘর নির্মাণকাজ চলছে সমানতালে।
জানা গেছে, উপজেলার নিয়ামতি বাজারের একটি অংশ তোহা (কাঁচাবাজার) জমি নামে পরিচিত। খাসজমির মধ্যে তোহা অংশ বন্দোবস্ত বা হাতবদল করার বিধান নেই। বাকেরগঞ্জ ভূমি অফিসের কানুনগো আফজাল হোসেন, সার্ভেয়ার ফোরকান ও রিয়াজের যোগসাজশে ওই জমি দখল করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
স্থানীয়রা জানান, মোস্তাফিজের ছেলে সাব্বির আগে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও আওয়ামী লীগের পতনের পর যুবদলে যোগ দেন। পিতা-পুত্রের ক্ষমতার জোরে সরকারি তোহা জমিতে তারা স্থাপনা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রুস্তম আলী হাওলাদার ইউনিয়ন ভূমি অফিসে লিখিত অভিযোগে জানান, মোস্তাফিজুর দুই বছর আগে খাস জমিতে ঘর তোলা শুরু করেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করে ২০২২ সালের ৭ মার্চ প্রতিবেদন দাখিল করেন। একই বছরের ২৬ মার্চ তৎকালীন সহকারী কমিশনার ভূমি আবুজার মো.
ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সরকারি জমিতে নির্মাণকাজ করতে মোস্তাফিজকে নোটিশ দিয়েছিলেন। ভবন নির্মাণ হয়ে থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানার পর মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে। সরকারি তোহা বাজারের জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ হলে তা উচ্ছেদ করা হবে। এতে ভূমি অফিসের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানের দাবি, তিনি ডিসিআর (বন্দোবস্ত) করা জমিতে ঘর তুলছেন। এ জমি তোহা বাজারের কিনা তার জানা নেই।
বাকেরগঞ্জ ভূমি অফিসের কানুনগো আফজাল হোসেন বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান নামের একজন নিয়ামতি বন্দরে সরকারি জমিতে ঘর তুলেছেন শুনেছি। এর সঙ্গে আমি জড়িত নই। উপজেলা নির্বাহী অফিস থেকে তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে অবৈধভাবে নির্মাণ করা ঘর ভেঙে ফেলা হবে।
নিয়ামতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সালাম মৃধা বলেন, মোস্তাফিজুর রহমানের পরিবার বিএনপির সমর্থক। তারা দলের কোনো পদপদবিতে নেই। এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির সম্পৃক্ততা নেই। তবে বিষয়টি জেনে মোস্তাফিজুর রহমানকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। ভূমি অফিসের অনুমতি নিয়ে ঘর তুলেছেন এমনটা জানিয়েছেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: খ সজম ম স ত ফ জ র রহম ন কর মকর ত ন র পর ন য় মত অফ স র ঘর ত ল ব এনপ সরক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
জবির লংমার্চে পুলিশের বাধা, স্মারকলিপি দেবে প্রতিনিধিদল
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে আয়োজিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে তাঁতীবাজার মোড় থেকে তারা লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে ক্যাম্পাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দূতাবাসের উদ্দেশ্যে এ পদযাত্রা শুরু করেন তারা।
তবে আজ থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার কথা উল্লেখ করে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে অনুরোধ করে। পুলিশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বিক্ষোভকারীরা তাঁতীবাজার মোড় থেকে রায়সাহেব বাজার দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।
এ সময় ‘ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ইসরাইলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ইসরাইলি আগ্রাসন, বন্ধ করো করতে হবে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা। এ ছাড়াও তাদের হাতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মার্কিন দূতাবাস ও সৌদি আরবের দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান করবে প্রতিনিধিদল। স্মারকলিপিগুলো বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় লেখা হয়েছে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের জবি শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আমরা মুসলিম জাতি, খালিদ বিন ওয়ালিদের উত্তরসূরি। কিন্তু আমরা তা ভুলে গেছি। আজ আমরা শুধু ফতোয়াবাজিতে ব্যস্ত। এরই সুযোগে ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলিম ভাই-বোনদের হত্যা করছে। আমি মুসলিম যুবকদের জাগরণের আহ্বান জানাচ্ছি।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “যদি গাজার ফিলিস্তিনদের উপর বর্বরতা বন্ধ না হয়, তাহলে জাতিসংঘের অফিসে পরের সপ্তাহে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। আমরা শিক্ষক সমিতি গাজায় গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
এর আগে গত সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’র প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংহতি সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।
তিন দফার মধ্যে রয়েছে—গাজায় বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানানো, মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশে লংমার্চ ও স্মারকলিপি দেওয়া এবং দেশে ইসরায়েলি পণ্য নিষিদ্ধ করা।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী