Samakal:
2025-04-10@01:23:27 GMT

ট্রাম্পের ইউক্রেন দর্শন

Published: 9th, March 2025 GMT

ট্রাম্পের ইউক্রেন দর্শন

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন এমন সময় ইউক্রেনের ব্যাপারে চুক্তি করার সন্নিকটে, যখন লন্ডনের ল্যাঙ্কাশায়ার হাউসে ১৮ জন ইউরোপীয় নেতা সম্মিলিত সভায় বার্তা দেন, জেলেনস্কি ভালো অবস্থায় রয়েছেন। ঘটনার বিন্দুগুলো সংযুক্ত করে পেন্টাগন ও ক্যাপিটল হিলে সাবেক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা স্টিফেন ব্রায়ান সাবস্ট্যাকে লিখেছেন, ‘ট্রাম্প ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে তাদের বক্তৃতা তুলে ধরার জন্য ওয়াশিংটনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, যা সুস্পষ্ট। ফরাসিরা মোটামুটি অসন্তুষ্ট হয়ে চলে গেল, কিন্তু স্টারমার সাধারণভাবে সম্মত বলে মনে হয়েছিল। 

ট্রাম্প তাঁর শীর্ষ উপদেষ্টাদের সঙ্গে যে কৌশল নেবেন, তা পরবর্তী পরিস্থিতির ইঙ্গিতবহ। ট্রাম্প ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ অথবা আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারেন– এমন এক জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এটা খুবই অসম্ভাব্য, ট্রাম্প ইইউর মেজাজে ক্ষুব্ধ হবেন বা যুক্তরাজ্যের প্রদর্শনীমূলক পদক্ষেপ দ্বারা প্রভাবিত হবেন। জার্মানি আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য সরকারবিহীন থাকবে; এটি ইউরোপীয়দের পাটাতন দুর্বল করে।

নিউইয়র্ক টাইমস প্রকাশ করেছে, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ মার্কিন সাইবার কমান্ডকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন, যা ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে সব অভিযানের বড় আকারে পুনর্মূল্যায়নের অংশ হিসেবে।’ একইভাবে প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পুতিন রাশিয়ার সংস্থাগুলোকে আটকানোর জন্য অনুরূপ নির্দেশনা দিয়েছেন।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন পৃথকভাবে মার্কিন নীতিতে পরিবর্তনের দ্য টাইমসের অনুসন্ধানকে সমর্থন দিয়েছে। এতে বলা হয়, মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্কের উষ্ণতা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ‘রাশিয়াকে আর সাইবার নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে মনে করছে না।’

এতে দাবি করা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপার সিক্রেট সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সির (সিসা) বিশ্লেষকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গার্ডিয়ানকে বলেছেন, তাদের ‘মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল, তারা যেন রাশিয়ান হুমকিগুলো অনুসরণ না করে কিংবা রিপোর্ট না করে, যদিও এটি আগে এজেন্সির প্রধান ফোকাস ছিল।’ স্পষ্টতই, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের ‘বিশেষ সম্পর্ক’তে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যভাবে বলতে গেলে, ট্রাম্প প্রশাসন সিসাকে দুর্বৃত্ত অভিযান থেকে আলাদা করার পদক্ষেপ নিচ্ছে।

স্নায়ুযুদ্ধকালে গুপ্তচর সংস্থাগুলোর বেআইনিভাবে অভিযান চালানোর ইতিহাস রয়েছে। সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি দেখা গেছে ১৯৬০ সালের ১ মে। ফ্রান্সিস গ্যারি পাওয়ারস চালিত একটি মার্কিন গুপ্তচর বিমান ৮০ হাজার ফুট উচ্চতায় উড্ডয়নরত অবস্থায় সোভিয়েত বিমান ঘাঁটিতে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল। এই ঘটনা কূটনৈতিক সংকটের সৃষ্টি করেছিল। এতে প্যারিসে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডুয়েইট আইজেন হাওয়ার ও সোভিয়েত নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভের শীর্ষ এক সম্মেলন বাতিল হয়। হঠাৎ দুই নেতার মৃত্যুতে দুই দেশের সম্পর্কের জটিলতা নিরসনের পথ বন্ধ হয়ে যায়।  
আজ একটি সাদৃশ্যপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ওয়াশিংটন ও মস্কো উভয়েই এ বিষয়ে সচেতন। ক্রেমলিন ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপের চারপাশে এমন গোপনীয়তার আবরণের প্রয়োজনীয়তা নিজেই তার প্রমাণ। গোটা পাশ্চাত্যে এমন অনেক বিরোধিতাকারী রয়েছে, যারা যে কোনো মূল্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না, বরং তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
এ রকম উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে সামরিক-প্রতিরক্ষা শিল্পের জটিল বা প্রতিশোধমূলক মানসিকতার সঙ্গে অত্যধিক যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে যতই ভিন্নমতের কণ্ঠস্বর থাকুক, রাশিয়ার পক্ষে ক্রেমলিনের রিট শেষ পর্যন্ত প্রাধান্য পায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় এটি এমন নয়, যেখানে পুরোনো শাসনের অবশিষ্টাংশ এখনও সংবেদনশীল অবস্থানে রয়েছে; যেমনটা গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। সুতরাং, চূড়ান্ত বিশ্লেষণে এটি চমৎকারভাবে পরিণত হতে পারে, যেমনটা স্টিফেন ব্রায়ান বলেছেন। তাঁর মতে, ট্রাম্প ‘ইউক্রেনকে ভেঙে পড়তে দেবেন, তবে জেলেনস্কির মেয়াদ শেষ হলে ইউক্রেনের ব্যাপারে পুতিনের সঙ্গে একটি চুক্তি চাইতে পারেন।’

এম কে ভদ্রকুমার: ভারতের সাবেক কূটনীতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক; ইন্ডিয়ান পাঞ্চলাইন থেকে সংক্ষেপিত ভাষান্তর ইফতেখারুল ইসলাম
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম পরীক্ষার্থী এবার

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হচ্ছে। প্রথম দিন বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা। ১১ শিক্ষা বোর্ডের অধীন ৩০ হাজার ৪৫টি স্কুল ও মাদ্রাসার ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসবে। এ বছর দেশের ৩ হাজার ৭১৫ কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। চলবে ১৩ মে পর্যন্ত।

সাধারণ ৯ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৩১ জন। এর মধ্যে ৭ লাখ ১ হাজার ৯৫৩ জন ছাত্র এবং ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৯৭৮ ছাত্রী। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী এ বছর ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৩ জন ছাত্র এবং ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৩৩ ছাত্রী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮৫ এবং ৩৪ হাজার ৯২৮ জন ছাত্রী।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে প্রায় ১ লাখ। সংখ্যায় তা ৯৫ হাজার ২২২ জন। শুধু তাই নয়, বিগত পাঁচ বছরে এবারই সবচেয়ে কম শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। জানা গেছে, ২০২৪ সালে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। ২০২৩ সালে ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন, ২০২২ সালে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ১৩৭ এবং ২০২১ সালে ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম-বেশি হওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কোনো বছরই রেজিস্ট্রেশন করা সব শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসে না। এটাকে ঝরে পড়াও বলা যায় না। সাধারণত কমপক্ষে তিন বছরের মধ্যে শিক্ষাজীবনে ফিরে না এলে তাকে ঝরে পড়া বলে। দারিদ্র্যের কারণে অনেকে এক বছর পরীক্ষা দিতে না পারলে পরের বছর অংশ নেয়।

রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মাদ ফেরদাউস সমকালকে বলেন, নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করা সব শিক্ষার্থীই বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেবে, এমনটা কখনও হয় না। দুই বছরে দারিদ্র্য, বাল্যবিয়ে, অসুস্থতা অথবা টেস্ট পরীক্ষায় ভালো করতে না পারা অনেক পরীক্ষার্থীই শেষ পর্যন্ত বোর্ড পরীক্ষায় বসে না। তারা অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে পরে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাজেদা বেগম বলেন, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম বা বেশি বছরভেদে হতেই পারে, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের কেউ কেউ মনে করেন, এখনও শিক্ষার্থী ঝরে পড়া বন্ধ হয়নি। উপবৃত্তি চালু করায় একসময় শিক্ষার্থী বেড়ে ছিল। উপবৃত্তির পরিমাণটা এখন এমন যে, তা দিয়ে আর অভিভাবক-শিক্ষার্থীকে স্কুলমুখী করা যাচ্ছে না। আর করোনার পর থেকে অনেক শিক্ষার্থী সাধারণ ধারার পড়াশোনা ছেড়েছে। একই সঙ্গে ইবতেদায়ি তথা আলিয়া ধারার মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী কম ভর্তি হচ্ছে। অনেকে হাফেজি পড়ছে, কওমি ঘরানার মাদ্রাসায় ভর্তি হচ্ছে। ফলে সাধারণ ধারার পড়ালেখায় শিক্ষার্থী কমছে।

এবার প্রশ্ন ফাঁসমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গ্রীষ্মকাল হওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ২০০ গজের মধ্যে শুধু পরীক্ষার তিন ঘণ্টা ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। তবে কেন্দ্রভেদে এ দূরত্ব কমবেশি হতে পারে।’

কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে প্রবেশ নিষিদ্ধ

ঢাকা মহানগরী এলাকায় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ