চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন ভারত
Published: 9th, March 2025 GMT
আগ্রাসী ব্যাটিং করে শুরুতেই যেন টেনশন কমিয়ে দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। তবুও ফাইনাল বলে কথা। কখনো কখনো মনে হয়েছে ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের পুনরাবৃত্তিও হতে পারে। শেষে এসে টানটান উত্তেজনা। কিন্তু না তেমন কিছু ঘটেনি।
সেট ব্যাটারদের আউটে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও আসলে ভারতীয় ব্যাটিং গভীরতার কাছে হার মানতে হয় কিউইদের। পুরো ম্যাচ জুড়ে দাপুটে খেলে ৪ উইকেটের জয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।
আরো পড়ুন:
যে কাজের পর নাঈম শেখের ব্যাটে ছুটছে রানের ফোয়ারা
বৃথা গেল আল-আমিনের সেঞ্চুরি, আবাহনীর জয়
এক বছরের ব্যবধানে দুটি বৈশ্বিক ট্রফি শোকেসে তোলে ভারত। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এর আগের বছর ঘরের মাঠে ২০২৩ বিশ্বকাপ জিতলে ষোলোকলা পূর্ণ হতো রোহিত-কোহলিদের।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৫১ রান করে নিউ জিল্যান্ড। তাড়া করতে নেমে ৬ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।
লোকেশ রাহুল ৩৩ বলে ৩৪ ও রবীন্দ্র জাদেজা ৬ বলে ৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। জয় থেকে যখন ১১ রান দূরে তখন সাজঘরে ফেরেন হার্দিক পান্ডিয়া (১৮)।
ভারতের কাজটা সহজ করে অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শুরু থেকে আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে এলোমেলো করে দেন নিউ জিল্যান্ড বোলিংকে। আরেক প্রান্তে শুভমান গিল দারুণ সঙ্গ দেন। ৫০ বলে ৩১ রানে বাজপাখি ফিলিপসের দারুণ ক্যাচে গিল ফেরেন সাজঘরে। এরপর কোহলি এসেই ১ রানে ফেরেন ব্রেসওয়েলের ঘূর্ণিতে। এলবিডব্লিউর শিকার হন, রিভিউ নিলেও কাজ হয়নি।
কোহলি ফেরার পর রোহিতও থামেন। তার ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭৬ রান। ৮৩ বলে ৭টি চার ও ২টি ছয়ের মারে এই রান করেন ভারত অধিনায়ক। এরপর দলকে এগিয়ে নিয়ে যান আয়ার-অক্ষর। দুজনে ৭৫ বলে ৬১ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দেন। আইয়ার ৬২ বলে ৪৮ রান করে ফিরলে ভাঙ্গে জুটি। অক্ষর ৪০ বলে ২৯ রান করেন। এরপর জয়ের রাহুল দলকে বন্দরে পৌঁছে দেন। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট করে নেন স্যান্টনার-ব্রেসওয়েল।
এর আগে দারুণ শুরুর পর হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে নিউ জিল্যান্ড ব্যাটিংয়ে। বোলিংয়ে এসেই প্রথম ওভারে বরুণ চক্রবর্তী ফেরান উইল ইয়ংকে (১৫)। ভাঙে ৫৭ রানের ওপেনিং জুটি। একই ওভারে রাচিন রবিন্দ্রর ক্যাচ মিস হয়।
রবীন্দ্রর উইকেট পাননি বরুণ। তাকে থামাতে দেরি করেননি কুলদীপ যাদব। অসাধারণ ডেলিভারিতে বোল্ড করে কিউই রানের গতি কমিয়ে দেন। রাচিন ফেরেন ৩৭ রানে। নতুন ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকেও বেশিদূর এগোতে দেননি যাদব। ১৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে কার্যত ছন্দ হারিয়ে ফেলে নিউ জিল্যান্ড।
এরপর এক প্রান্তে আগলে রেখে খেলতে থাকেন ড্যারিল মিচেল। টম ল্যাথামকে সঙ্গে নিয়ে ৬৬ বলের জুটিতে ৩৩ রান যোগ করেন। ল্যাথাম ৩০ বলে ১৪ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। ল্যাথম ফিরলে মিচেলের সঙ্গী হন ফিলিপস। এই জুটিতে প্রতিরোধ গড়লেও রানের গতি ছিল ধীর। ৮৭ বলে আসে ৫৭ রান। ফিলিপস ৫২ বলে ৩৪ রান করে আউট হলে ভাঙে জুটি।
মিচেল ক্রিজে থাকলেও শেষ দিকে সুবিধা আদায় করতে পারেননি। ৯২ বলে ফিফটি করেন এই অলরাউন্ডার। তার ব্যাট থেকে ১০১ বলে সর্বোচ্চ ৬৩ রান আসে। শেষে দারুণ খেলেন ব্রেসওয়েল। মাত্র ৪০ বলে ৫৩ রান করে দলীয় সংগ্রহ আড়াইশ পার করেন।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন বরুণ-কুলদীপ। ৭৬ রানের ইনিংস খেলে ফাইনালে ম্যাচসেরা হন রোহিত। আর টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচ খেলে ২৬৩ রান ও ৩ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হন নিউ জিল্যান্ডের অলরাউন্ডার রাচিন।
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ মিনারে এপোলো জামালীর মরদেহে শ্রদ্ধা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গণসংগীত শিল্পী বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এপোলো জামালীর (আবদুল্লাহ আল মাহামুদ জামালী) প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ রাখা হয়।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা এপোলো জামালীর মরদেহে সর্বপ্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, শ্রেণি-পেশার সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তার প্রতি সম্মান জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, গণফোরাম, বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ বাসদ-মাহবুব, স্বাধীনতা পার্টি, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদসহ রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
এছাড়া গণসংস্কৃতি ফ্রন্ট, সংহতি সংস্কৃতি সংসদ, উদীচী, বিবর্তন, ভাসানী পরিষদ, বিপ্লবী কৃষক সংহতি, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি, বিপ্লবী যুব সংহতি, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি, আখচাষি ইউনিয়ন, বিপ্লবী পাদুকা শ্রমিক সংহতি, বিপ্লবী রিকশা শ্রমিক সংহতি, এসএসপিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সংগঠনও শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর, শিল্পাঞ্চল কমিটি, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নাটোর, বরিশাল, দোহারসহ বিভিন্ন জেলা/উপজেলার পক্ষ থেকে এপোলো জামালীর মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এপোলো জামালীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এপোলো জামালীর অকাল প্রয়াণে দেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হলো। বহুমাত্রিক সাম্যবাদী চেতনার এই শিল্পী গণমানুষের অধিকার আর মুক্তির ব্রত নিয়েই নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছেন। গণবিপ্লবের মাঝেই এপোলো জামালী বেঁচে থাকবেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রয়াত গুণী শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে এই মহান গণসংগীত শিল্পীর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক।
সম্মিলিত কণ্ঠে আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। রায়ের বাজারে এই শিল্পীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রায়ের বাজার কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। দাফনের পর তার কবরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে আবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।