রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চুরি ও ছিনতাইকারী সন্দেহে রোববার আটজনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ বলছে, ছিনতাইকারী সন্দেহে যাত্রাবাড়ী এলাকায় চারজনকে, চকবাজারে দু’জনকে, মতিঝিল ও ভাটারায় দু’জনকে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে।

যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী রমজানুল হক জানান, দুপুর ১২টার দিকে কোনাপাড়ায় ছিনতাইয়ের চেষ্টার সময় তিন সহোদর রফিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও রিপন মিয়াকে ধোলাই দিয়ে স্থানীয়রা পুলিশে সোপর্দ করে। প্রায় একই সময় যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় ছিনতাইকারী সন্দেহে সোহাগ মিয়া নামে আরও একজনকে গণধোলাই দেওয়া হয়। চারজনকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

চকবাজার থানার এসআই জহুরুল ইসলাম জানান, বকশীবাজার এলাকায় কাগজের কার্টন চুরির অভিযোগে অপু ও আলী নামে দু’জনকে গণধোলাই দেওয়া হয়। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে বিকালে চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মতিঝিল থানার এএসআই সাদ্দাম জানান, এজিবি কলোনি এলাকায় এক নারীর ব্যাগ নিয়ে পালানোর সময় গণধোলাইয়ের শিকার হয় তন্ময় নামে এক কিশোর।

ভাটারা থানার এসআই কামরুজ্জামান বলেন, সোলমাইদ এলাকার একটি বাড়ির চারতলা থেকে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও ল্যাপটপ চুরি করে পালাতে গিয়ে সকালে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে মানিক মিয়া নামে এক যুবক। পরে তাকে গণধোলাই দেওয়া হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণপ ট ন গণধ ল ই এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম যন্ত্রে শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে সেই শিশুর

তিন দিনেও জ্ঞান ফেরেনি লাইফ সাপোর্টে থাকা মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটির। তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে তাকে সেখানে নেওয়া হয়। 

এদিকে ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে গতকাল মাগুরা সদর থানায় মামলা করেছেন। এতে আসামি করা হয়েছে চারজনকে। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলো– শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব শেখ, সজিবের ভাই রাতুল শেখ, বাবা হিটু শেখ ও মা জাবেদা বেগম। এজাহারে বলা হয়েছে, আট বছরের শিশুটিকে ধর্ষণ করে তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ।

বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত বুধবার রাতে মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয় সে। বৃহস্পতিবার সকালে অচেতন অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন হিটুর স্ত্রী জাবেদা বেগম। পরে তিনি পালিয়ে যান। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীর স্বজন হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে আনা হয় ঢামেক হাসপাতালে। 

গতকাল দুপুরে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভেন্টিলেটর যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে। পাশবিক নির্যাতনের কারণে শিশুটির যৌনাঙ্গে ক্ষত রয়েছে। চেপে ধরার কারণে তার গলার আঘাত গুরুতর। শিশুটির চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ওই বোর্ডে চারটি বিভাগের চিকিৎসকরা রয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, দুপুরে ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে হাসপাতালে দেখতে আসেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। উপদেষ্টার নির্দেশ ও শিশুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে শিশুটিকে বিকেলে সিএমএইচে নেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্বজন জানান, খাওয়া-দাওয়া না করায় শিশুটির মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গতকাল বিকেল তাঁকে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় নেওয়া হয়েছে।

মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, এজাহারভুক্ত চারজনকে আগেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। রোববার তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

এজাহারে যা বলা হয়েছে
শিশুটির মা ঢাকা থেকে স্বামী ও বড় মেয়েকে দিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার পাঠান।  মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ওই দিন রাতে বড় মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি হিটুর স্ত্রী ও আরেক ছেলেও জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারা শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা করে।

এজাহারে আরও বলা হয়, চার মাস আগে বড় মেয়ের সঙ্গে সজিবের বিয়ে হয়। এর পর থেকে বড় মেয়েকে তার শ্বশুর অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ওই পরিবারের সবাই জানলেও প্রতিবাদ কেউ করেনি। 

সর্বোচ্চ শাস্তির আশ্বাস উপদেষ্টার
গতকাল দুপুরে ঢামেক হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। এ সময় তিনি বলেন, যে শিশুটি এখনও মেয়ে হয়ে ওঠেনি, নারী হয়ে ওঠেনি, তার গায়ে হাত দেয় কী করে? দেশটা কী কাপুরুষের দেশ হয়ে গেল? যারা আট বছরের মেয়ের গায়ে হাত দিল! এর পরও কাপুরুষগুলো পুরুষ হয়ে চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। উপদেষ্টা আরও বলেন, দোষীরা যেন কোনোভাবেই ছাড় না পায়। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৮ জনকে গণপিটুনি
  • এক মাদক কারবারির জন্য পুলিশের কত রকম কাণ্ড
  • সেহরিতে রান্নার চুলা জ্বালাতেই বিস্ফোরণ, স্বামী-স্ত্রীসহ দগ্ধ ৬
  • চাঁদপুরে সেহরিতে রান্নার চুলা জ্বালাতেই বিস্ফোরণ, স্বামী-স্ত্রীসহ দগ্ধ ৬
  • সেহরির রান্নার জন্য চুলা জ্বালাতেই বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬
  • কৃত্রিম যন্ত্রে শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে সেই শিশুর
  • রাজধানীতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় গ্রেপ্তার ১
  • ঢাকার আদাবরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে আটক ১
  • ৬ মাসে পুলিশের ওপর ২২৫ হামলা, ‘মব’ নিয়ে উদ্বেগ