বিশেষ পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট চালু রাখতে আসছে নীতিমালা
Published: 9th, March 2025 GMT
বিশেষ পরিস্থিতিতে দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা ঠেকাতে একটি নীতিমালা তৈরিতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ফয়েজ জানান, স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি। বাংলাদেশে গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন স্থাপনে স্টারলিংকের সঙ্গে কয়েকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। তিনি বলেন, স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছে। এ সফরের অংশ হিসেবে স্টারলিংকের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভূমি বরাদ্দ, নির্মাণ সহায়তা ও অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণে চুক্তি হয়েছে। স্টারলিংক টিম ইতোমধ্যে কিছু জায়গাও চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সম্পত্তি এবং কিছুক্ষেত্রে হাইটেক পার্কের জমি ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনাধীন।
তিনি আরও বলেন, স্টারলিংক শহর, প্রান্তিক অঞ্চল, উপকূলীয় এলাকাসহ লোডশেডিং বা প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করবে। ফয়েজ বলেন, দেশের মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারগুলোর (আইএসপি) সেবার মান আরও ভালো না হলে প্রিমিয়াম গ্রাহকরা স্টারলিংকে শিফট করবে। এজন্য দেশীয় কোম্পানিগুলোর সেবার মান বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম বিশেষজ্ঞ মোস্তফা হুসাইন। তিনি বলেন, ভয়েস কল ও ইন্টারনেটের দাম কমানো, ডেটার মেয়াদ বিলুপ্ত করা এবং সরকার যেন অযৌক্তিক কারণে ইন্টারনেট বন্ধ করতে না পারে– এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সভায় আরও ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইশরাক হোসেন, স্যাটেলাইট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মী নিহত
নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।
তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।
হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।