সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু, লাশ আনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার
Published: 9th, March 2025 GMT
সংসারের অভাব ঘুচাতে ধারকর্য করে এক নির্মাণ শ্রমিক তাঁর ছেলেকে পাঠিয়েছিলেন সৌদি আরবে। দেড় বছরের মাথায় সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। সচ্ছলতা দূরের কথা, ঋণ পরিশোধ করার আগেই গত ৩ মার্চ দাম্মাম শহরের একটি এলাকায় গ্যাস সঞ্চালন লাইনের কাজ করতে গিয়ে এক দুর্ঘটনায় মারা যান কাউছার। ৬ দিন আগে মৃত্যুর খবর পেলেও এখনও স্বজন জানেন না কবে দেশে ফিরবে তাঁর লাশ। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশালের জয়দা গ্রামে।
জানা গেছে, মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী জয়দা গ্রামের বাসিন্দা নির্মাণ শ্রমিক মোতাহার আলী। ৮ ছেলেমেয়ের মধ্যে বড় ছেলে কাউছারও নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। সংসারে একটু সচ্ছলতার মুখ দেখতে বছর দেড়েক আগে ছেলে কাউছারকে সৌদি আরবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বাবা মোতাহার। নুন আনতে যার পান্তা ফুরায়, তাঁকে জোগাড় করতে হয় ৬ লাখ টাকা। ঋণ নিয়ে ছেলেকে পাঠান সৌদি আরবে। দাম্মাম শহরের সাক্কো নামে একটি কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করতেন কাউছার। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস গত ৩ মার্চ স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে দাম্মাম শহরের আল হাসা জাফরা এলাকার গ্যাস সঞ্চালন লাইনের কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান কাউছার।
তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হন প্রতিবেশী এক প্রবাসীর কাছ থেকে। কিন্তু ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও ছেলের লাশ বাংলাদেশি কোন সংস্থার মাধ্যমে দেশে ফিরবে, কবে ফিরবে– এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না স্বজন। পরিবারের দাবি, সরকার যেন তাদের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি দ্রুত লাশ দেশে আনতে পদক্ষেপ নেয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, কাউছারের স্ত্রী জেসমিন তাঁর ১৫ মাসের মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। মেঝেতে বসে আছেন বাকরুদ্ধ বাবা। ছেলের খোঁজখবর জানতে চাইতেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন মোতাহার। তিনি বলেন, ‘আমার সব স্বপ্ন শেষ। এত কষ্ট, ঋণ-কর্য যার জন্য করলাম, তাকেই আল্লাহ নিয়ে গেল। আমি এখন কী করব? একদিকে ঋণের চাপ, অন্যদিকে ছেলের বউ, নাতনি ও আমার পরিবারের খরচ কীভাবে চালাব সেই চিন্তা।’
কাউছারের স্ত্রী জেসমিন বলেন, ‘তিন বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে। ওরে বলছিলাম, ঋণ কইরা বিদেশ যাওয়ার দরকার নাই। কোনো আপদ-বিপদ হইলে মানুষ টেহা ছাড় দিত না। ওর বিদেশ যাওয়ার আট দিন পর জন্ম হইছে মেয়েটার। এখন মেয়ের ভবিষ্যৎ দেখব কে?’
এ বিষয়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ ওয়েল ফেয়ার সেন্টার ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল হাসান তাহেরি জানান, পরিবার আবেদন করলে তা পাঠিয়ে দেবেন ওয়েজ অর্নার কল্যাণ বোর্ডে। এর পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা নেবেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রব স মরদ হ র ক জ করত পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরের আশঙ্কা নেই
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। তবে, লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরের আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাইজিংবিডিকে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “আমরা লঘুচাপটি পর্যবেক্ষণ করছি। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরের আশঙ্কা আপাতত নেই।”
এর আগে বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তর লঘুচাপটির বিষয়ে একটি সতর্কবার্তা জারি করে। সতর্কবার্তায় বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে আজ (৮ এপ্রিল) দুপুর নাগাদ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিল। এটি আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু’-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু’-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকা/হাসান/রফিক