মুকসুদপুরে হাটবাজারের ভূমি বন্দোবস্ত পেতে এসি ল্যান্ডের ‘সেলামি’ চাওয়ার অভিযোগ
Published: 9th, March 2025 GMT
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ও জলিরপাড় ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন উপজেলার জলিরপাড় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বরাবর তাঁরা লিখিত অভিযোগ দেন।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীরা উপজেলার জলিরপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি হাটবাজারের একেকজনের জমি বন্দোবস্তের জন্য ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাসের মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা আড়াই লাখ টাকা ‘সেলামি’ চেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। তবে অভিযুক্ত গোলাম মোস্তফা ও রিমন বিশ্বাস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জলিরপাড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ২৫ বছর ধরে পাউবোর জমিতে দোকানঘর তুলে ব্যবসা করেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জেলা প্রশাসক পাউবোর ওই জমি পুনঃ গ্রহণ (রিজুম) করেন। ২০১৭ সালে পেরিফেরিভুক্ত হয়ে নকশা বের হয়। ২০২৪ সালে ইজারার মাধ্যমে ২৯ জন ব্যবসায়ীকে ওই ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। এর আগে ২০২০ সালে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হলে সরকারি নির্দেশে সড়কের পাশের পেরিফেরিভুক্ত জমি থেকে দোকানপাট নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নেন ব্যবসায়ীরা। সড়ক প্রশস্ত করার কাজ শেষ হয়েছে। ওই জমি সড়ক বিভাগের কাজে না লাগায় আগের ব্যবসায়ীরা ডিসিআরের নবায়নে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে আবেদন করেন। এ ছাড়া নতুন করে একাধিক ব্যক্তি ওই ভূমি বন্দোবস্ত নিতে আবেদন করেন।
অভিযোগ ওঠে, ১ মার্চ সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মাদ গোলাম মোস্তফা ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা রিমন বিশ্বাসের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের জলিরপাড় ভূমি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে একটি সভা করেন। সভায় তিনি হাটবাজারের ভূমি বন্দোবস্ত নিতে তাঁকে আড়াই লাখ টাকা ‘সেলামি’ দিতে হবে বলে নির্ধারণ করে দেন। যেখানে সরকার নির্ধারিত ফি বছরে মাত্র ১৬০ টাকা। এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হলে তাঁরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
জলিরপাড় বাজারের শহীদুল, তৌহিদ শেখ, লিপি বেগমসহ কয়েকজন বলেন, তাঁরা গরিব মানুষ। ডিসিআর নিয়ে ওই জমিতে ঘর তুলে ব্যবসা করে খাচ্ছিলেন। এর মধ্যে সড়কের কাজ শুরু হলে ঘর ভেঙে ফেলতে বাধ্য হন। এখন ডিসিআর নবায়ন করতে গেলে এসি ল্যান্ড তা করে দেননি। উল্টো তহশিলদারের (উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা) মাধ্যমে ভূমি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে আড়াই লাখ টাকা লাগবে বলে জানান। তাঁরা এত টাকা কোথায় পাবেন। এ ব্যাপারে তাঁরা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ভুক্তভোগী চুন্নু চোকদার বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। রাস্তার পাশে সরকারি জমি বন্দোবস্ত নিয়ে একটি ছাপরা তুলেছি। এখন নতুন করে বন্দোবস্ত নিতে হবে। এ জন্য এসি ল্যান্ড অফিসে আড়াই লাখ টাকা দিতে হবে। তা না হলে আমার ছাপরা ভেঙে দেবেন বলে হুমকি দিচ্ছে তহশিলদার রিমন বিশ্বাস। আমি এত টাকা কোথায় পাব?’
তবে রিমন বিশ্বাস সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কারও কাছে টাকা চাইনি। আর ডিসিআর দেওয়ার আমি কেউ না। আমরা শুধু এখান থেকে সরেজমিন প্রতিবেদন দিয়ে থাকি। তাঁরা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’
মুকসুদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জমি বন্দোবস্তের জন্য আড়াই লাখ টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ডিসিআরের চুক্তি এক বছরের। পরবর্তী সময়ে আমি তাঁদের না-ও দিতে পারি। কোথাও লেখা নেই যে পুনরায় তাঁদের সঙ্গে আমার চুক্তি করতে হবে। আমি তাঁদের সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য নই। অনেকের দোকানের অস্তিত্ব নেই। যে কারণে যাচাই-বাছাই নতুন করে বন্দোবস্ত দেওয়া হবে। ওখানে বালু ভরাট করা হচ্ছে। একটা বড় ধরনের খরচের বিষয়ও রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে লিখিত কিছু অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র মন ব শ ব স কর মকর ত ব যবস য় ড স আর উপজ ল সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
পানি উন্নয়ন বোর্ডে ২৭৭ পদে বড় নিয়োগ, আবেদন করেছেন কি
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ৬ পদে ২৭৭ কর্মী নিয়োগ দেবে। নবম থেকে ১৬তম গ্রেডের এসব পদে আবেদন চলছে। এসব পদে নারীদের আবেদন করার জন্য উৎসাহিত করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পদের নাম ও বর্ণনা
১. পদের নাম: সহকারী প্রকৌশলী (পুর)পদসংখ্যা: ৫০
গ্রেড: নবম
বেতন স্কেল: ২২,০০০-৫৩,০৬০ টাকা।
২. পদের নাম: সহকারী পরিচালক (প্রশাসন)পদসংখ্যা: ৬
গ্রেড: নবম
বেতন স্কেল: ২২,০০০-৫৩,০৬০ টাকা।
আরও পড়ুনচার বিসিএসের জট কাটিয়ে এক বছরে পরীক্ষা শেষ করার চিন্তা পিএসসির১৭ ঘণ্টা আগে৩. পদের নাম: উপসহকারী প্রকৌশলী/শাখা কর্মকর্তা (পুর)/প্রাক্কলনিকপদসংখ্যা: ১০২
গ্রেড-দশম
বেতন স্কেল: ১৬,০০০-৩৮,৬৪০ টাকা।
৪. পদের নাম: উপসহকারী প্রকৌশলী/শাখা কর্মকর্তা (যান্ত্রিক/বিদ্যুৎ)পদসংখ্যা: ২২
গ্রেড: ১০
বেতন স্কেল: ১৬,০০০-৩৮,৬৪০ টাকা।
৫. পদের নাম: হিসাবরক্ষকপদসংখ্যা: ১৯
গ্রেড-১২
বেতন স্কেল: ১১,৩০০-২৭,৩০০ টাকা।
এআই জেনারেটেড ছবি