২০ দিনেও উদ্ধার হয়নি অপহরণের শিকার শিক্ষার্থী
Published: 9th, March 2025 GMT
মির্জাপুরে অপহরণের ২০ দিন পার হলেও স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। আসামিদের অনেকেই গ্রামে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু পুলিশ তাদের ধরছে না বলে অভিযোগ বাদীপক্ষের। রোববার দুপুরে মির্জাপুর প্রেস ক্লাবে এসে এসব অভিযোগ করেন অপহরণের শিকার শিক্ষার্থীর মা ও দাদা।
গোড়াই ইউনিয়নের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী (১৪) প্রতিদিনের মতো গত ১৭ ফ্রেরুয়ারি বিদ্যালয়ে যায়। বিকেলে বাড়িতে না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকেন স্বজন। এর মধ্যে একই গ্রামের খোকন (২৩) ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে নিজের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন। খোকন ওই ছাত্রীকে অপহরণ করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন শিক্ষার্থীর দাদা।
অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি খোকনের লোকজন ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে বাদীপক্ষের ওপর হামলা চালায়। খোকনের ভাই রিপন, প্রকাশ, গোপাল ও শম্ভুসহ পাঁচ-সাতজন মিলে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়।
অপহরণের শিকার শিক্ষার্থীকে উদ্ধার এবং বিচারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীর মা ও দাদা। রোববার মির্জাপুর প্রেস ক্লাবে এসে হতাশা প্রকাশ করে কান্নাকাটি করতে থাকেন তারা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ নূরুন্নবী বলেন, এ ঘটনায় গোপাল নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়েছে। প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেপ্তার এবং অপহরণের শিকার শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অপহরণ অপহরণ র শ ক র শ ক ষ র থ
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী পরিচয়ে বাসায় ঢুকে দুজনকে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, আটক ৪
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি পরিচয়ে চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা ও তাঁর গাড়িচালককে বাসা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা হলেন নাজমুল আবেদীন, নইমুল আমিন, আরাফাত হোসেন ও রিসতি বিন ইউসুফ। তাঁদের সবার বয়স ২২ থেকে ২৩-এর মধ্যে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে পুলিশ।
ঘটনার শিকার আবেদীন আল মামুন চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) তৈরি পোশাক কারখানা প্যাসিফিক জিনসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক। তাঁর গাড়িচালকের নাম মো. জুয়েল।
নগর পুলিশের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রাতে নগরের আকবর শাহ থানার প্রভাতী স্কুলের বিপরীতে অবস্থিত বাসা থেকে আবেদীন আল মামুন ও তাঁর ব্যক্তিগত গাড়িচালক মো. জুয়েলকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবেদীন আল মামুনের স্ত্রী ফাতেমা আক্তারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ নগদে আদায় করা হয়, বাকি ১৫ লাখ টাকার চেক লিখে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়লে নগর পুলিশ পুরো শহরে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে ফয়’স লেক চক্ষু হাসপাতালের সামনে আবেদীন আল মামুন ও তাঁর গাড়িচালককে রেখে চলে যান অপহরণকারীরা। এর আগে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, পাহাড়তলী কর্নেল হাট ও আকবর শাহ এলাকায় অপহৃতদের ঘোরানো হয়।
আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে আজ দুপুরে বলেন, বাসায় ঢুকে আবেদীন আল মামুনকে তাঁর গাড়িচালকসহ অপহরণ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ অপহৃত দুজনকে চক্ষু হাসপাতালের সামনের রাস্তা থেকে উদ্ধার করেছে। পরে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়। তাঁরা কেউ শিক্ষার্থী, আর কেউ পড়ালেখা শেষ করেছেন। আটক ব্যক্তিরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি দাবি করেছেন।
ওসি আরও বলেন, চারজনকে আটকের পর তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া পাঁচ লাখ টাকা নইমুল আমিনের বাসা থেকে উদ্ধার হয়েছে। তাঁর বাসা নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকায়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটক চারজনের সঙ্গে জড়িত অপি, আলাউদ্দিন, আরাফাত, আসিফসহ আরও কয়েকজনকে আটকে অভিযান চলছে।
জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে কারা জড়িত, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এখন নির্বাহী কমিটি রয়েছে। সমন্বয়ক কোনো পদ আর নেই। অপরাধীরা যে পরিচয়েই অপরাধ করুক না কেন, দেশের আইনে তাঁর বিচার হতে হবে।
আরিফ মঈনুদ্দিন আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে তিনটি কমিটিতে সাত শর মতো সদস্য রয়েছে। আমার জানামতে আটক ব্যক্তিরা কমিটির কোনো পদে নেই। এরপরও বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’