ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ
Published: 9th, March 2025 GMT
মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণের অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও সর্বস্তরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৯ মার্চ) মানববন্ধন, লাঠি মিছিল, মশাল মিছিল, মহাসড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। রাইজিংবিডির প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)
রবিবার (৯ মার্চ) সকাল থেকেই ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে এবং নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ, মৌন মিছিল, লাঠি মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এসব কর্মসূচিতে যোগ দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
আরো পড়ুন:
ইফতার উৎসবে রাবি শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা
ধর্ষণের প্রতিবাদে ঢাবি ও রাবিতে নারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
এছাড়া দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।একইসঙ্গে কিছুদিন আগে দিবাগত রাতে মাগুরা সদরে বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ৮ বছরের এক মেয়ে শিশুকে ধর্ষণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা।
সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের বিচার দাবিতে রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টায় ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী হল থেকে প্যারিস রোডে জড়ো হতে শুরু করেন। সেখান থেকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা।
এদিকে, ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। রবিবার (৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জোহা চত্বরের সামনে তিনি অনশন শুরু করেন।
অনশনরত শিক্ষার্থীর নাম ফাতিন আলমাস অপূর্ব। তিনি দর্শন বিভাগের ২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
তার দাবিগুলো হলো- ধর্ষণ প্রতিকারে ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে হবে এবং আগামী তিনদিনের মধ্যে ওই শিশু আছিয়াকে নির্মমভাবে ধর্ষণকারীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে; যেহেতু এটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাই এ সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার অধীন জরুরীভিত্তিতে পৃথক বন্দোবস্ত (ট্রাইব্যুনাল/ধর্ষণ নিনিবোধ কমিশন) করা হোক; যেকোন ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে সেই বন্দোবস্ত থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে প্রমাণিত হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন এবং প্রথম দফা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)
রবিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরোপয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ছাত্রীহলগুলো প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে এসে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘এক দুইটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘ ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “বর্তমানে দেশে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলছে। এমনকি ৮ বছরের ছোট শিশুও ধর্ষণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রকাশ্যে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানাই। যদি সরকার ধর্ষকদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমর ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে জুলাইয়ের মতো আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
দেশব্যাপী চলমান ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মৌন মিছিল করেছেন জাবি শিক্ষার্থীরা। এ সময় মুখে লাল কাপড় বেঁধে প্রতীকী প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে মৌন মিছিলটি শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরিবহণ চত্বরে এসে সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন। সেখানে বক্তারা ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জাবি শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এবং জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।
এর আগে, একই দাবিতে শহীদ মিনারের পাদদেশে সকাল সাড়ে ১১টায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক ও চারুকলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া দুপুর দেড়টার দিকে একই দাবিতে পৃথক মানববন্ধন করেন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)
ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করেছেন জবি শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে তাঁতিবাজার মোড়ে গিয়ে রাস্তা অবরোধ করে দেন তারা। ২০ মিনিট রাস্তা আটকে রাখার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তা ছেড়ে আবারো বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ফেরেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আমার বোনের কান্না আর না, আর না’, ‘জাস্টিস, জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘ধর্ষকের শাস্তি, মৃত্যু মৃত্যু’, ‘আমি কে তুমি কে, আছিয়া আছিয়া’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারী সংগীত বিভাগের স্বর্ণা রায় বলেন, “আমরা ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চাই। আমরা রাস্তায় নিরাপদে বের হতে পারি না। আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ চাই। ধর্ষকদের ১০ দিনের মধ্যে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
জুলাই-২৪ এর গনঅভ্যুত্থানে আহত সম্মুখ যোদ্ধাদের সংগঠন ‘ওয়ারিয়র্স অব জুলাই’ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- মুখপাত্র মাসুদ রানা বলেন, “ধর্ষকদের পরিচয় উন্মোচন এবং গ্রেপ্তারের পরেও বিচারকার্য ১৮০ দিনের সম্পাদন করা মানে ধর্ষকদের পক্ষ নেওয়ার শামিল। আগামী তিন দিনের অব্যশই প্রকাশ্যে ধর্ষকদের শাস্তি দিতে হবে।”
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
রবিবার (৯ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণের অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করেন ইবি শিক্ষার্থীরা। এ সময় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি না দিলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এর আগে, বেলা ১২টার দিকে আন্দোনলকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটক সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘জাস্টিস ফর আছিয়া, আছিয়া আছিয়া’, ’তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এছাড়া তাদের হাতে ‘মাগুরায় ধর্ষণকাণ্ডের অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই’, ‘ধর্ষণের বিচার মৃত্যুদন্ড দেওয়া হোক’, ‘আমি মেয়ে আমি অবহেলিত না’, ‘আশ্বাস নয় আইনের বাস্তবায়ন চাই’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)
সারাদেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন দুপুর দেড়টায় কুবি শিক্ষার্থীরা। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফ শেখ ও আরাফ ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সংহতি প্রকাশ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা, সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)
সকাল সোয়া ১১টায় একই দাবিতে রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ফরিদা টাওয়ার ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে মহাসড়ক অবরোধ করেন। কিছুক্ষণ অবরোধ করে সেখান থেকে স্বাধীনতা চত্বরে এসে ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
বিক্ষোভে মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিসহ নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
সমাজকর্ম বিভাগের খাদিজা খাতুন বলেন, “দেশের বিভিন্ন জায়গায় নারীরা ধর্ষণের শিকার হয়। কিন্তু এসব ধর্ষকেরা বেশিরভাগই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। সম্প্রতি অনেকগুলো ধর্ষণের ঘটনায় শুধু একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিচারিক কার্যক্রমেও অনেক সময়ক্ষেপণ দেখা যাচ্ছে। আমরা চাই, ধর্ষকদের দ্রুত সময়ে বিচার করতে হবে এবং প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। ধর্ষকদের ঠিকানা আমরা এই বাংলায় চাই না। ধর্ষকদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকবো এবং আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)
ধর্ষণসহ নারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিকেল ৪ টায় বেরোবি মিডিয়া চত্ত্বরে জেন্ডার অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়েছে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড’, ‘নারী নির্যাতন বন্ধ কর’, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর নয়’, ‘ধর্ষক পুরুষ জাতির কলঙ্ক’, ‘সত্যিকারের পুরুষ ধর্ষণ করে না’, ‘ধর্ষককে কেউ বিয়ে করো না’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ সময় বেরোবি প্রক্টর ড. মো. ফেরদৌস রহমান বলেন, “বর্তমানে যা চলছে, তাতে নিজেকে পুরুষ হিসাবে পরিচয় দিতে লজ্জা লাগছে। এ সময়ের ধর্ষণের মতো ঘটনা মনে হয় আইয়ামে জাহিলিয়াতের যুগকেও হার মানাবে। এ ধর্ষকদের জনসম্মুখে শাস্তি দিতে হবে। কোন ধর্ষণকারীর জায়গা এই বাংলার মাটিতে হবে না।”
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি মিডিয়া চত্ত্বর থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে এক নং ফটকের সামনে এসে শেষ হয়।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)
ধর্ষকদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান এবং দেশে আইন শৃঙ্খলা বজায়ে ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পদত্যাগের ফের দাবিতে মিছিল করেছেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। দুপুর ৩টা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে মেয়েদের প্রথম ছাত্রী হল প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে এসে সমাবেশ করেন তারা।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুলতানা আক্তার লুবনা বলেন, “ধর্ষকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কি পদক্ষেপ নিচ্ছে, আমরা তা জানতে চাই। আমাদের বিচার ব্যবস্থা এতটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া ও এত ভিকটিম প্লেমি, যেখানে ভিকটিমকে আইনের কাঠ গড়ায় আবার ধর্ষিত হতে হয় আসামি ও আইনের সামনে। রাষ্ট্রকে শুধু ধর্ষণের শিকার হওয়া ব্যক্তির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিলেই হবে না, পাশাপাশি তার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার দায়িত্বও নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “রাষ্ট্রে বর্তমানে যে অরাজকতা চলছে, এজন্য অথর্ব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীরকে পদত্যাগকে করতে হবে।”
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)
একই দাবিতে সিকৃবিতে বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে সিকৃবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা মাহমুদুর রহমান বলেন, “আমরা এমন দেশের জন্য রক্ত দেইনি, যে দেশে আমাদের বোন ধর্ষিতা হয়, আমাদের মায়েরা মেয়ের জন্য চিন্তা করে- বাইরে গেলে মেয়ের সম্মান থাকবে কি না! স্বৈরাচার সরকারের আমলে আমরা কোন ধর্ষকের বিচার হতে দেখিনি। আমরা চাই এই চব্বিশের বাংলায় ধর্ষককে প্রকাশ্যে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হোক। তাহলে এই নিকৃষ্ট কাজ করতে বাকি হায়নাদের অন্তর কাঁপবে।”
গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি)
শিশু আছিয়ার ধর্ষণকারীদের ফাঁসি কার্যকর, দেশব্যাপী ধর্ষণ প্রতিরোধ, ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত এবং নারীসহ সব নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গবি শিক্ষার্থীরা। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে বাদামতলা, প্রধান ফটক ও ঘোড়াপীর মাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’, ‘এক দুই তিন চার, জাহাঙ্গীর তুই গদি ছাড়’সহ নানা প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
সরকারি তিতুমীর কলেজ
সরকারি তিতুমীর কলেজে সম্প্রতি সময়ে সারাদেশে ঘটে যাওয়া ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণসহ সব ধরনের অরাজকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মিছিল করেছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিন করে টিবি গেইট হয়ে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কে বলতে চাই, এ দেশে মব সৃষ্টি ও আইন নিজের হাতে তুলে নিতে চাই না। অনতিবিলম্বে যারা ধর্ষক তাদের খুঁজে বের করুন এবং আইনের আওতায় নিয়ে এসে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে আমাদের বোনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
কারমাইকেল কলেজ, রংপুর
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৩টায় কলেজ ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বিক্ষোভে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। তারা ধর্ষণের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন এবং স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে হলে ধর্ষকদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে রংপুর থেকে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ছ ল কর ছ ন ন শ চ ত কর একই দ ব ত র ব যবস থ ত বর থ ক ৮ বছর র ক অবর ধ ক র যকর ব প রব র স মন ব র কর আম দ র রব ব র শ কর ন এ সময় সরক র ন সড়ক আইন র
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিককে প্রকাশ্যে জবাই করে হত্যার হুমকি
গাজীপুরের শ্রীপুরে অনিয়ম ও চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মোজাহিদকে প্রকাশ্যে জবাই করে হত্যার হুমকির দেওয়া হয়েছে।
এর প্রতিবাদে শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে শ্রীপুর থানা মোড় এলাকায় স্থানীয় সাংবাদিকরা মানববন্ধন করেন।
এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, এম এম ফারুক, শাহান শাহাবুদ্দিন, ফয়সাল খান, আব্দুল লতিফ মাস্টার, শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, ফজলে মমিন, রাতুল মণ্ডল, মোতাহার খান (জিটিভি), মাহমুদুল হাসান, মাহফুজুর রহমান ইকবাল, আশরাফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান মানিক, এস এম জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় শ্রীপুর পৌর শহরে কলেজ ছাত্রদলনেতা গোলজার মণ্ডল, মেহেদী হাসান সাহাদ, মারুফ প্রধান ও তোফায়েলসহ ৪০-৫০ জনের একটি দল বিক্ষোভ মিছিল করে।
মিছিলে তারা সাংবাদিক মোজাহিদকে টার্গেট করে উস্কানিমূলক ও ভয়ঙ্কর স্লোগান দেয়। যার মধ্যে ছিল, ‘একটা একটা মোজাহিদ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর।’ এই মিছিলের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিক মহলসহ সচেতন নাগরিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
একই দিন বাদ জুমা শ্রীপুর পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে সাধারণ ছাত্রজনতা। তারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হত্যার হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
ঢাকা/রফিক/এস