সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ধুমধাম করে হয়ে গেল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। এই অন্তর্বিভাগ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগ। ১৩ ফেব্রুয়ারি ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে তারা হারিয়ে দেয় পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগকে। ২১ দলের মধ্যে সেরা হওয়ায় বিভাগের সবাই ভীষণ আনন্দিত। জয় উদ্‌যাপন করতে তাই এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্কেটবল মাঠে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। মাঠের দুই পাশে স্থাপন করা হয়েছিল ‘পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগ চ্যাম্পিয়ন’ লেখা স্মারক। রঙিন বাতি, বেলুন আর আতশবাজিতে ঝলমল করছিল পুরো মাঠ। বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এক হয়ে নারী ক্রিকেট দলের সদস্যদের লালগালিচা সংবর্ধনা দেন। দলের সদস্যরা হলেন আফসারা তাসনিম, মুহয়ী জাহান, সাথী আক্তার, ইসরাত জাহান, আতিকা আক্তার, আফরোজা খানম, মিতু খানম, সেজুতি রহমান, মারিয়া সুলতানা, উম্মে হানি, হাবিবা আক্তার, সানজিদা পাঠান, মুনিরা মাহমুদ ও সাদিয়া আফরিন।

আরও পড়ুনবিদেশে পড়তে চাই, কিন্তু কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রোগ্রাম আমার জন্য০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ভিন্নধর্মী উদ্‌যাপন

পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের নারী ক্রিকেটাররাই তো এই দিনের বড় তারকা! তাই সবাই তাঁদের সঙ্গে ছবি তুলছিলেন। সন্ধ্যা সাতটার আগে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে পরিবেশ আরও আনন্দমুখর হয়ে ওঠে। রাত সাড়ে সাতটায় শুরু হয় আলোচনা সভা, যেখানে নারী ক্রিকেটারদের লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয় এবং প্রত্যেক খেলোয়াড়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রেস্ট।

নারী ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মুনিরা মাহমুদ বলেন, ‘অন্তর্বিভাগ নারী ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমাদের পরিশ্রম, একতা ও আত্মবিশ্বাসের ফসল। বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা, সিনিয়র ও জুনিয়ররা পাশে ছিলেন বলেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।’

অ্যালামনাইদের পক্ষ থেকেও গত ৭ মার্চ দেওয়া হয়েছে সংবর্ধনা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মী নিহত

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।

তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।

হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।        

সম্পর্কিত নিবন্ধ